ডায়াবেটিস লক্ষণ | ডায়াবেটিস কত হলে মানুষ মারা যায়

ডায়াবেটিস কত হলে মানুষ মারা যায়

ডায়াবেটিস লক্ষণ
১) বিষন্নতা 
২) খিদে বেড়ে যাওয়া
৩) অবসাদ বা ক্লান্তি বোধ
৪) অস্বাভাবিকভাবে ওজন হ্রাস

৫) ত্বকে কালচে ভাব

৬) ত্বকে চুলকানি ভাব

৭) অস্পষ্ট দৃষ্টিশক্তি

৮) ক্ষতস্থান নিরাময় হতে সময় লাগা

৯) ঘনঘন প্রস্রাব হওয়া ও পিপাসা লাগা

১০) দুর্বল লাগা

১১) ঘোর ঘোর ভাব আসা

১২) ক্ষুধা বেড়ে যাওয়া

১৩) সময়মতো খাওয়া-দাওয়া না হলে রক্তের শর্করা কমে হাইপো হওয়া

১৪) মিষ্টি জাতীয় জিনিসের প্রতি আকর্ষণ বেড়ে যাওয়া

১৫) কোন কারণ ছাড়াই অনেক ওজন কমে যাওয়া

১৬) শরীরে ক্ষত বা কাটাছেঁড়া হলেও। দীর্ঘদিনেও সেটা না সারা

১৭) চামড়ায় শুষ্ক, খসখসে ও চুলকানি ভাব

১৮) বিরক্তি ও মেজাজ খিটখিটে হয়ে ওঠা

১৯) চোখে কম দেখতে শুরু করা

আরও পড়ুনঃ কালমেঘ পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা

কি খেলে ডায়াবেটিস হবে না

ডায়াবেটিস একবার হয়ে গেলে তা হয়ে যায় সারা জীবনের সঙ্গী। শিশু থেকে বৃদ্ধ, যে–কেউ এ রোগে আক্রান্ত হতে পারে। এই রোগ সারানোর ওষুধ এখনও আবিষ্কৃত হয়নি। তবে কিছু নিয়মকানুন মেনে চললেই একে নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। এজন্য খাবারদাবারে রাশ টানা অন্যতম উপায়।

১. খেতে হবে তাজা সব্জি ও ফল। তাই বলে ফলের জুস খেতে যাবেন না যেন! তার চেয়ে বরং ফল চিবিয়ে খান। চিবিয়ে খেলে ফলে থাকা কার্বোহাইড্রেট রক্তের সঙ্গে মেশে সহজে। এ ছাড়া চিবিয়ে খেলে দাঁত ও মুখের পেশিও কাজ করার সুযোগ পায়। এমন প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে ফলের যে রস শরীর পায়, সেটি সহজে পরিপাক হয়।

২. কম চর্বিযুক্ত দই খাওয়া যেতে পারে। বিশেষ করে টকদই। শিশুদের জন্য দই খুবই উপকারী। এই দুগ্ধজাত বস্তুতে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম থাকে। হাড় ও দাঁতের জন্য ক্যালসিয়াম খুবই উপকারী।

৩. বেশি ভাজাপোড়া বা বেশি চর্বিযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলতে হবে। লবণ বুঝে খেতে হবে। যত কম খাওয়া যায়, ততই মঙ্গল।

৪. চিনিযুক্ত পানীয় থেকে দূরে থাকতে হবে। জুস ও স্মুদিতে প্রচুর চিনি ও ক্যালরি থাকে। তাই কতটুকু খাচ্ছেন, তার হিসাব রাখতে হবে। মাত্রাতিরিক্ত হলেই বিপদ।

৫. একটি বা দুটি সেদ্ধ ডিম খাওয়া যেতেই পারে। একটি বড় ডিমে থাকে প্রায় ৬ গ্রাম আমিষ। ডায়েটে ভিটামিন ডি যোগ করার জন্য ডিম বেছে নেওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ।

৬. খাবার খেতে হবে ক্যালরি মেপে। কতটুকু খাবারে কতটুকু ক্যালরি ঢুকছে শরীরে, তা মাথায় রাখতে হবে। বুঝেশুনে খেলেই আর বিপদের সম্ভাবনা নেই।

৭. ডায়াবেটিসে আক্রান্তদের শুকনো শিম খাওয়া উচিৎ। অতিরিক্ত সোডিয়ামযুক্ত ক্যানজাত শিম নয়। শিমে গ্লুকোজ উপাদান কম থাকে। ফলে এটি যে কোনো শ্বেতসার জাতীয় খাবারের চেয়ে রক্তে সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে অনেক বেশি। শিমে উচ্চহারে আঁশ থাকে। ফলে তা রক্তে সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করার পাশাপাশি কোলেস্টেরলের মাত্রাও কমিয়ে রাখে।

৮. বেরি বেরিজাতীয় ফলগুলোতেও গ্লুকোজ উপাদান কম থাকে। বেরিতে আছে ফ্রু্ক্টোজ যা হজমের জন্য ইনসুলিন দরকার হয় না। মাকুই বেরিতে আছে সবচেয়ে বেশি মাত্রায় অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা টিউমার এবং স্তন ক্যান্সারের কোষের বৃদ্ধি প্রতিরোধ করে। এতে থাকা অ্যান্থোসায়ানিনে আছে শক্তিশালী প্রদাগরোধী উপাদান যা রিউম্যাটয়েড আর্থ্রাইটিস এবং হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়। এটি দেহে ইনসুলিনের উৎপাদন বাড়িয়ে দেয়। এছাড়া এটি সুগার এবং কার্বোহাইড্রেটস ভেঙ্গে গ্লুকোজ তৈরি করতে সহায়ক। ফলে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য এটি একটি আদর্শ খাবার।

আরও পড়ুনঃ মটরশুঁটির উপকারিতা ও অপকারিতা

৯. কুমড়ো বীজ খেলে অস্বাস্থ্যকর খাবার এবং অতিভোজনের আকুতি কমে আসে। আর ইনসুলিনের প্রতি প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে দেহের সক্ষমতা বাড়ায়।

১০. সাদা চালের ভাত রক্তে সুগারর মাত্রা বাড়িয়ে দিতে পারে। সুতরাং লাল চালের ভাত খান। এতে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি অন্তত ১৫% কমে আসবে। আর ভাত খাওয়া বাদ দিয়ে অন্য কোনো শস্যজাতীয় খাবার খেলে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমবে অন্তত ৩৫%।

১১. ফ্ল্যাক্স সীড গত প্রায় ১০০ বছর ধরে ফ্ল্যাক্স সীড খাদ্য এবং ওষুধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এটি এখন এই গ্রহের একটি শক্তিশালী খাদ্য। ডায়াবেটিস, ক্যান্সার এবং হৃদরোগের ঝুঁকি কমায় এই খাদ্য। অন্যদিকে, এটি রক্তের সুগারের মাত্রা কমাতে এবং দেহকে ইনসুলিন ব্যবহারে আরো ভালোভাবে সক্ষম করে তোলে।

১২. সপ্তাহে অন্তত দুই দিন নিয়মিতভাবে আখরোট খেলে টাইপ টু ডায়াবেটিসের ঝুঁকি একেবারে কমে আসবে।

১৩. আপেল, ব্লুবেরি এবং আঙ্গুর যে স্বাস্থ্যকর তা সবারই জানা। এসব খাবার নিয়মিতভাবে পরিমিত পরিমাণে খেলে টাইপ টু ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমে। যারা প্রতিদিন আপেল খান তাদের টাইপ টু ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমে আসে ২৭%।

১৪. বার্লি এটি প্রাচীন একটি শস্য। মানুষেরা প্রথম যেসব শস্যের চাষ শুরু করে বার্লি তার মধ্যে একটি। এটি সহজেই দ্রবণীয় আঁশযুক্ত খাবার। যা লাল চালের চেয়েও ভালো। বার্লি যে রক্তে সুগারের মাত্রা ঠিক রাখে এবং কোলোস্টেরলের মাত্রা কমায় তা হয়তো অনেকেই জানেন না।

১৫. ঔষধি গাছ তুলসীকে বলা হয় ডায়াবেটিস রোগের ইনসুলিন। গবেষণায় দেখা গেছে, তুলসীপাতা বিবিধভাবে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। খালি পেটে তুলসীপাতার রস পান করলে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা কমে যায়। চাইলে তুলসীর রস আপনি চায়ের সাথে মিলিয়েও খেতে পারেন।

সুগার হলে কি খেলে ভালো হবে

অনেক স্বাস্থ্যকর খাবার আছে যা ডায়াবেটিস রোগীকে সুস্থ্য থাকতে সহায়তা করে। আবার কিছু খাবার আছে যেগুলো ডায়াবেটিস প্রতিরোধও করে। ডায়াবেটিস রোগে যারা আক্রান্ত অথবা যারা এই রোগের ঝুঁকিতে আছেন তারা জেনে নিন সুস্থ থাকার জন্য কোন ধরনের খাদ্য নিয়মিত গ্রহণ করবেন-

সবুজ শাক সব্জি 

সবুজ শাক সব্জি তে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন, খনিজ উপাদান এবং ফাইবার থাকে যা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। এমনকি ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকিও কমায়। এগুলো হলো পালং শাক, পাতা কপি, শালগম, ফুলকপি, বাঁধাকপি, লেটুস পাতা ইত্যাদি। এসব খাবারে ক্যালরি এবং কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণ কম। গবেষণায় বলা হয়, সবুজ শাক সবজি খেলে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি ১৪ শতাংশ পর্যন্ত কমে।

আরও পড়ুনঃ কচু শাক খাওয়ার উপকারিতা

শস্য ও দানাদার জাতীয় খাদ্য

প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় শস্য ও দানাদার জাতীয় খাদ্য মানুষের শরীরের রক্তে চিনির মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে। কারণ এতে কমপ্লেক্স কার্বোহাইড্রেট থাকে যা ধীরে ধীরে রক্তে চিনির মাত্রা বাড়ায়। ফলে ডায়াবেটিসের সম্ভাবনা কমে। আবার ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণেও সাহায্য করে শস্য দানা।

বাদাম

বাদাম অত্যন্ত পুষ্টিকর খাবার। গবেষণায় দেখা গেছে, ডায়াবেটিসের ঝুঁকি প্রায় ২১ শতাংশ পর্যন্ত কমায় চীনাবাদাম। বাদামে প্রচুর আঁশ এবং হৃৎপিণ্ডের জন্য পুষ্টিকর উপাদান আছে। বাদামের  রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক বেশি। প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় ১০-২০ গ্রাম বাদাম রাখলে ডায়াবেটিস প্রতিরোধে বিস্ময়করভাবে কাজ করে। নিয়মিত বাদাম খেলে হৃদরোগের ঝুঁকিও কমে।

ডাল এবং বীজ জাতীয় খাদ্য

ডাল এবং বীজ জাতীয় খাদ্যও ডায়াবেটিসের জন্য উপকারী। কারণ এতে প্রচুর পরিমাণে খাদ্য আঁশ এবং আমিষ থাকে। ডায়াবেটিস রোগীর জন্য ছোলা বুট, বিভিন্ন রকমের কলাই বা ডাল, সূর্যমুখীর বীজ ও কুমড়ার বীজ অনেক উপকারী।

মিষ্টি আলু

মিষ্টি আলু ডায়াবেটিস রোগীদের রক্তে ইনসুলিনের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করে এবং রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে। তাই সাদা আলুর পরিবর্তে মিষ্টি আলু খওয়াই উত্তম।

সবুজ চা বা গ্রিন টি 

সবুজ চা মানুষের শরীরে ইনসুলিনের মতো কাজ করে, ডায়াবেটিস প্রতিরোধে সাহায্য করে এটি। তবে চিনি ছাড়া খেতে হবে গ্রিন টি।

মাছ

মাছে আছে প্রচুর পরিমাণ প্রোটিন। যা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উপকারী। তাছাড়া মাছের ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড ইনসুলিনের সংবেদনশীলতাকে উন্নত করতে সাহায্য করে। এটি গ্লুকোজের ঘনত্ব কমিয়ে ডায়াবেটিস রোগের ঝুঁকি হ্রাসে সহায়তা করে।

টক দই

ডায়াবেটিস প্রতিরোধে টক দই সাহায্য করে। টক দইয়ে চিনির পরিমাণ খুব কম থাকে এবং এটি রক্তে চিনির পরিমাণ কমাতে সাহায্য করে।

ডিমের সাদা অংশ

ডিমের সাদা অংশে উচ্চমানের চর্বিহীন প্রোটিন এবং কম মাত্রায় কার্বোহাইড্রেট রয়েছে। যা ডায়াবেটিস প্রতিরোধে সাহায্য করে। ডিম একটি পেশি গঠনকারী খাদ্য।

আরও পড়ুনঃ ফোন চার্জের সময় এই ভুলগুলো আপনিও করছেন তো

লেবু ও টক জাতীয় ফল

লেবু ও লেবু জাতীয় টক ফল ডায়াবেটিস প্রতিরোধে কাজ করে। ভিটামিন সি ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমায়। টক জাতীয় ফল খেলে ভিটামিন সি এর অভাব পূরণ হয়। জাম্বুরা, কমলা, লেবু এবং অন্যান্য টক জাতীয় ফল ডায়েবেটিস নিয়ন্ত্রণে ইনসুলিনের মতো কাজ করে।

দারুচিনি, রসুন ও মেথি

এসব মসলাতে প্রচুর ভিটামিন ও খনিজ উপাদান রয়েছে। যা রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখে। রান্নার পাশাপাশি এসব মসলা স্বাস্থ্য ভালো রাখার ওষুধ হিসেবেও কাজ করে।

ডায়াবেটিসে কোন মশলা খাওয়া যাবে

দারুচিনি

দারুচিনিতে একাধিক থেরাপিউটিক উপাদান থাকায় এটি ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতিদিন ৩-৬ গ্রাম দারুচিনি খেলে রক্তে শর্করার পরিমাণ কমে যায়। দারুচিনি ইনসুলিনের সংবেদনশীলতা এবং রক্তের গ্লুকোজের মাত্রা হ্রাস করে। রক্তে শর্করার পরিমাণ কমে গেলে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমে যায়।

হলুদ

হলুদের হাজার গুণাগুণ রয়েছে। কাটা, ক্ষত ভালো করার পাশাপাশি হলুদ অ্যান্টি ডায়াবেটিস হিসেবে কাজ করে। এটি ডায়াবেটিস বাড়তে দেয় না, বিটা-কোষের কার্যকারিতা উন্নত করে এবং তাদের মৃত্যু রোধ করে। হলুদে থাকা কারকুমিন উপাদান হৃদরোগ ও কিডনিজনিত জটিলতা কমায়।  

মেথি

ডায়াবেটিস হলে রক্তে শর্করার পরিমাণ বেড়ে যায়। মেথি শর্করার মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। সেই সঙ্গে হাইপারগ্লাইসেমিয়া হ্রাস করতে সাহায্য করে। গবেষণায় দেখা গেছে, ৩ বছর ধরে টানা মেথি খেলে ডায়াবেটিস হওয়ার আশঙ্কা অনেকটা কমে যায়।

লাল মরিচ

লাল মরিচে থাকা ক্যাপসাইকিন উপাদান অ্যান্টি-ডায়াবেটিক হিসেবে কাজ করে। ডায়াবেটিসের কারণে যেসব সমস্যা দেখা দেয় যেমন-স্থূলতা, পেটের নীচে যন্ত্রণা সেসব রোধ করে।  এক গবেষণায় দেখা গেছে যে, ক্যাপসাইকিন ইনসুলিনের উৎপাদন এবং বিপাকে সাহায্য করতে পারে। এ ইনসুলিন একটি হরমোন যা শর্করার মাত্রা ঠিক রাখে।

তেজপাতা

টাইপ টু ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে তেজপাতা। প্রতিদিন ১-৩ গ্রাম তেজপাতা খেলে ডায়াবেটিসজনিতা জটিলতা যেমন- হৃদরোগের ঝুঁকি কমে। এতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট কোষের কার্যকারিতা উন্নত করতেও সহায়তা করে।

এলাচ

এলাচে থাকে অ্যান্টিইনফ্ল্যামেটরি, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং হাইপোলিপিডেমিক উপাদান, রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা ঠিক রাখে। এটি এনার্জি, কোষের কার্যকারিতা উন্নত করতে এবং ইনসুলিনকে যথাযথভাবে মুক্তি দিতে পারে।

আরও পড়ুনঃ ফ্রিজ পরিষ্কার ও দুর্গন্ধ মুক্ত করার কয়েকটি উপায়

লবঙ্গ

অতিরিক্ত গ্লুকোজ সংরক্ষণ করে গ্লুকোজ স্তর বজায় রাখতে সাহায্য করে লবঙ্গ। গবেষণায় দেখা গেছে, লবঙ্গে গ্যালিক অ্যাসিড, কেটেকিন এবং কোরেসেটিনের মতো পলিফেনল থাকে যেগুলি লিভারের কার্যকারিতা বজায় রাখতে এবং লিভারের গ্লাইকোজেনকে গ্লুকোজে রূপান্তর করতে সহায়তা করে, যা ডায়াবেটিসকে নিয়ন্ত্রণ করে।

জিরা

ডায়াবেটিস রোগীদের ব্লাড গ্লুকোজ, বডি ফ্যাট, লেপটিনের মাত্রা কম করে জিরা। এগুলো কমে গেলে ইনসুলিন প্রতিরোধ বাড়ায় এবং ডায়াবেটিসের জটিলতা হ্রাস হয়। 

গর্ভবতী ডায়াবেটিস রোগীর খাদ্য তালিকা

যদি আপনার গর্ভকালীন ডায়াবেটিস থাকে, তাহলে একটি স্বাস্থ্যকর, সুষম খাদ্য বজায় রাখার ফলে ওষুধের প্রয়োজন ছাড়াই আপনার উপসর্গগুলি পরিচালনা করতে সহায়তা করে। সাধারণভাবে, আপনার খাদ্য প্রোটিন যোগ করা উচিত এবং কার্বোহাইড্রেট এবং ফ্যাট সঠিক মিশ্রণ।

আমেরিকান ডায়াবেটিস অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিটি খাবারের জন্য একটি সুস্থ প্লেট তৈরি করার পদ্ধতি শিখতে সাহায্য করার জন্য ম্যালোলেট নামক একটি সহায়ক নির্দেশিকা রয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, প্রতিটি খাবার ২৫% প্রোটিন, ২৫% স্টার্চ এবং ৫০% অনিয়ন্ত্রিত খাদ্য, যেমন সবজি বা সালাদ হিসাবে হওয়া উচিত।

যদি আপনার গর্ভকালীন ডায়াবেটিস থাকে তবে স্নাকস এবং খাবারের জন্য কয়েকটি সুস্থ পছন্দগুলি হল:

১) তাজা বা হিমায়িত সবজি

২) ডিম বা ডিমের সাদা

৩) তাজা ফল

৪) বেকড মাছ

৫) ভাজা সবজি

৬) পপকর্ন

৭) দই

বেসিক স্বাস্থ্যকর খাবার

  • প্রত্যেক খাবারের সাথে প্রোটিন খান।
  • আপনার খাদ্যে দৈনন্দিন ফল ও সবজি অন্তর্ভুক্ত করুন।
  • আপনার খাদ্য 30% বা তার কম চর্বি হতে হবে।
  • প্রক্রিয়াকৃত খাবার সীমিত বা এড়িয়ে যান
  • অবাধ্যতা এড়ানোর জন্য অংশের আকারের দিকে মনোযোগ দিন।

আপনি অত্যন্ত প্রক্রিয়াজাত খাবার এড়িয়ে চলতে চান, যেমন সাদা রুটি, এবং, সাধারণভাবে, এমন কিছু যা অনেক চিনিযুক্ত থাকে উদাহরণস্বরূপ, আপনি যেমন খাবারগুলি এড়িয়ে যেতে নিশ্চিত করতে চাইবেন:

  • ফাস্ট ফুড
  • মদ্যপ পানীয়, যা গর্ভবতী হলে আপনি যেকোনভাবে এড়াতে পারবেন
  • বেকড পণ্য যেমন মফিন, ডোনাট বা কেক
  • ভাজা খাবার
  • মিষ্টি পানীয় যেমন সোডা, রস, মিষ্টি পানীয়
  • মিছরি
  • সাদা আলু এবং সাদা চালের মত খুব স্টার্জি খাবার 
  • যদি আপনি অনিশ্চিত থাকেন তবে আপনার ডাক্তারকে জিজ্ঞাসা করুন খাবার সম্পর্কে সাধারণত আপনি খাওয়া তারা আপনাকে কীভাবে এড়াতে হবে তা চিহ্নিত করতে আপনাকে সাহায্য করতে পারে।

ডায়াবেটিস রোগীর জন্য খেজুর

খেজুর একটি পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ ফল। খেজুরের রয়েছে অনেক উপকারীতা।ডায়াবেটিস রোগীরা এটি খাওয়ার আগে দু'বার ভাবেন। কিন্তু ডায়াবেটিস রোগীরাও খেজুর খেতে পারেন। ভালো হয় যদি আগের রাতে খেজুর জলে ভিজিয়ে রেখে খান।

আরও পড়ুনঃ তুলসী গাছের কাছে ভুল করেও এই জিনিসগুলি রাখবেন না

ডায়াবেটিস রোগীর জন্য কলা

কলা'ও একটি ভালো ফল। কিন্ত সর্দি-কফ্-কাশি তে কলা খাওয়া হয়না। তেমনি ডায়াবেটিসেও কলা না খাওয়াই ভালো। কিন্তু তার মানে এই নয় যে জীবন থেকে কলা কে একদম বাদ দিয়ে দিতে হবে। সুগার আপনার কন্ট্রোলে থাকলে মাঝেমধ্যে খেতে পারেন।

ডায়াবেটিস রোগীর জন্য দুধ

দুধ ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ‘ডি’-এর ভালো উৎস দুধ। আর সেজন্য দুধ ডায়াবেটিস আক্রান্তদের জন্য উপকারী খাবার। অনেকের দুধ খেলে পেটে বায়ু হয়, তাই আপনি চাইলে দুধের ফ্যাটি অংশটি ছাড়া টকদই ও অন্যান্য দুগ্ধজাত খাবারও খেতে পারেন। সকালের নাশতায়ও আপনি রাখতে পারেন দুধ অথবা দুগ্ধজাত কোনো খাবার।

ডায়াবেটিস রোগীর জন্য মধু

মধু একটি উত্তম খাদ্য ও পানীয়। বহু শতাব্দী ধরেই ভারতসহ পৃথিবীর অনেক দেশে সাধারণ খাদ্য ও ঔষুধি খাদ্য হিসেবে মধু ব্যবহৃত হয়ে আসছে। মধু একটি ভালো বলকারক ও উত্তেজক খাদ্য। অনেকে দীর্ঘ সর্দি-কাশিতে বা যাদের ঘন ঘন ঠাণ্ডা লাগে, তাদের জন্য উপকারী বলে দাবি করে আসছেন। যে কারণেই খাওয়া হোক না কেন, ডায়াবেটিস রোগীদের বেলায় মধু খাওয়া কতটা এবং কিভাবে স্বাস্থ্যকর তা নিয়ে মৃদু বিতর্ক চলছে। এ আলোচনার মাধ্যমে সে বিতর্ক কিছুটা হলেও অবসান হবে বলে আশা করছি। মধুতে যথেষ্ট পরিমাণে শর্করা

আছে। মধুতে ২৫-৩৭ শতাংশ গ্লুকোজ, ৩৪-৪৩ শতাংশ ফ্রুকটোজ, ০.৫-৩ শতাংশ সুক্রোজ ও ৫-১২ ম্যালটোজ থাকে। গ্লুকোজ তো আছেই, বাকি শর্করাটুকুও রেচন প্রক্রিয়ায় শেষ পর্যন্ত গ্লুকোজে রূপান্তরিত হয়। অর্থাৎ গৃহীত মধুর প্রায় ৭৫ শতাংশ থেকে ৮০ শতাংশ গ্লুকোজে পরিণত হচ্ছে। প্রতি গ্রাম মধু থেকে ১.৮৮ কিলোক্যালরি শক্তি পাওয়া যায়। এতে সামান্য পরিমাণে প্রোটিনও পাওয়া যায়। মধু একটি ঘন শর্করা জাতীয় খাদ্য। কেউ কেউ বলে থাকেন মধু মিষ্টি জাতীয় খাদ্য হলেও ডায়াবেটিস রোগীরা স্বাচ্ছন্দ্যে তাদের ইচ্ছামাফিক মধু খেতে পারেন। কোনো ডায়াবেটিস রোগী যদি সত্যি সত্যিই তা করে থাকেন তবে তিনি নিজের জন্য বড় ধরনের বিপদ ডেকে আনবেন। আর তা বাজারের অন্য কোনো মিষ্টিদ্রব্য যেমন রসগোল্লা, চমচম বা সন্দেশ খাওয়ার চেয়ে বড় মাত্রায় হবে। কেন হবে এমন তা আমরা উপরে দেখানো মধুর উপাদানের দিকে তাকালেই বুঝতে পারি। ডায়াবেটিস রোগীরা মধু একেবারেই খেতে পারবেন না, তা নয়। তবে যতটুকু মধু খাবেন, তার সমতুল্য পরিমাণ শর্করা জাতীয় খাদ্য ওই বেলা কম খেতে হয়। আর একসাথে বেশি পরিমাণ মধু কোনোভাবেই খাওয়া উচিত হবে না। এক চামচ মধু খাওয়ার জন্য প্রায় দেড় কাপ ভাত, ছোট একটি রুটি খাওয়া বাদ দিতে হবে। কেউ যদি এরূপ হিসাব মেনে নিয়ে মধু খেতে পারেন তবে তার জন্য খুব ক্ষতিকর হবে না। তবে এটা করা বেশির ভাগ ডায়াবেটিস রোগীর পক্ষেই কঠিন হয়ে দাঁড়াবে। আর তাই ডায়াবেটিস রোগীর জন্য মধু বর্জন করাই ভালো।

ডায়াবেটিস রোগীর নিষিদ্ধ খাবার তালিকা 

সুগার হলে কি কি খাওয়া নিষেধ

যদি আপনার ডায়াবেটিস থাকে, তবে কী খাচ্ছেন তা খেয়াল রাখা সবচেয়ে জরুরি। কিন্তু এত বাছবিচার করা হলে পুষ্টির বিষয়টি চিন্তার কারণ হতে পারে।

ডায়াবেটিস রোগীদের পুষ্টি পূরণের একমাত্র লক্ষ্য হবে সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে এমন খাবার খাওয়া।

এখানে জেনে নিন এমন ১৩টি খাবারের কথা যা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য সবচেয়ে বাজে এবং ক্ষতিকর খাবার বলে বিবেচিত হতে পারে।

১. সাদা চাল :

যত সাদা চালের ভাত খাবেন, টাইপ ২ ডায়াবেটিস রোগীদের ঝুঁকি তত বাড়তে থাকবে। ২০১২ সালের এক গবেষণায় দেখা গেছে, সাদা চালের খাবার খেলে প্রতিদিনই ঝুঁকির মাত্র ১১ শতাংশ হারে বেড়ে যায়।

কারণ এই চাল প্রক্রিয়াজাত করে সাদা করা হয়। তা ছাড়া এই খাবার চিনি মাত্রাও বাড়িয়ে দিতে পারে।

পরিবর্তে বাদামী চালের খাবার খেতে পারেন। এতে রক্তে সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকবে।

২. ব্লেন্ডেড কফি :

সিরাপ, সুগার এবং ক্রিম সমৃদ্ধ ব্লেন্ডেড কফি ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর বলে বিবেচিত হতে পারে। একে স্রেফ কফি হিসেবে হয়তো খাবেন আপনি।

কিন্তু এর ব্লেন্ডেড সংস্করণে রক্তে গ্লুকোজ বাড়ানোর উপাদান রয়েছে প্রচুর পরিমাণে। এক কাপ ব্লেন্ডেড কফিতে ৫০০ ক্যালরি, ৯৮ গ্রাম কার্ব এবং ৯ গ্রাম ফ্যাট থাকে।

৩. কলা এবং তরমুজ :

সব তরতাজা ফলেই ভিটামিন ও ফাইবার রয়েছে। কিন্তু ফলে সুগার থাকে। তাই কলা, তরমুজের পুষ্টিগুণ ভালো থাকলেও এতে গ্লুকোজের পরিমাণ প্রচুর। তাই ব্লুবেরি এবং বেরি জাতীয় ফল বেশি বেশি খান।

আরও পড়ুনঃ ডায়াবেটিস রোগীর জন্য কিনবেন কোন ফল?

৪. চাইনিজ খাবার :

মুখরোচক হলেও এই খাবার ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ক্ষতিকর। এতে রক্তে সুগারের মাত্রা বাড়িয়ে দেওয়ার মতো যথেষ্ট উপাদান রয়েছে।

তাই এর বদলে বাড়িতে চাইনিজ খাবার বানিয়ে নিন স্বাস্থ্যকরভাবে যা আপনার রক্তে চিনির পরিমাণ বাড়াবে না।

৫. পেস্ট্রি :

ডোনাট, টোস্ট বা পেস্ট্রির মতো মজার খাবার ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ভয়ংকর হতে পারে। এসব প্রক্রিয়াজাত সাদা চাল থেকে তৈরি হয় যাতে উচ্চমাত্রার ফ্যাট, কার্ব এবং সোডিয়াম রয়েছে।

তাই পরনিবর্তে বাদামী চালের তৈরি কেক খান। কম চিনি রয়েছে এমন পিনাট বাটার ব্যবহার করুন।

৬. ফ্রুট স্মুথি :

এর নাম শুনলে মনে হয় খুবই স্বাস্থ্যকর। কিন্তু এটি চিনিতে পরিপূর্ণ।তাই খেতে মন চাইলে বাড়িতে চিনি ছাড়া তৈরি করে উপভোগ করুন।

৭. ট্রেইল মিক্স :

সংরক্ষণ করা হয় এমন ট্রেইল মিক্সে বাদাম, শুকনো ফল এবং মিল্ক চকোলেট রয়েছে। এদের মধ্যে বাদাম ছাড়া বাকিগুলো ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য নিশ্চিত হুমকি।

তাই এর পরিবর্তে নিম্নমাত্রার কার্বযুক্ত সূর্যমুখীর বীচি, ওয়ালনাট, রোস্টেড পিনাট এবং আলমন্ড দিয়ে ট্রেইল মিক্স বানাতে পারেন। এই মিক্স কার্বোহাইড্রেটসমৃদ্ধ পাউরুটি দিয়ে খেতে পারেন।

আরও পড়ুনঃ ডায়াবেটিস প্রতিরোধের উপায়

৮. রিফাইন্ড সিরিয়াল :

উপাদেয় সিরিয়াল রক্তে সুগারের মাত্রা বাড়িয়ে দেবে। তবে সিরিয়ালের ক্ষেত্রে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা একেক জনের দেহে একেকভাবে দেখা দিতে পারে। তাই এটি ডায়াবেটিস রোগীদের এড়িয়ে চলাই ভালো। এর পরিবর্তে সবজি ও ডিমের সাদা অংশ খেতে পারেন। ডিমের কুসুমে কোলেস্টরেল রয়েছে তা ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।

৯. ফলের রস :

সকালের নাস্তায় ফলের রস খুব স্বাস্থ্যকর হলেও তা ডায়াবেটিস রোগীর জন্য হুমকি। তা ছাড়া দোকানে পাওয়া যায় এমন ফলের রসে প্রচুর পরিমাণে চিনি থাকে।

এর বদলে কম সুগার রয়েছে এমন ফলের একটি বা দুটি টুকরো খেতে পারেন।

১০. এনার্জি বার :

এনার্জি বারে আসলে থাকে চকোলেট, কার্ব এবং চিনি। তাই এটি ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য অবশ্য বর্জনীয়।

তাই ক্ষুধা লাগলে বাড়িতে তৈরি স্ন্যাক্স খেতে পারেন।

১১. পাস্তা আলফ্রেডো :

আলফ্রেডো সস ক্রিম, পারমেসান চিজ এবং বাটার থেকে তৈরি হয়। এতে রয়েছে ১ হাজার ক্যালরি, ৭৫ গ্রাম ফ্যাট এবং ১০০ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট। তাই বাদ দেওয়া জরুরি।

এর পরিবর্তে গমের তৈরি পাস্তা খেতে পারেন টমেটো সস দিয়ে। এতে রয়েছে ২৮০ ক্যালরি এবং ১৪ গ্রাম ফ্যাট।

১২. ফ্রেঞ্চ ফ্রাই :

এটি ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য বেশ মারাত্মক খাবার। একটু বেশি পরিমাণ খেলে রক্তে সুগারের মাত্রা বেড়ে যাবে। ডায়াবেটিস অ্যাসোসিয়েশন এক এড়িয়ে চলেত বলেছে।

তাই বাড়িতে কিছু আলু ভেজে খেতে পারেন এবং একে এড়িয়ে গিয়ে অন্যান্য সবজি খাওয়াই ভালো।

আরও পড়ুনঃ কোন কোন শাকসব্জি ডায়াবেটিসে উপকারী

১৩. চর্বিসমৃদ্ধ মাংস :

ডায়াবেটিস রোগীরা হৃদরোগের ঝুঁকিতে থাকেন। তাই চর্বিযুক্ত মাংস পুষ্টিকর হলেও তা হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়াবে ডায়াবেটিস রোগীদের। তাই বিশেষ করে রেড মিট এর মতো মাংস বাদ দিতে হবে। এতে প্রচুর পরিমাণে সম্পৃক্ত ফ্যাট রয়েছে।

এর বদলে প্রোটিনসমৃদ্ধ বিন, লেনটিস ইত্যাদি কেতে পারেন। তা ছাড়া মাছ, সামুদ্রিক খাবারও ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উপকারী।


ডায়াবেটিস হলে কি কি ফল খাওয়া যাবে

শরীরের জন্য ফল-ফলাদি খুব উপকারী হলেও, ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ফল খাবার ব্যাপারেও থাকে বেশ বাধা-নিষেধ। আমাদের আজকের লেখাটি তাই আমরা সাজিয়েছি এমন সব ফল নিয়ে যা ডায়াবেটিস নিয়েও আপনি নিশ্চিন্তে খেতে পারবেন।

কিউই

মজাদার এই ফলটি বিদেশি হলেও আজকাল আমাদের দেশে সহজেই কিনতে মেলে। গবেষণায় দেখা গেছে যে এই ফলটি দেহের সুগারের স্তরকে কমিয়ে আনতে সহায়তা করে, তাই এই ফলটি ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য বেশ কার্যকরি।

কালো জাম

গ্রীষ্মের ফল কালোজাম ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য উপকারী একটি ফল। এতে থাকা বিভিন্ন উপাদান রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করে তাই ডায়াবেটিক রোগীরা একদম চিন্তামুক্তভাবে এই ফলটি খেতে পারেন। শুধু ফলই নয়, কালোজামের বীজকে গুঁড়ো করে দিনে একবার যদি হাফ চামচ খাওয়া যায় সেটিও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে।

আরও পড়ুনঃ চুল পড়া কমানোর সহজ সমাধান 

অ্যাভোকাডো

মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাট সমৃদ্ধ বিদেশি ফল অ্যাভোকাডো হজমক্রিয়াকে ধীর করে এবং রক্তের সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। এছাড়া অ্যাভোকাডোতে থাকা ভাল ফ্যাট ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমাতেও সাহায্য করে।

কামরাঙ্গা

বিশেষ করে টক কামরাঙ্গা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য খুবই উপকারী। কালো জামের মতো এটিও রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করে ফলে ডায়াবেটিক রোগীরা তাদের শর্করা নিয়ন্ত্রণে রাখতে এই ফলটি তাদের খাবার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে পারেন।

পেয়ারা

প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ, ভিটামিন সি এবং ডায়েটারি ফাইবার রয়েছে পেয়ারায়। ডায়েটারি ফাইবার থাকার কারণে জিআই খুবই কম পরিমাণে থাকে যা রক্তের শর্করা না বাড়িয়েই শরীরে দেয় বাড়তি পুষ্টি। এছাড়া ডায়েটারি ফাইবার কোষ্ঠকাঠিন্য কমাতেও সহায়তা করে।

আনারস

আনারস অ্যান্টি ভাইরাল, অ্যান্টি ইনফ্ল্যামাটরি এবং অ্যান্টি ব্যাকটরিয়াল একটি ফল, যা খেলে দেহে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেড়ে যায়, ফলে সাধারণত ভাইরাল জ্বরে আনারস অনেক বেশি কাজে দেয়। এছাড়া ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণেও আনারস বেশ কার্যকরি।

পেঁপে

পেঁপেতে রয়েছে ভিটামিন এবং মিনারেল, যার কারনে পেঁপে ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য বেশ কার্যকর। কাঁচা ও পাকা দুই রকম পেঁপেই ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উপকারী। খিদে পেলে পেট ভরাতেও অনন্য এই খাবার, তবে পাকা পেঁপে মিষ্টি হলে খাবেন পরিমিত পরিমাণে।

আরও পড়ুনঃ কোষ্ঠকাঠিন্য (Constipation) কেন হয়?

তরমুজ

যত ইচ্ছা তত পরিমাণে যে ফলটি খেতে পারেন ডায়াবেটিস রোগীরা, সেটা হচ্ছে তরমুজ। খিদে মেটানো, শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি যোগানো ছাড়া জল শূন্যতাও রোধ করে এই ফলটি। তবে একটু সুগারের দিকেও নজর দিতে হবে।

ডালিম

ডায়াবেটিস রোগীদের রক্তে সুগারের নিয়ন্ত্রণ করতে সহায়তা করে ডালিম। ডালিম এমনিতেই অনেক রোগের কার্যকরি ওষুধ হিসেবে কাজে দেয়, তবে ডায়াবেটিস রোগটি নিয়ন্ত্রণে এটি বেশ সহায়তা করে।

জামরুল

তরমুজের মতো জামরুলেও রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পানি, তাই ডায়াবেটিস রোগীরা নিয়মিত জামরুল খেতে পারেন। জামরুল রক্তের চিনির পরিমান নিয়ন্ত্রণ করে। এছাড়াও জামরুলে আছে প্রচুর পরিমানে ফাইবার যা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে বেশ উপকারী।

আমলকী

আমলকীতে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন সি আছে। ডায়াবেটিস রোগীরা নিয়মিত আমলকী খেলে রক্তের চিনির পরিমান নিয়ন্ত্রণে থাকবে।

আমড়া

আমড়া একটি পুষ্টিকর টক ফল। ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ভিটামিন সি সমৃদ্ধ এই ফলটি খুবই উপকারী।

টক বড়ই

টক বড়ইতে আছে প্রচুর ভিটামিন সি যা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উপকারী।

এখন বাজারে টক বড়ই ও আমলকী প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যাচ্ছে। বড়ই দিয়েই শুরু হোক ফল খাওয়া।

আরও পড়ুনঃ ১ সপ্তাহে পেট কমানোর উপায়

ডায়াবেটিস হলে কি কি সব্জি খাওয়া যাবে

ডায়াবেটিস রোগীর খাবারে শাকসবজির গুরুত্ব অপরিসীম। ভারত ষড়ঋতুর দেশ। সারা বছরই এ দেশে নানা ধরনের শাকসবজি উৎপাদন হয়। প্রকৃতির এই আশীর্বাদকে বিজ্ঞানসম্মত কাজে লাগিয়ে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখা ও প্রতিরোধ করা যায়। ডায়াবেটিস রোগীর সুবিধার জন্য শাকসবজিকে দুই ভাগে ভাগ করা যায়। যেমন-

১) শর্করা সম্বলিত সবজি

যেমন- আলু, মিষ্টি কুমড়া, কাঁচা কলা, বরবটি, থোড়, মোচা, বিট, শিম, মাটির নীচের কচু, গাজর, কাঁকরোল, শিমের বিচি, কাঁঠালের বিচি, শালগম, ইঁচড়, ঢেঁড়স, বেগুন, মটর শুঁটি, কচুরমুখী, পাকা টমেটো।

২) শর্করাবিহীন শাকসবজি

যেমন- সব ধরনের শাক, যেমনÑ লালশাক, পুঁইশাক, পালংশাক, কলমিশাক, ডাঁটাশাক, কচুশাক ইত্যাদি এবং সবজি যেমন  ফুলকপি, বাঁধাকপি, মুলা, ওলকপি, কাঁচা টমেটো, কাঁচা পেপে, শসা, খিরা, উচ্ছে, করলা, ঝিঙা, চিচিঙা, পটোল, লাউ, চালকুমড়া, ডাঁটা, সজনা, ধন্দুল, ক্যাপসিকাম, কাঁচামরিচ, মাশরুম ইত্যাদি।

উপরোক্ত শাকসবজিগুলো প্রতিটি মরসুমেই কোনটা না কোনটা উৎপাদিত হয়। ডায়াবেটিস রোগীর উচিত প্রতি দিন একই ধরনের শাকসব্জি না খেয়ে পাঁচ মিশালী শাকসবজি খাওয়া। এতে করে সব ধরনের শাকসবজির ভিটামিন মিনারেলস শরীরের কাজে লাগবে, খাবারে বৈচিত্র্য আসবে, পেট ভরবে, মনে পরিতৃপ্তি আসবে এবং ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকবে।

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখা খুব জরুরি। বীজ যেমন- পরিবেশ পেলে গজিয়ে উঠে অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস ও তেমনই নানা ধরনের রোগ হওয়ার জন্য উপযুক্ত পরিবেশ। অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিসে হার্ট, কিডনি, লিভার, চোখ নষ্ট হয়ে যায়, নানা রকম ক্যান্সার হতে পারে, এমনকি শরীরের মাংসেও পচন ধরতে পারে। গর্ভকালীন সময়েও নানা ধরনের জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে, গর্ভস্থ শিশু মৃত এবং প্রতিবন্ধী হতে পারে, অর্থাৎ ডায়াবেটিস, এহেনও কোনো রোগ বা জটিলতা নেই যেটা জন্মাতে সাহায্য করে না। আল্লাহ তায়ালা শাকসবজির ভেতর এতই নিয়ামত দিয়ে রেখেছেন যে সারা বছর যেসব শাকসবজি পাওয়া যায় তা দিয়েই এসব রোগ প্রতিরোধ করা যায়। প্রতি দিনের খাবারে আঁশযুক্ত শাকসবজি থাকতে হবে। বিভিন্ন প্রকার শাক, তরি-তরকারি যেমন শিম, বরবটি, মাশরুম, লাউ, কুমড়া, গাজর, কাঁচা কলা, ডাঁটা এগুলোর বাইরের আবরণ হচ্ছে সেলুলোজ, একে আঁশ ও বলা যায়। এগুলো হজম হয় না, রক্তে শর্করার পরিমাণ বাড়তে দেয় না, ওজনও বাড়ায় না। এগুলো খাদ্যনালীর আর্দ্রতা পরিশোষণ করে ক্ষুদ্রান্ত্র পার হয়ে মলের সাথে বৃহদন্ত্রে উপস্থিত হয়ে উত্তেজনা সৃষ্টি করে এবং মলত্যাগে সাহায্য করে। সুতরাং ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণসহ এসব খাবার কোষ্ঠকাঠিন্য এমন কি কোলন ক্যান্সারও দূর করে। রক্তস্বল্পতায় শাকসবজির গুরুত্ব অনেক। পালংশাক, লালশাক, পিয়াজ, গাজর, মুলা, বিট, মিষ্টি আলু, টমেটো, খোসাসহ আলু, কচুশাক, লেটুস পাতা, শিম, বরবটি ইত্যাদিতে লৌহ ও ফলিক এসিড রয়েছে। সবজির মধ্যে বীট রক্তশূন্যতা রোধে খুবই উপকারী। এতে রয়েছে পটাসিয়াম, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, সালফার, আয়োডিন, লৌহ, কপার, ভিটামিন বি-২, বি-৬, বি-১২ এবং ভিটামিন সি। উচ্চমানের লৌহের জন্য এটি রক্তের লোহিত কণিকা সক্রিয় করতে ও উৎপাদন করতে সাহায্য করে। দেহে ফ্রেশ অক্সিজেন সরবরাহও করে। অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস রক্তে কোলস্টেরলের মাত্রা বাড়িয়ে দেয় যেটা হার্টের জন্য ক্ষতিকর। নায়াসিন কোলস্টেরল কমাতে সাহায্য করে। এটা পাওয়া যায় আঁশযুক্ত সবুজ শাক সবজি, খোসাসহ আলুতে। তাছাড়া কাঁচা রসুনও খাওয়া যেতে পারে।

আরও পড়ুনঃ শরীর ও মন সুস্থ রাখার উপায়  

তাজা শাকসবজি আমাদের প্রক্রিয়াজাত করে খেতে হয় অর্থাৎ রান্না করে খেতে হয়। রান্নার ওপরও ডায়াবেটিস রোগীর রক্তে শর্করার বাড়া-কমা অনেকটা নির্ভর করে। যেমন- আলুর চিপস বা ফ্রেন্সফ্রাইয়ের চেয়ে সিদ্ধআলু খেলে শর্করার পরিমাণ দ্রুত বৃদ্ধি পায়। গাজর কাঁচা না খেয়ে সিদ্ধ অবস্থায় খেলে শর্করার পরিমাণ দ্রুত বেড়ে যায়। শর্করা সংবলিত সবজিগুলো অনেকক্ষণ ধরে রান্না করলে সহজে হজম হয়ে শোষণ হয় এবং দ্রুত রক্তে শর্করার পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়। শাকসবজি যেগুলো কাঁচা ও টাটকা খাওয়া যায় সেগুলো কাঁচা অবস্থায় খেলেই উপকার বেশি পাওয়া যায়। যেগুলো খোসাসহ রান্না করা যায় সেগুলো খোসাসহ রান্নাই ভালো। তবে সবজি বেশি সিদ্ধ না করে একটু কাঁচা কাঁচা করে রান্না করা উচিত। এতে স্বাদ, গন্ধ, রঙ এবং ভিটামিন অটুট থাকে।

ডায়াবেটিস রোগীর বিস্কুট

ডায়াবেটিস হলেই আমরা অনেকটা ভেঙে পড়ি। খাওয়া-দাওয়া নিয়ে বিভিন্ন চিন্তা-ভাবনা করতে থাকি। কিন্তু সত্যি কথা বলতে, এত চাপ নেওয়ার কিছুই নেই। সাধারন কিছু দৈনন্দিন নিয়ম-কানুন মানলেই করতে পারবেন বাজিমাত। এই খাওয়া নিয়ে মানুষের প্রশ্ন থাকে বিস্কুট খেতে পারেন কিনা। হ্যাঁ, খেতে পারেন কিন্তু তা যেন খুব বেশি মিষ্টিযুক্ত না হয়। এর জন্য সুগারফ্রী বিস্কুট খাওয়াই ভালো।

ডায়াবেটিস রোগীর সকালের খাবার

শর্করা দূরে সরিয়ে রাখতে গিয়ে ভাতের পরিমাণ, চিনি, আলু বা কন্দজাতীয় খাবার যেমন কমে যায়, তেমনই কিছু ফলও বাদ পড়ে যায় খাদ্যতালিকা থেকে, ব্লাড সুগারের কারণে। দুপুর বা রাতের খাবারে মাছ, মাংস, ডাল, আনাজে পেট ভরলেও সমস্যা হয় সকাল ও বিকেলের জলখাবার নিয়ে। রোজ একই ব্রেকফাস্ট কার আর ভাল লাগে। তবে ডায়াবিটিস হলেই আগে কী কী বাদ দেবেন ভাববেন না। বরং ভাবুন, কী কী খেতে পারবেন। সেই তালিকা আগে তৈরি করে নিন। তার পরে তা দিয়েই তৈরি করে নিতে পারেন রকমারি টিফিন।

প্রাতরাশে কী খাবেন?

রোগীর সুগার কতটা বেশি, ইনসুলিন নেন কি না, বয়স কত, অন্য কোনও অসুখ আছে কি না... এই সব কিছু দেখে তবে রোগীর ডায়েট তৈরি করা হয়। তবে ডায়াবেটিক রোগীরা সাধারণত কিছু ধরনের খাবার খেতেই পারেন। যেমন পুষ্টিবিদ সুবর্ণা রায়চৌধুরী বললেন, ‘‘সুজি, ডালিয়া, ওটস জাতীয় খাবার খেতে পারবেন। ডালিয়া দিয়ে খিচুড়ি, ডালিয়ার রুটি খাওয়া যায়। ওটস পরিজ, ওটসের প্যানকেক, সুজির দোসা বা উপমা খেতে পারেন। তবে অনেকে কর্নফ্লেকস খান, সেটি কিন্তু খাবেন না। কর্নফ্লেকসের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স হাই। তার চেয়ে বরং দুটো হাতে গড়া রুটি কিংবা ব্রাউন ব্রেড খেতে পারেন। রাগি বা বাজরার রুটি খেতে পারেন। এতে ফাইবারও পাবেন বেশি।’’

ডিমের সাদা অংশ দিয়ে অমলেটও তৈরি করা যায়। তার মধ্যে একটু পালং শাক কুচিয়ে দিয়ে দিন, স্বাদ বাড়বে। সঙ্গে একটি ব্রাউন ব্রেড টোস্ট আর শসার কয়েকটি টুকরো। এতে পেটও ভরবে। সপ্তাহে তিন দিন গোটা ডিমও খেতে পারেন বলে জানালেন সুবর্ণা। ছাতু খেতে পারেন সকালের দিকে। ডায়াটিশিয়ান কোয়েল পালচৌধুরী বললেন, ‘‘সকালে একটু ছাতু খেতে পারেন। পেট ভরবে। স্প্রাউট স্যালাড খাওয়া যায়। ছোলা ভিজে কাপড়ে মুড়ে রেখে দিন। অঙ্কুরোদ্গম হলে পরের দিন খান। এটিও খুব ভাল। তবে ডায়াবেটিক রোগীরা দিনে দু’ঘণ্টা অন্তর অল্প-অল্প করে খেলেই ভালো। এতে গ্লুকোজ়ের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা সহজ হয়।’’

আরও পড়ুনঃ উচ্চ রক্তচাপ কমানোর সহজ উপায়

স্ন্যাকস

বিকেলে বা সন্ধের সময়েও অল্প খিদে পায়। সে সময়ে ভারী খাবার খাবেন না। একটু ছানা খেতে পারেন বা পেঁয়াজ, শসা, নুন, লেবু, চাট মশলা দিয়ে ছোলা মাখা খেতে পারেন। মুড়ি খেতে পারেন একমুঠো। চিঁড়ে বা পোহা খাবেন না। তার জায়গায় হালকা ভেজিটেবল সুপ খেতে পারেন। অল্প চিকেন কুচি, পেঁয়াজ, রসুন দিয়েও সুপ তৈরি করে নিতে পারেন। মুগের ডাল বা বেসনের ছিল্লা তৈরি করে খাওয়া যায়। ধোকলা খেতে পারেন। তবে ধোকলার সঙ্গে মিষ্টি চাটনি খাবেন না। বিকেলে নুন, লেবু, কাঁচা পেঁয়াজ ছাতু মেখে খেতে পারেন। কিন্তু ছাতু ভারী, তাই হজম হতে দেরি হয়।

কী ধরনের ফল খাওয়া যায়?

‘‘এখন ফলের ব্যাপারে অতটা বিধিনিষেধ করা হয় না। কোনও ফলই একেবারে খাবেন না, তা নয়। বরং পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করা হয়। আমের মরসুমে একটু আমও খাবেন। ধরুন, সপ্তাহে দু’দিন এক ফালি করে আম খেলেন। তবে অবশ্যই কার ব্লাডসুগার কতটা, তার উপরে নির্ভর করবে এই পরিমাণ। ব্যক্তিবিশেষে মাপ বদলে যাবে। আপেল, পেয়ারা খেতে পারেন। মুসাম্বি, কমলালেবু, কালোজাম, জামরুল জাতীয় ফল খেতে পারেন। তবে যা-ই খাবেন, চিকিৎসক ও ডায়াটিশিয়ানের পরামর্শ নিয়ে খেতে হবে।’’

এর সঙ্গে দরকার ব্যায়াম। রোজ হাঁটাচলা করে শরীর সচল রাখতে হবে। হাঁটুর সমস্যা বা অন্য কোনও কারণে বেশি হাঁটা সম্ভব না হলে ডায়েটের দিকে নজর দিন। রোজ নির্দিষ্ট সময়ে খান। ডিনারও ন’টার মধ্যে শেষ করে ফেলতে পারলে ভাল। ডিনার সেরে একটু হাঁটাচলা করে ঘুমোতে যান।

আরও পড়ুনঃ দ্রুত ওজন বৃদ্ধির উপায় ও ওজন বৃদ্ধির ব্যায়াম

সকালে খাবেন না কোন খাবার

বাঙালি গৃহস্থ বাড়ির যে কোনও বয়সি সদস্যের দুটো নামের সঙ্গে পরিচয় হয়ে যায়, ব্লাড প্রেশার আর সুগার (ডায়াবিটিস)। এক বার এই রোগ দু’টির কবলে পড়লে, তা থেকে নিষ্কৃতি নেই। আমৃত্যু নিয়মের মধ্যে থাকতে হবে। ডায়াবিটিস বংশানুক্রমিক। তবে টেকনোলজি-নির্ভর, দুশ্চিন্তায় ভরা লাইফস্টাইলের কারণে এই রোগ যুব প্রজন্মের মধ্যেও নির্ধারিত সময়ের আগেই কড়া নাড়ছে। দুশ্চিন্তা কমানোর পথ সহজ নয়। তাই রোগের মোকাবিলায় রোগী যা করতে পারেন, তা হল কড়া ডায়েট মেনে চলা। তাই কয়েকটি খাবার সকালে বাদ দিলেই সুস্থ থাকা সম্ভব। দেখে নিন সেগুলি কী কী-

মিষ্টি সিরিয়ালস

অনেকেই সকালে সিরিয়ালস খেতে পচ্ছন্দ করেন, যা শরীরের ক্ষতি ডেকে আনে। এজন্য সিরিয়ালস কেনার আগে এর উপাদান দেখে কিনতে হবে। আবার অনেক সিরিয়ালস আছে যাতে অনেক মিষ্টি থাকে বা পুষ্টি উপাদান কম। এগুলো এড়িয়ে চলতে হবে।

ফলের রস

ফলের শরবত শরীরের জন্য ভালো মনে হলেও বাজারের কেনা শরবত ব্লাড সুগারের পরিমাণ বাড়িয়ে দিতে পারে কারণ এতে রয়েছে উচ্চ মাত্রায় চিনি। এজন্য সম্ভব হলে বাড়িতেই ফলের রস বানিয়ে নিন।

মিষ্টি দই

দই স্বাস্থ্যকর খাবার এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না। তবে বিভিন্ন ফ্লেভারের মিষ্টি দই শরীরে উল্টো সমস্যা তৈরি করে। খেতে ভালো লাগলেও দেখা যায় ব্লাড সুগারের পরিমাণ বেড়ে যায়।

প্যানকেক

সকালেপ্যানকেক খুব মজাদার একটি খাবার। তবে আপনার যদি ডায়াবিটিস থাকে তবে প্যানকেক এড়িয়ে চলুন। ময়দা,চিনি,ম্যাপেল সিরাপ দিয়ে প্যানকেক বানানো হয়।

আরও পড়ুনঃ রক্তের গ্রুপ অনুযায়ী মানুষের বৈশিষ্ট্য

স্মুদি

স্মুদিতে ব্যবহৃত দই, ফল এবং শর্করাযুক্ত সিরাপ আপনার ব্লাড সুগারের মাত্রা বাড়িয়ে দিতে পারে। স্মুদিতে প্রচুর পরিমাণে কার্বহাইড্রেট, আর অল্প পরিমাণে প্রোটিন থাকে। এজন্য স্মুদির পরিবর্তে আপেল, অ্যাভোকাডো বা সবজি দিয়ে আপনার দিন শুরু করুন।

ডায়াবেটিস রোগীর বিকালের নাস্তা

নিয়ন্ত্রিত জীবন-যাপনের মাধ্যমে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ এমনকি নির্মূল করাও সম্ভব। এজন্য খাদ্যতালিকা ও শরীরচর্চার প্রতি নজর দিতে হবে। বিশেষ করে ডায়াবেটিস রোগীর সকালের নাস্তা কেমন হওয়া উচিত ও কোন খাবার খাওয়া যাবে না সে সম্পর্কে জানতে হবে। কারণ সারাদিনের মধ্যে সকালের নাস্তা গুরুত্বপূর্ণ। কয়েকটি খাবার রয়েছে যেগুলো খেলে ডায়াবেটিস রোগীর রক্তের সুগার নিয়ন্ত্রণে থাকে। জেনে নিন সকালে বা বিকালে ডায়াবেটিস রোগী কী খাবেন-

১) সাদা পাউরুটি খাওয়ার অভ্যাস থাকলে বাদ দিতে হবে। এর বদলে ব্রাউন বা হোলগ্রেইন পাউরুটি খেতে পারেন। এতে ভালো কার্বোহাইড্রেট রয়েছে। কোনো পরিশোধিত চিনি এর সঙ্গে মেশানো থাকে না। এতে পর্যাপ্ত পরিমাণে ফাইবার রয়েছে, যা দীর্ঘক্ষণ পেট ভরিয়ে রাখবে। সেই সঙ্গে রক্তের সুগার লেভেলও কমিয়ে দেয়।

২) বিদেশি ফল হলেও অ্যাভোকাডো এখন ফলের দোকানগুলোতে পাওয়া যায়। এ ফল একটি করে হলেও প্রতিদিনের নাস্তায় রাখতে পারেন। এতে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টিগুণ রয়েছে।

৪) ফাইবারজাতীয় খাবারের মধ্যে ওটস বা ডালিয়া রাখতে পারেন। এগুলো সবজি দিয়ে খিচুরির মতো রান্না করে খেতে পারেন।

৫) অবশ্যই মিষ্টিজাতীয় ফল বা খাবার থেকে ডায়াবেটিস রোগীকে দূরে রাখতে হবে। চিনিমুক্ত খাবার খেয়ে ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারলেই ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করা সম্ভব।

যেসব খাবার থেকে ডায়াবেটিস রোগীরা দূরে থাকবেন-

৬)  চিনিযুক্ত চা, কফি, ফলের রস, ফলের স্মুদি, ময়দা দিয়ে তৈরি খাবার, কোমল পানীয়, চকলেট, জ্যাম-জেলি, ভাজা-পোড়া খাবার, কেক, প্যানকেকসহ যাবতীয় ক্ষতিকর খাবার থেকে দূরে থাকতে হবে।

আরও পড়ুনঃ জানুন 21টি চমৎকার অজানা তথ্য

ডায়াবেটিস রোগীর ব্যায়াম

গবেষণা অনুসারে, টাইপ 2 ডায়াবেটিস রোগীদের রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা কমাতে যোগব্যায়াম সহায়ক হতে পারে।  ডায়াবেটিস পরিচালনার জন্য এখানে যোগ গুরু গ্র্যান্ড মাস্টার অক্ষরের পাঁচটি আসন রয়েছে।

ডায়াবেটিস, একটি বিপাকীয় ব্যাধি, হৃদযন্ত্রের সমস্যা, স্ট্রোক, কিডনির সমস্যা, নিম্ন পা কেটে ফেলা, অন্ধত্ব ইত্যাদির মতো বিভিন্ন রোগের ঝুঁকি থেকে একজনকে প্রতিরোধ করার জন্য কার্যকরভাবে পরিচালনা করা প্রয়োজন। ওষুধ ছাড়াও, রোগীদের ওজন কমানোর পরামর্শ দেওয়া হয়,  তাদের ডায়েটে কম জিআই (গ্লাইসেমিক ইনডেক্স) খাবার অন্তর্ভুক্ত করে তাদের খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন করুন, রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে যোগব্যায়াম এবং অন্যান্য ব্যায়াম করুন।

যখন টাইপ 1 ডায়াবেটিস দেখা দেয় যখন অটোইমিউন প্রতিক্রিয়ার ফলে শরীর ইনসুলিন তৈরি করা বন্ধ করে দেয়, টাইপ 2 ডায়াবেটিসে যা মানুষের মধ্যে বেশি দেখা যায়, ইনসুলিন প্রতিরোধের বিকাশ ঘটে যার কারণে শর্করা রক্তে থেকে যায়, শরীরের দ্বারা ব্যবহারের পরিবর্তে এবং  অনেক স্বাস্থ্য সমস্যা বাড়ে।

টাইপ 2 ডায়াবেটিস রোগীদের রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা কমাতে যোগাসনের কার্যকারিতা বেশ কিছু গবেষণায় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

কিছু নির্দিষ্ট যোগাসন আছে যা অগ্ন্যাশয়কে সক্রিয় করতে সাহায্য করতে পারে, যে অঙ্গ ইনসুলিন উৎপন্ন করে।  যোগ গুরু গ্র্যান্ড মাস্টার অক্ষর ডায়াবেটিস পরিচালনার জন্য পাঁচটি আসনের পরামর্শ দিয়েছেন।

১) মার্জারিয়াসন

উর্ধ্ব মুখী মার্জারি আসন করার জন্য, আপনার হাঁটুতে আসুন, কাঁধের নীচে এবং নিতম্বের নীচে হাঁটু রাখুন এবং তারপরে শ্বাস নিন, আপনার মেরুদণ্ডকে বাঁকা করুন।  আধো মুখী মারজারি আসনের জন্য, শ্বাস ছাড়ুন, আপনার পিঠের চারপাশে বৃত্তাকার করুন এবং আপনার চিবুকটি বুকে নামিয়ে দিন।  আপনার নাভি অঞ্চলের দিকে আপনার দৃষ্টি নিবদ্ধ করুন।

২) পশ্চিমোত্তনাসন

বসে থাকা ফরোয়ার্ড বেন্ড হিসাবেও পরিচিত, আপনার হাঁটু কিছুটা বাঁকানো আছে তা নিশ্চিত করার সময় আপনার পা সামনের দিকে প্রসারিত করে আসনটি শুরু করুন।  আপনার বাহু উপরের দিকে তুলুন এবং আপনার মেরুদণ্ড খাড়া রাখুন।  শ্বাস ছাড়ুন এবং নিতম্বে সামনের দিকে বাঁকুন, আপনার উপরের শরীরটি আপনার নীচের শরীরের উপর রাখুন।  আপনার আঙ্গুল দিয়ে আপনার বুড়ো আঙ্গুল ধরে রাখার চেআপনি যদি কার্পাল টানেল সিন্ড্রোম এবং/অথবা ডায়রিয়ায় ভুগছেন তবে এই আসনটি করা উচিত নয়।  এছাড়াও গর্ভাবস্থার উন্নত পর্যায়ে এই আসনটি এড়িয়ে চলুন।  আপনার যদি উচ্চ রক্তচাপ বা মাথাব্যথা থাকে, ধীর গতিতে যান এবং বাহু, নিতম্ব, কাঁধ এবং পিঠে দীর্ঘস্থায়ী বা সাম্প্রতিক আঘাতের ক্ষেত্রে, এই আসনটি অবশ্যই এড়ানো উচিত।

আরও পড়ুনঃ বাড়িতে তুলসী গাছ লাগাতে এই 20টি জিনিস মাথায় রাখুন

৩) বালাসন

এটি শিশুর ভঙ্গি নামেও পরিচিত। এই আসনটি করতে, মাদুরের উপর হাঁটু গেড়ে বসুন এবং আপনার হিলের উপর বসুন। শ্বাস নিন এবং মাথার উপরে হাত বাড়ান, শ্বাস ছাড়ুন এবং আপনার উপরের শরীরকে সামনে বাঁকুন। আপনার কপালটি মেঝেতে রাখুন এবং আপনার শ্রোণীটি হিলের উপর রেখে দিন। নিশ্চিত করুন যে আপনার পিঠ কুঁকছে না।

৪) মান্ডুকা আসন

এই আসনের আরেকটি নাম হল ব্যাঙ পোজ। বজ্রাসন এ বসে এবং আপনার সামনে আপনার বাহু প্রসারিত করে এই আসনটি শুরু করুন।  আপনার হাতের তালুতে আপনার বুড়ো আঙ্গুল ভাঁজ করুন, বাকি চারটি আঙ্গুল এর উপর মুড়ে দিন এবং আপনার মুষ্টিতে বল দিন।  আপনার কনুইতে আপনার বাহু বাঁকুন, আপনার বলযুক্ত মুষ্টিগুলি আপনার নাভির উপরে রাখুন।  আপনার উপরের শরীর বাঁকুন এবং আপনার নীচের শরীরের উপর রাখুন।  আপনার ঘাড় প্রসারিত করুন এবং আপনার দৃষ্টিকে সামনের দিকে ফোকাস করুন।

গর্ভবতী মহিলাদের এই আসনটি অনুশীলন করা থেকে বিরত থাকতে হবে।  এছাড়াও যারা স্লিপ ডিস্ক, সায়াটিকা বা হাঁপানিতে ভুগছেন তাদের আলসার রোগীদের ছাড়া এটি করা এড়িয়ে চলা উচিত।

৫) আদোমুখী স্বনাসন

ডাউনওয়ার্ড ডগ নামেও পরিচিত, এই আসনটি চার দিকে শুরু করুন এবং নিশ্চিত করুন যে আপনার হাতের তালু কাঁধের নীচে এবং হাঁটুর নীচে রয়েছে।  নিতম্ব উপরে তুলুন, হাঁটু এবং কনুই সোজা করুন এবং আপনার শরীরকে একটি উল্টানো 'V' আকারে করুন।  এবার হাতের কাঁধের প্রস্থ আলাদা রাখুন।  আপনার চোখ আপনার বুড়ো আঙ্গুলের দিকে নিবদ্ধ রাখুন।

আরও পড়ুনঃ পেঁপের বীজের উপকারীতা

FAQ

ডায়াবেটিস রোগীরা কি আম খেতে পারবে?

পাকা আম ডায়াবেটিস রোগীর জন্য অনেক শরীর স্বাস্থ্য মূলক প্যারামিটার পার করতে পারে না। তাই ডায়াবেটিস রোগীর জন্য পাকা আম না খাওয়াই ভালো।

ডায়াবেটিস রোগীরা কি তরমুজ খেতে পারবে?

তরমুজ একটি মিষ্টি রসালো ফল, তাই এর মধ্যেও সুগারের পরিমাণ অনেক বেশি। তাই এই ফল ও ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য না খাওয়াই ভালো। তবে তরমুজের ক্ষেত্রে একটু ছাড় পাওয়া যায়। মাঝেমধ্যে অল্প পরিমাণে খাওয়া যেতে পারে।

ডায়াবেটিস হলে কি কি সবজি খাওয়া যাবে?

সবুজ শাকসবজি যতটা বেশি পরিমাণে খাওয়া যায় ততটাই ভালো। মাটির নিচের সবজি এড়িয়ে চলাই ভালো। 

ডায়াবেটিস রোগী কি মিষ্টি দই খেতে পারবে?

দই বাঙ্গালীদের জন্য একটি খুবই সুস্বাদু খাবার। এবং ডায়াবেটিস রোগীরাও এটি খেতে পারেন। কিন্তু খাবার সময় একটু নজর রাখতে হবে যাতে দুই বেশি মিষ্টি না হয়। আবার অনেকে দইয়ের সঙ্গে নুন লঙ্কা মিশিয়ে খেতে পছন্দ করেন, সে ক্ষেত্রে সাদা লবণের বদলে অল্প পরিমাণ বিট লবণ মিশিয়ে খাওয়া যেতে পারে।

ডায়াবেটিস কত হলে ইনসুলিন নিতে হয়?

ডায়াবেটিস এরকম একটি রোগ যেটিকে নিরাময় করা সম্ভব নয়। সাধারণত দৈনন্দিন খাওয়া-দাওয়া এবং স্বাস্থ্যসম্মত নিয়ম কানুন মেনে চললে এটিকে আয়াতে রাখা সম্ভব হয়। যেখানে ইনসুলিন এর প্রশ্ন, সে ক্ষেত্রে এটাই ভালো হবে আপনারা আপনাদের চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে নিতে পারেন। সাধারণভাবে একটি মাত্রা হল 200 mg/dL। 

ডায়াবেটিস কত হলে মানুষ মারা যায়?

এক্ষেত্রে সেরকম কোনো তথ্য দেওয়া সম্ভব নয়। ডায়াবেটিসের প্রথম ধাপেই আপনাকে বুঝে যতটা সম্ভব খাওয়া-দাওয়া এবং একটি স্বাস্থ্যসম্মত জীবন-যাপন পালন করতে হবে। 

কোন কোন ফলে সুগার আছে?

বিভিন্ন মিষ্টি জাতীয় ফল যেমন, পাকা আম, তরমুজ, সপেদা, কলা। সাধারণত সকলেই সুগারের পরিমাণ কমবেশি রয়েছে, কিন্তু তা বলে কি আপনি কোন ফল খাবেন না, সেরকমটি মোটেও নয়। কিছু কিছু ফল খাওয়া যেতে পারে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী। কিন্তু সেই সমস্ত ফলের জুস একদম এড়িয়ে চলা উচিত। 

ডায়াবেটিসে কলা খাওয়া যাবে কি?

পাকা কলা এড়িয়ে যতটা সম্ভব কাঁচা কলা খাওয়া উচিত। কাঁচা কলা তো আর এমনি খালি মুখে খাওয়া সম্ভব নয়, তুই বিভিন্ন রেসিপি বিভিন্ন তরিতরকারির মাধ্যমে খাওয়া ভালো।

ডায়াবেটিস হলে খেজুর খাওয়া যাবে কি?

হ্যাঁ, খাওয়া যেতে পারে। সবচেয়ে ভালো হয় আগের দিনে রাতে কিছুটা জলে খেজুর ভিজিয়ে রেখে খেলে।

 সুগার হলে কি কি ফল খাওয়া যাবে না?

সব ধরনের মিষ্টি ফল খাওয়া বারণ যেমন, পাকা কলা, পাকা আম, তরমুজ, সপেদা ইত্যাদি।

ডায়াবেটিসে মধু খাওয়া যাবে কি?

ডায়াবেটিস রোগীর ক্ষেত্রে মধু না খাওয়াই ভালো।

ডায়াবেটিস রোগীরা কি ডিম খেতে পারবে?

খেতে পারবেন, ডায়াবেটিস রোগীর ক্ষেত্রে ডিম খাওয়া যেতে পারে তবে সুগারের মাত্রার উপরে একটু নজর রাখতে হবে।

ডায়াবেটিস রোগী কি কিসমিস খেতে পারবে?

কিসমিস না খাওয়াই ভালো।

ডায়াবেটিস রোগী কি আপেল খেতে পারবে?

ডায়াবেটিস রোগীর ক্ষেত্রে দৈনন্দিন জীবনে আপেল না রেখে যথাসম্ভব পেয়ারাকে রাখাই ভালো।

গ্লুকোজের মাত্রা মাত্রা মাপার একক কী?

সাধারণত ব্লাড সুগার লেভেল দুটি একক দিয়ে মাপা হয়ে থাকে-

মিলিমোল/লিটার

মিলিগ্রাম/ডেসিলিটার

ডায়াবেটিসে কোন কোন স্বাস্থ্য সমস্যা হয়?

ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীর নিম্নলিখিত স্বাস্থ্য সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে-

  • হৃদরোগ
  • কিডনির রোগ
  • চোখের সমস্যা
  • দাঁতের রোগ
  • নার্ভ ক্ষতি
  • পায়ের সমস্যা

ডায়াবেটিসের লক্ষণ

ডায়াবেটিস রোগের সাধারন কিছু লক্ষণ রয়েছে। আমেরিকান ডায়াবেটিস এসোসিয়েশনের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, কিছু বিষয় খেয়াল রাখলেই সহজেই চিহ্নিত করা যায় ডায়াবেটিস। আর যত আগে ডায়াবেটিস চিহ্নিত করা যাবে, তখনই নিতে হবে নিয়ন্ত্রণমূলক পদক্ষেপ। ডায়াবেটিসের লক্ষণ গুলি হল-ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া, তেষ্টা পাওয়া, নিয়মিত খাওয়ার পরও ঘন ঘন খিদে পাওয়া, প্রচন্ড পরিশ্রান্ত অনুভব করা, চোখে ঝাপসা দেখা, শরীরের বিভিন্ন অংশের কাটাছেঁড়া সহজে সারেনা, হাতে পায়ে ব্যথা বা মাঝে মাঝে অবশ হয়ে যাওয়া, এবং খাওয়া সত্ত্বেও ওজন কমে যাওয়া।

JOIN OUR TELEGRAM CHANNEL

আরও পড়ুনঃ 

জানেন কী, অশোকচক্রের 24 টি স্পোক কী প্রতিনিধিত্ব করে?

ঘরে অশান্তি দূর করার উপায়, ফেংশুই বাস্তু টিপস

মাত্র 10 টাকায় বাড়িতেই তৈরি করুন মশা নিরোধক রিফিল

জানেন কী, ভারতীয় নোটে কীভাবে মহাত্মা গান্ধীর ছবি এলো?

আত্মবিশ্বাস অর্জনের উপায়

Post a Comment

0 Comments