শরীর ও মন সুস্থ রাখার উপায় | শরীরের দুর্বলতা কাটানোর উপায়


শরীর ও মন সুস্থ রাখার উপায় 

আমাদের জীবনে একটি গুরুত্বপূর্ণ জিনিস হল শরীর ও মন। শরীর ও মন একে অপরের পরিপূরক। শরীর ও মন উভয়ই ভালো থাকেল আমরা আমাদের জীবনে খুব সহজেই সফলতার দিকে এগিয়ে যেতে পারবো। একটি সুন্দর মন একটি সুসাস্থ শরীরের পক্ষে খুবই প্রয়োজনীয়। আমরা জানি মন ভালো থাকলে শরীর ও ভালো থাকে। কিন্তু এখনও মানুষের মনে শরীর ও মন ভালো রাখা নিয়ে অনেক অনেক প্রশ্ন রয়েছে।

তাই আজকের এই পোস্টে আমরা আপনাদের সেই সমস্ত প্রশ্নের উত্তর দেয়ার চেষ্টা করলাম। জেনে নিবো শরীর কি বা কাকে বলে, শরীর ও মন ভালো রাখার উপায়, শরীরের দুর্বলতা কাটানোর উপায়, শরীর কাঁপে কেন, শরীর অতিরিক্ত ঘামার কারণ, শরীর সতেজ রাখার উপায়, শরীর ব্যাথা হলে করণীয় প্রভৃতি। 

শরীর অর্থ কি

একদম প্রথমেই জেনে নিবো যে শরীর কি বা কাকে বলে?

শরীর বলতে জীবিত প্রাণীকূল বিশেষত কোন ব্যক্তির শারীরিক কাঠামোকে বোঝায়। প্রায়শঃই এটি সক্ষমতা, বাহ্যিক আত্মপ্রকাশ, স্বাস্থ্য সংক্রান্ত এবং মৃত্যুর সাথে পারস্পরিক সম্পর্কযুক্ত। শরীর নিয়ে গবেষণাকর্ম শারীরবিদ্যা বা শারীরবৃত্ত নামে পরিচিত। প্রাণীদেহের একাংশ কিংবা সম্পূর্ণ অংশকেই শরীর হিসেবে চিহ্নিত করা হয়ে থাকে। এমন অনেক প্রাণী রয়েছে যেগুলো এককোষী থেকেই সম্পূর্ণ প্রাণীদেহের মর্যাদা উপভোগ করে। স্লাইম মোল্ড তেমনিই একটি এককোষী প্রাণী যা বৃষ্টিস্নাত বনাঞ্চলের স্যাঁতস্যাতে মেঝেতে বিশ্বের বিভিন্ন এলাকায় বাস করে। সে দৃষ্টিকোণে শরীর বলতে বহুকোষবিশিষ্ট প্রাণীর দেহকে বুঝায়।

মৃত ব্যক্তির শরীরকে শবদেহ বা ক্যাড্যাভার বলে। মেরুদণ্ডবিশিষ্ট প্রাণী এবং পোকামাকড়ের মৃতদেহকে কখনো কখনো গলিত পচামাংসবিশিষ্ট শরীর বা কারকেসেস নামে অভিহিত করা হয়। কর্তন বা জবাইকৃত প্রাণীর মৃত শরীরের উচ্ছিষ্ট অংশ ফেলে যা ব্যবহার করা হয় তা মাংস নামে পরিচিত। শরীর দুই প্রকার। কুৎসিত শরীর ও সুন্দর শরীর নারীদের মধ্যে শরীর দেখানোর প্রবণতা আছে।যেমন একটি নারী হাজার পুরুষের সামনেও নগ্ন থেকে তার সৌন্দর্য ফুটিয়ে তুলতে পারবেন। কিন্তু একজন পুরুষ সেক্ষেত্রে ভয় পাবেন।কারণ পুরুষের দেহ তুলনামূলক ভাবে কুৎসিত।

আরও পড়ুনঃ মাত্র এই তিনটি নিয়ম মেনেই কমিয়ে ফেলুন ওজন

শরীর গঠনে প্রয়োজনীয় খাদ্য



আমাদের শরীর গঠনের জন্য যে খাদ্য বিশেষভাবে প্রয়োজন তাকে সাধারণত ৯ ভাগে ভাগ করা যায়। সেগুলি হল-

  • প্রোটিন জাতীয় খাদ্য
  • চর্বি বা স্নেহ জাতীয় খাদ্য
  • কার্বোহাইড্রেট বা শর্করা জাতীয় খাদ্য
  • খনিজ লবণ
  • লৌহ
  • ক্যালসিয়াম
  • ফসফরাস
  • আয়োডিন
  • ভিটামিন।

১) প্রোটিন

প্রোটিন আহার হল এমন এক ধরনের পদার্থ যার মধ্যে নাইট্রোজেন পদার্থ যুক্ত থাকে যা শরীরের বল ও বৃদ্ধি ঘটাতে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। আর শিশুদের ক্ষেত্রে এই প্রোটিনের প্রয়োজন সবচেয়ে বেশি। বিশেষ করে বাড়ন্ত বাচ্চাদের।

মনে রাখবেন প্রতিদিন ঘাম, মল, মূত্র প্রভৃতি থেকে আমাদের শরীরের কিছু না কিছু প্রোটিন বেরিয়ে যাচ্ছে, তাই তার স্থান পূরণের জন্য আমাদের বাড়ন্ত শিশুদের এমন খাদ্য খাওয়ানো উচিত যাতে ওই অভাব পূরণ হয়।

এই প্রোটিন আমরা আমিষ ও নিরামিষ দুভাবেই পেতে পারি। ভাত, রুটি, দুধ, দই, সব রকমের ডাল, বাদাম, সোয়াবিন, আখরোট, যেকোনো ফল থেকে নিরামিষভোজীরা প্রোটিন পেতে পারেন। আর আমিষভোজীরা প্রোটিন পেতে পারেন মাছ, মাংস ও ডিম থেকে।

২) চর্বি ও স্নেহ জাতীয় খাদ্য

আমাদের শরীর গঠনের জন্য চর্বি ও স্নেহ জাতীয় পদার্থ অতি প্রয়োজনীয়। এই জাতীয় পদার্থ আমাদের শরীরের শক্তি ও উষ্ণতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। যারা শীতপ্রধান দেশে বসবাস করেন শীতের প্রকোপ থেকে রক্ষা পেতে তাদের স্নেহ জাতীয় পদার্থ বেশি করে আহার করা উচিত। চর্বি ও স্নেহ জাতীয় পদার্থ শরীরের প্রোটিন খাদ্য হজম করতে সাহায্য করে, শারীরিক শক্তি রক্তকে বিশুদ্ধ রাখতেও এটি সহায়ক তবে এর একটি মাত্রা রাখতে হবে। কারণ অতিরিক্ত চর্বি জাতীয় পদার্থ খেলে দেহে চর্বি জমতে পারে, হাইব্লাডপ্রেসার, হৃদরোগ প্রভৃতিতে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনাও থাকে।

আরও পড়ুনঃ ঠান্ডায় আপনার ঠোঁটকে সুন্দর ও সতেজ রাখতে মেনে চলুন এই ৬ টি টিপস

৩) কার্বোহাইড্রেট বা শর্করা জাতীয় খাদ্য

আমরা প্রতিদিন যে খাদ্য টি সবচেয়ে বেশি পরিমাণে গ্রহণ করি তা হল কার্বোহাইড্রেট বা শর্করা জাতীয় খাদ্য। এতে শরীরের শক্তি ও উষ্ণতা বৃদ্ধি পায়।

কিসে কার্বোহাইড্রেট পাওয়া যায়

সবচেয়ে বিশুদ্ধরূপে বেশি শর্করা বা কার্বোহাইড্রেট পাওয়া যায় মধু ও চিনির মধ্যে। তাছাড়া গমের আটা, চাল, ডাল, ভুট্টা, বজরা, বিট, গাজর প্রভৃতির মধ্যেও কার্বোহাইড্রেট পাওয়া যায়।

এই কার্বোহাইড্রেট মুখের লালার লিকাইন পদার্থের সংস্পর্শে এসে শর্করায় রূপান্তরিত হয়। পাকস্থলীতে যায় এবং সেখানে তা গ্লুকোজে জমা হয় এবং পরে সেখান থেকে তা রক্তে পরিণত হয়।

৪) খনিজ লবণ

শরীর রক্ষার জন্য ক্যালসিয়াম, সোডিয়াম, আয়রন, ফসফরাস, ম্যাগনেসিয়াম, পটাশিয়াম বিশেষভাবে প্রয়োজন। এদের ঘাটতি পূরণের জন্য বেশি মাত্রায় বীট, গাজর, ভুট্টা, পালং শাক, আঙুর, আপেল ও লেবু প্রভৃতি খাওয়া প্রয়োজন। কারণ উপরোক্ত উপাদানগুলি এই সমস্ত ফল-সব্জির মধ্যে বিদ্যমান।



৫) লৌহ

মানুষের শরীরে রক্তের মধ্যে যে লাল কণিকা তৈরি হয় তার জন্য লৌহের প্রয়োজন। লৌহ দেহের মধ্যে হিমোগ্লোবিন রূপে উপস্থিত থেকে ওই প্রয়োজন মেটায়। হিমোগ্লোবিনের অভাবে শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে। আয়রনের অভাব ঘটলেই শরীরে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ কমে যায়। যার ফলে শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে। ফুসফুসের দ্বারা অক্সিজেন গ্রহণের কাজ ঠিকমতো হয়না, বিশুদ্ধ বায়ুর অভাবে রক্তও দূষিত হয়ে পড়ে। আর রক্ত দূষিত হলেই নানারূপ রোগে আক্রান্ত হতে হয়। রক্তে যদি হিমোগ্লোবিনের মাত্রা কমে যায় তবে অজীর্ণ, অক্ষুধা, মাথাঘোরা, শ্বাসকষ্ট, দুর্বলতা প্রভৃতি রোগ দেখা দেয়। চোখের চারপাশে কালি পড়ে, চোখে হলুদভাব দেখা দেয়। 

হিমোগ্লোবিনের এই অভাব পূরণের জন্য প্রতিদিন যে খাদ্য গ্রহণ করা উচিত তা হল- টমেটো, গাজর, মটর, পালং, আম, কলা, আখরোট, বাদাম, কাজু, খেজুর, গুড়, ডিম, মাছ, মাংসের মেটে এবং বিভিন্ন প্রকারের ফল।

৬) ক্যালসিয়াম

শরীরের হাড় ও দাঁত মজবুত রাখতে প্রয়োজন হয় ক্যালসিয়ামের। ক্যালসিয়ামের অভাবে স্নায়তন্ত্র দুর্বল হয়ে পড়ে, যার ফলে স্মরণশক্তি হ্রাস পায়।

শিশুদের যদি ক্যালসিয়ামের অভাব হয় তবে তাদের দেহের হাড় মজবুত হয় না, শরীর বাড়ে না। গর্ভবতী নারীদের দেহে যদি ক্যালসিয়ামের অভাব ঘটে তবে তাদের সন্তান ও দুর্বল হয়।

মাছ, ডিম, দুধ, মাংস, সবুজ সব্জি ও ফলের মধ্যে ক্যালসিয়াম আছে। তাই এগুলো অবশ্যই কম বেশি খাওয়া উচিত।

৭) ফসফরাস

ক্যালসিয়ামের মতো ফসফরাসও শরীরের বৃদ্ধি ও হাড়ের মজবুতীতে সাহায্য করে। শাকসব্জি, দুধ, ডিম ও সামুদ্রিক মাছে ফসফরাস পাওয়া যায়।

৮) আয়োডিন

আয়োডিন হল থাইরয়েড গ্রন্থির নিয়ন্ত্রক। তাই যদি শরীরে আয়োডিনের অভাব হয় তবে গলগন্ড রোগ হতে পারে। গলগন্ড রোগ হলে চোখ বড় বড় হয়ে যায়, শরীরের নানারূপ পরিবর্তন ঘটে।

৯) ভিটামিন

এতক্ষণ যেসব খাদ্যগুণের কথা বলা হল তারমধ্যে শরীর গঠনে ভিটামিন অন্যতম। ভিটামিন বিভিন্ন প্রকার হয়ে থাকে, যেমন- ভিটামিন এ, বি, সি, ডি, ই ও কে। এখন দেখা যাক এই ভিটামিন গুলি কোনটি কোন খাদ্যে আছে আর এদের অভাবে আমাদের কি কি রোগ হতে পারে।

ভিটামিন 'এ'

এই জাতীয় ভিটামিনের অভাবে রাতকানা রোগ, চোখ ও কানের রোগ, সর্দি-কাশি, নিউমোনিয়া, ইনফ্লুয়েঞ্জা, মূত্র পাথরি প্রভৃতি রোগ হয়। শ্লেষ্মিক ঝিল্লিয় ক্ষয় ও তার ক্রিয়াহীনতার জন্য রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা কমে যায়।

কোন খাদ্য খেলে ভিটামিন 'এ' এর অভাব পুরন হয়:

পালং শাক, টমেটো, রাঙা আলু, গাজর, মটরশুটি, বাঁধাকপি, পেঁপে, লাউ, পাকা আম, দুধ, মাখন, ডিম, মাছের তেল, পাঁঠার মেটে, খাসির চর্বি প্রভৃতিতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ থাকে, এবং এগুলি খেলে ভিটামিন 'এ'র অভাব পুরন হয়।

ভিটামিন 'বি'

ভিটামিন বি এর অভাবে অজীর্ণ, অক্ষুধা, কোষ্ঠকাঠিন্য, বেরিবেরি, মুখে ঘা, জিভে ঘা, স্তনে দুধের অভাব, এবং শিশুদের ওজন হ্রাস। 

কোন খাদ্য খেলে ভিটামিন 'বি' এর অভাব পূরণ হয়:

সবুজ শাক, ছোলা, ডাল, কড়াইশুঁটি, সোয়াবিন, চীনাবাদাম, সিম, যবের ছাতু, মাছের ডিম, ডিমের কুসুম, আলু, পেঁয়াজ, টমেটো, বাঁধাকপি, কমলালেবু, নারকেল, মাংস, ছানা, দুধ প্রভৃতি।

ভিটামিন 'সি'

এই ভিটামিনের অভাবে কার্ভি রোগ হয়, রোগপ্রতিরোধের ক্ষমতা কমে যায়। দাঁত ও হাড়ের পুষ্টি হয় না। শিশুর ওজন কমে যায়, তাদের শরীর শীর্ণ হয়, তারা খুব খিটখিটে হয়ে পড়ে।

কোন খাদ্য খেলে ভিটামিন 'সি' এর অভাব পূরণ হয়:

অঙ্কুরিত ছোলা, পালং শাক, ‌ বাঁধাকপি, রাঙা আলু, কড়াইশুঁটি, পেঁয়াজ, সব রকম আপেল, টমেটো, তরমুজ, আখ, কলা, দুধ, দই, ঘোল প্রভৃতি।

ভিটামিন 'ডি'

ভিটামিন ডি এর অভাবে রিকেট, দাঁতে পোকা, অস্তি কোমলতা প্রভৃতি রোগ হয়।

কোন খাদ্য খেলে ভিটামিন 'ডি' এর অভাব পূরণ হয়:

কড লিভার অয়েল, মাছের ডিম, পাঁঠার মেটে, ডিমের কুসুম, দুধ, মাখন, বড়ি, আচার খেলে এবং গায়ে সূর্যরশ্মি নিলে ভিটামিন 'ডি' এর অভাব পূরণ হয়।

ভিটামিন 'ই'

ভিটামিন ই এর অভাবে পুরুষের নপুংশতা এবং স্ত্রীদের গর্ভপাত হয়ে থাকে। 

কোন খাদ্য খেলে ভিটামিন 'ই' এর অভাব পূরণ হয়:

বাদাম, সোয়াবিন, টাটকা সব্জি, চর্বির তেল, নারকেল, কলা, দুধ, মাংস, ডিম প্রভৃতি খেলে ভিটামিন ই এর অভাব পূরণ হয়।

ভিটামিন 'কে' 

ভিটামিন 'কে' এর অভাবে রক্ত জমাট বাঁধে না যার ফলে শরীরে কোন জায়গায় কেটে বা ছিলে গেলে রক্ত পড়তেই থাকে।

যকৃতের তেলে এই ভিটামিন প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায়।

শরীর দুর্বল হলে করণীয়



অতিরিক্ত লবণ দেহের শত্রু

নুন ভাত কথাটা বেশ ভালো শোনায়, গরীবরা নুন ভাতেই তৃপ্ত হয়। কিন্তু তারা কি এটা জানে যে, বেশি নুন ব্যবহারে শরীরের টিস্যু গুলির মারাত্মক ক্ষতি হয়। কোষ্ঠবদ্ধতা, নিউমোনিয়া, প্লুরুসি, হূদরোগ, মূত্রান্ত্রের প্রদাহ এসবের মূলে নুন। পাতে কাঁচা নুন বিষব্য পরিত্যাজ্য। ব্লাড প্রেশারের রোগীদের তো নুন খাওয়াই অনুচিত।

আরও পড়ুনঃ ৭ টি ভিটামিন সি সমৃদ্ধ জুস

চিনির গুণ পাওয়া যায় না

চিনি আমাদের আরেক শত্রু। যেসব বয়স্ক ব্যক্তি বেশি চিনি খান তাদের ডায়াবেটিস, হূদরোগ, স্থূলতা বৃদ্ধি প্রভৃতি রোগের শিকার হতে হয়।

পেঁয়াজ রসুন কি কাঁচা খান?

পেঁয়াজ ও রসুন কিন্তু আমিষ খাদ্য নয়। যদিও হিন্দুধর্মের কিছু সম্প্রদায় একে বর্জন করার কথা বলেছেন। কিন্তু চিকিৎসা বিজ্ঞানে এর গুরুত্বকে মর্যাদা দেওয়া হয়েছে। কাঁচা পেঁয়াজ বায়ুনাশক, শক্তিদায়ক, শুক্রবর্ধক। তবে শ্লেষ্মা ও পিত্তবর্ধক এবং গুরুপাক ও বটে। রসুনে হৃদরোগ, বাতরোগ, ক্ষয়রোগ ভালো হয়। পেঁয়াজ ও রসুন একসঙ্গে খাওয়াই হানিকারক। কাঁচা খেতে হবে এবং আলাদা আলাদা ভাবে খেতে হবে। পেঁয়াজ গরমের লু থেকে রক্ষা করে, কফ্, কাশি, ক্রিমি, আর্শ, ধাতু দৌর্বল্য দূর করে।

অম্লফল আবশ্যকীয় ফল

অম্ল শরীরের পক্ষে প্রয়োজন তবে সব অম্লই উপকারী নয়। সাইট্রিক, ম্যালিক এবং টারটারিক অম্লই স্বাস্থ্যের পক্ষে আবশ্যক। এই অম্ল আছে সব রকম লেবুজাতীয় ফলে, আঙুর, ন্যাসপাতি, আপেল, ও টমেটোতে। এগুলো খেলে অর্শ, আমাশা, ঘা, পাঁচড়া, সর্দিকাশি, ব্রঙ্কাইটিস ও ইনফ্লুয়েঞ্জা সারে। ম্যালেরিয়া ও ক্রিমিতেও উপকার পাওয়া যায়।

কোন খাদ্য ক্যান্সার প্রতিরোধক

দীর্ঘকাল ধরে ১৮ টি জনগোষ্ঠীর উপর ২০০ বার ‌ পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে গবেষকরা দেখেছেন যে, যেসব মানুষ বেশি পরিমাণে ফল ও শাকসবজি আহার করেন তাদের ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা কম।

ক্যান্সারের বিষ শোষক বিটা ক্যারোটিন রয়েছে গাজর, পালং শাক, মিষ্টি আলু প্রভৃতিতে। এগুলি খেলে ক্যান্সার হবে না, তবে খেতে হবে কাঁচায়।

টমেটোতে আছে লাইকোপেন যা ক্যান্সার রোগের প্রতিষোধক। পেঁয়াজ-রসুন, লেবু জাতীয় ফল, আঙুর, আপেল খেলে ক্যান্সার হবে না। সয়াবিনে আছে পাঁচটি রাসায়নিক উপাদান, যা ক্যান্সার প্রতিরোধ করে। শুঁটি বরবটিতেও ক্যান্সার প্রতিরোধের ক্ষমতা রয়েছে। গমের ভুষি, সয়াবিন দুধ খেলেও ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না।

'US National Cancer Institute' থেকে ক্যান্সার প্রতিরোধে যে খাবারের তালিকা দিয়েছে তা হল- প্রতিটি প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির খাদ্যে ১১০ গ্রাম রান্না করার শাকসব্জি ও কাঁচা ফল এবং ২২০ গ্রাম কাঁচা শাকপাতা, ফল বা ১৫০ গ্রাম ফলের রস খেতে হবে। তাহলে ক্যান্সার হবে না। ক্যান্সার হলে তার প্রতিরোধ কল্পে যে খাদ্য পথ্যরূপে গ্রহণীয় তা হল- ফল, শাকসব্জি, খোসা সহ গোটা শসা, বাদাম, সিম, খুব কম চর্বিযুক্ত ও ক্যালরীয় খাবার এবং ছিবড়ে যুক্ত খাবার।

আলু কি স্বাস্থ্যের জন্য হানিকারক?

আলুর খোসা খেলে যেমন উপকার পাওয়া যায় খোসা ছাড়িয়ে খেলে তেমনি অপকার।

পাকা বেল খাবেন না?

পাকা বেল খেলে কোষ্ঠ পরিষ্কার হয়। কিন্তু বেশিদিন খেলে বা তাতে অভ্যস্ত হয়ে গেলে অন্ত্রে ছোট ছোট ছিদ্র হয়। আর তা হজম হয় না বলে গ্যাস হয়। কিন্তু কাঁচা বেল ও বেল শুঁট খেলে বিশেষ উপকার পাওয়া যায়।



বাঁধাকপি কাঁচা খাওয়া ভালো

বাঁধাকপিতে প্রচুর পরিমাণে লৌহ আছে যা রক্তশূন্যতায় কার্যকরী হয়। কিন্তু রান্না করে খেলে তার সেই গুনাগুন থাকে না।

কলাপাতার রস স্বাস্থ্যপ্রদ

কলাপাতার রসে ব্রঙ্কাইটিস, নেফ্রাইটিস, রক্তক্ষরণ রোগ সারে।

টমেটো এক স্বাস্থ্যপ্রদ খাদ্য

টমেটো একটি সুখাদ্য ও স্বাস্থ্যপ্রদ কিন্তু রান্না করা নয়, চাটনি নয়। কাঁচা খেতে হবে। তাহলে তা থেকে শরীরের প্রয়োজনীয় ভিটামিন- এ, বি, সি পাওয়া যাবে।

তিলের তুলনা নেই

তিলে প্রোটিন, চর্বি, শ্বেতসার, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস ও লৌহ আছে। অতএব তা আমাদের অপরিহার্য খাদ্য।

শরীরের দুর্বলতা কাটানোর উপায়

বর্তমান এ সময়টায় শরীরের যত্ন নেওয়ার বিষয়ে বেশি গুরুত্ব দিতে বলছেন চিকিৎসকরা। উপদেশ দিচ্ছেন বেশি করে পুষ্টিকর খাবার খাওয়ার।

এ বিষয়ে ভারতের অনলাইনভিত্তিক পুষ্টিবিষয়ক প্রতিষ্ঠান ‘নিউট্রিফোরভার্ভ’র প্রধান পুষ্টিবিদ শিবানী শিক্রি বলেন, ‘সম্পূরক খাবারের মতোই বেশ কিছু খাবার স্বাস্থ্যের পক্ষে ভালো যা অবসাদ কাটাতে সাহায্য করে। তাই বাজারের তালিকায় এ সকল উপাদান রাখা যেতে পারে’।

শরীরের দুর্বলতা কাটাতে গুরুত্বপূর্ণ কিছু উপাদানের কথা বলেন তিনি। সেগুলো হচ্ছে—

১. ভিটামিন-সি

শরীরের দুর্বলতা কাটাতে ভিটামিন-সি অনেক গুরুত্বপূর্ণ। ভিটামিন-সির অভাব পূরণে বেশি করে টকজাতীয় ফল যেমন— লেবু, কমলা, আঙুর খেতে হবে। এ ছাড়া কিউই, পালংশাক, লেটুসপাতা ও মরিচ বেশি খেতে পারেন। এগুলোও ভিটামিন-সি সমৃদ্ধ খাবার।

২. প্রোটিন

প্রোটিন যুক্ত খাবার শরীরের দুর্বলতা কাটাতে অনেক কার্যকর। ডিম হচ্ছে— প্রোটিইনের একটি ভালো উৎস। এটি খেলে তা দেহের কোষ সুস্থ রাখতে সাহায্য করে এবং এতে লুটেইন ও জিক্সানথিন (ক্যারোটিনয়েড) থাকায় তা দৃষ্টিশক্তি বাড়াতে ও বয়সের ছাপ দূর করতে সহায়তা করে। এ ছাড়া ডাল ও মটরজাতীয় খাবারেও প্রোটিন থাকে।

৩. আয়রন

দেহে আয়রন বা লৌহের পরিমাণ বজায় রাখতে সবুজ শাকসবজি, মটর, ডাল, টফু, শুকনো ফল ও ডার্ক চকলেট খেতে পারেন। এগুলো আয়রনের ভালো উৎস।

৪. সেলেনিয়াম

সেলেনিয়াম সমৃদ্ধ খাবারে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকার কারণে এগুলো ক্লান্তিভাব, নিদ্রাহীনতা ও দুর্বলতা কমাতে সহায়তা করে। এ ধরনের খাবারগুলো দীর্ঘমেয়াদি হৃদরোগ থেকে সুস্থ রাখতেও সহায়ক হিসেবে কাজ করে। সেলেনিয়াম যুক্ত করতে মটর, বাদাম ও ডিম খেতে পারেন।

৫. প্রোবায়োটিক্স প্রাকৃতিকভাবেই শরীরকে সুরক্ষিত রাখতে

প্রোবায়োটিক্স সমৃদ্ধ খাবার খেতে পারেন। এর জন্য দই খেতে পারেন। এতে ল্যাক্টিক অ্যাসিড ও প্রোবায়োটিক সমৃদ্ধ ব্যাক্টেরিয়া থাকে। এ ছাড়া নরম পনির, শুকনো ইস্ট, পাতাবহুল সবজি, ছানা এবং সবুজ সবজিতে প্রোবায়োটিক থাকে।

এ ছাড়া তিনি একটি প্রতিবেদনে বেশ কিছু খাবারের তালিকা প্রকাশ করেন, যেগুলো খেলে কাটবে শরীরের দুর্বলতা। জানুন কী কী খেলে কাটবে শরীরের দুর্বলতা—

১. মধু

মধু শরীর ও মনের দুর্বলতা কাটাতে ও চাপ কমাতে সহায়তা করে। এটি খুব ভালো প্রভাবক হিসেবে কাজ করে। এতে থাকে ক্যালসিয়াম, লৌহ, সিলিকন, ফসফরাস ও ভিটামিন। বিশেষ করে এটি ভিটামিন-বির খুব ভালো উৎস হিসেবে কাজ করে।

২. আদা

এতে অনেক ভিটামিন ও খনিজ উপাদান থাকে। সকালে পানির সঙ্গে আদার রস ও লেবুর রস মিশিয়ে পান করলে অনেক উপকার পাওয়া যায়।

৩. চকলেট

কোকোয়া পলিফেনল সমৃদ্ধ খাবার ব্যাক্টেরিয়া রোধ করে। এতে ভিটামিন-এ, বি-৬ এবং ভিটামিন-সি থাকায় এগুলো সংক্রমণ দূর করতে কার্যকরী। এ ছাড়া এতে ভিটামিন-ডি, ম্যাগনেসিয়াম, জিংক, কপার ও সেলেনিয়াম থাকে।

এটি খাবার বিষয়ে শিক্রি বলেন, ‘এর ভালো ফল পেতে কম পক্ষে ৭০ শতাংশ কোকোয়া সমৃদ্ধ চকলেট নির্বাচন করুন। এটি সঠিক পুষ্টি উপাদান সমৃদ্ধ। প্রতিদিন দুয়েক টুকরা ডার্ক চকলেট খাওয়া উপকারী’।

আরও পড়ুনঃ ১ সপ্তাহে পেট কমানোর উপায় 

৪. কলা

কলা হচ্ছে ডোপামিন ও সেরোটোনিন সমৃদ্ধ ফল। এটি স্নায়ুর কার্যকারিতা বাড়াতে ও চাপ কমাতে কার্যকরী।

৫. চিয়া বীজ

শরীরের শক্তি জোগাতে চিয়া বীজ অনেক উপকারী। এতে ভিটামিন, খনিজ, প্রোটিন, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও আঁশ খাকে। এটি ভেজার পর আকারে প্রায় ১০ গুণ বড় হতে পারে। তাই এটি খেলে তা অনেকক্ষণ পেট ভরা রাখতে সহায়তা করে।

শরীর সতেজ রাখার উপায় 



আমাদের মন এবং শরীর একে অপরের পরিপূরক, একটি সুস্থ না থাকলে অপরটিও অসুস্থতার লক্ষণ। তবে ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া কখনোই ঔষধ গ্রহন করবেন না। কিন্তু আপনি নিজে থেকেও এই সমস্যার মোকাবিলা করতে পারেন। নিজেকে সুস্থ রাখতে হলে দুই দিকে খেয়াল রাখতে হবে সেই জন্য এমন কিছু খাবার খাবেন যা শরীরের পক্ষে ভাল এবং কিছু ব্যায়াম করতে হবে যা স্বাস্থ্যের পক্ষে উপকার। চলুন জেনে নেওয়া যাক –

১) শরীরের মধ্যে মস্তিষ্ক সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটা অংশ তাই এটিকে উন্নত রাখতে এবং স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করতে টমেটো, গ্রিন টি এবং সামুদ্রিক মাছ ইত্যাদি খাওয়া উচিত

২) আমরা প্রায়ই পেটের কোন না কোন সমস্যায় ভুগতে থাকি। তবে এটা ভুলে গেলে চলবে না শুধুমাত্র ভালো খাবার খেলেই পেট ভালো থাকবে এটি সম্পূর্ণ ভুল ধারণা। এর জন্য আপনাকে নিয়মিত শরীরচর্চা করতে হবে। দিনে দুই বেলা হাঁটাচলা করুন এবং সুষম খাদ্য গ্রহণ করুন।

৩) বিবাহিতদের ক্ষেত্রে সুখী জীবনের জন্য বিশেষ কিছু খাবার এবং শরীরচর্চার দরকার। তাই শারীরিকভাবে সুখ পেতে গেলে তরমুজ, বেদনা, ডুমুর এবং ডিম খাওয়া উচিত। এর ফলে আপনার শরীর এবং মন দুটোই ভাল থাকবে। সবশেষে, আপনার পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুমই হল ফিটনেস থাকার সেরা উপায়।

৪) আমাদের মস্তিষ্কের পাশাপাশি হৃদপিণ্ডকেও খুব সুস্থ ও সতেজ রাখতে হয়। যে কারণে নিয়মিত প্রচুর পরিমাণে সবুজ শাকসবজি এবং ফলমূল এছাড়াও আঁশযুক্ত খাবার খাওয়া উচিত। তবে গবেষণায় দেখা গিয়েছে আপেল, ডাল জাতীয় খাবার, ডিমের হলুদ অংশ হৃদপিন্ডের জন্য খুবই উপকারী।

৫) কিডনি দেহের ছাঁকনি হিসেবে কাজ করে, তাই আপনি যা খাবেন, তার বর্জ্য অংশগুলি সেখানে গিয়ে জমা পড়ে। সেজন্য কিডনির অপর কোনো রকম চাপ না দিয়ে খুবই সহজ পাচ্য খাবারগুলো খাওয়া উচিত যাতে লবণ ও সোডিয়ামের পরিমাণ কম থাকে। তাই অতিরিক্ত পরিমাণে জল পান করা উচিত যাতে সেই খারাপ পদার্থ গুলি খুব সহজেই কিডনির মাধ্যমে শরীর থেকে বেরিয়ে যায়।

৬) বয়স বাড়ার সাথে সাথে আমাদের হাড়ের যত্ন রাখা উচিত। সেই জন্য নিয়মিত হাঁটাচলা শরীরচর্চা করলে হাড় মজবুত এবং হাড়ের কোন সমস্যা দেখা দেয় না। তবে পুষ্টিকর খাবার না খেলে হাড়ের ক্ষয় হতে শুরু হয় এবং বয়স কালে হাড়ের সমস্যায় পড়তে হয়। এই জন্য নিয়মিত দুধ পান করা উচিত কারণ এর মধ্যে রয়েছে ক্যালসিয়াম।

স্বাস্থ্য ভালো রাখার খাবার।

আরও পড়ুনঃ কোষ্ঠকাঠিন্য (Constipation) কেন হয়

সারাদিন তো আমরা অনেক কিছুই খাই। কিন্তু এটা কি জানেন শরীরকে সুস্থ রাখতে কোন কোন খাবারের প্রয়োজন হয়? তবে সুস্থ থাকার মানে শুধুই রোগা হওয়া নয়। সুস্থ থাকার মানে শরীরে যে যে উপাদান প্রয়োজন, সেই সব উপাদানের খাবার খাওয়া। তাহলে দেখে নিন কোন খাবারে কী কী গুণাগুণ রয়েছে।



১) সবুজ শাক-সব্জি-

সবুজ শাক সব্জিতে প্রচুর পরিমানে উপকারী উপাদান থাকে। থাকে প্রচুর নিউট্রিশন। তবে এতে ক্যালোরির পরিমান খুবই কম থাকে। ওজন কমানোর ক্ষেত্রে শাক সব্জি শরীরের পক্ষে খুবই উপকারী। রক্ত চলাচল ঠিক রাখতে, চোখ ভালো রাখতে, ডায়াবিটিসের সম্ভাবনা কমাতে শাক সব্জির জুড়ি মেলা ভার। তাই সুস্থ থাকতে প্রচুর পরিমানে সবুজ শাক সব্জি খান। তবে অবশ্যই খাবার আগে ভালো করে সব্জি ধুয়ে তবে খাবেন।

২) বীজ-

শরীরকে শক্তিশালী করতে বা শরীরের কার্যক্ষমতা বাড়াতে বীজ জাতীয় খাবারের তুলনা হয় না। যে কোনও বীজ জাতীয় খাবারই শরীরের পক্ষে খুবই উপকারী। ব্লাড সুগারের মতো রোগকে প্রতিরোধ করতে বীজ জাতীয় খাবার খুব উপকার দেয়।

৩) পেঁয়াজ- 

মাটির নিচে যে সমস্ত সব্জিগুলি জন্মায় তা স্বাস্থ্যের পক্ষে খুবই উপকারী। যেমন পেঁয়াজ, রসুন, আদা প্রভৃতি। এই সমস্ত খাবার যে শুধু খাবারের স্বাদই বাড়ায় তা নয়। পেঁয়াজ রসুন খেলে আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বাড়ে। বিশেষ করে ক্যানসার এবং ডায়াবিটিসের মতো রোগের সঙ্গে লড়াই করার ক্ষমতা বাড়ে এই সমস্ত সব্জি খেলে।

৪) মাশরুম-

মাশরুমকে সুপারফুড বলা হয়। এর কারণ, মাশরুমে রয়েছে প্রচুর পরিমানে প্রোটিন ভিটামিন। চিকিত্‌সকেরাও মাশরুম খেতে বলেন। ব্রেস্ট ক্যানসার প্রতিরোধে মাশরুম খুবই উপকারী।

আরও পড়ুনঃ সেরা ১০ টি উপকারী সব্জি

৫) বেরি-

শরীরে এনার্জি বাড়ানোর জন্য বেরী সবথেকে উপযোগী ফল। স্ট্রবেরী, ব্লুবেরী এছাড়া এই জাতীয় যে কোনও ফলই স্বাস্থ্যের পক্ষে উপকারী। এর অনেক গুণাগুণ রয়েছে। ক্যানসার, ডায়াবিটিস, হৃদযন্ত্রের বিভিন্ন সমস্যা প্রতিরোধ করে এই বেরী।

৬) বাদাম-

ফ্যাট, মিনারেল, অ্যান্টি-অক্সিডেন্টসে ভরা থাকে বাদাম। তাই বাদাম খেলে আমাদের শরীরের যাবতীয় সব চাহিদা পূরণ হয়ে যায়। ওজন মেনটেন করতে এবং ডায়াবিটিস প্রতিরোধ করতে বাদাম খুব কাজে দেয়।

শরীর সুস্থ রাখার জন্য ব্যায়াম

শরীর ও মনকে সচল রাখার জন্য খাদ্য ও পানীয় গ্রহণে বাছবিচার ছাড়াও দরকার উপযুক্ত ব্যায়াম। ছোটদের বেলায় ব্যায়ামের গুরুত্ব আরও বেশি এ জন্য যে, এর মাধ্যমে তাদের শরীর গঠন ও ব্যক্তিত্বের বিকাশ ঘটে। ব্যায়ামের অনেক পদ্ধতি আছে। হাটাঁ, দৌঁড়, ঝাঁপ ও এগুলোর ওপর ভিত্তি করে বিভিন্ন রকম খেলা এবং সাঁতার হচ্ছে এক ধরনের ব্যায়াম।

যোগ ব্যায়ামের বিভিন্ন দেহভঙ্গিমাকে বলা হয় আসন। এখানে ছয়টি অতি প্রয়োজনীয় আসনের বর্ণনা দেয়া হল যেগুলো সব বয়সের মানুষেরই করা উচিত। তবে অল্প বয়সে শুরু করা সবচেয়ে ভালো ও সহজ। যোগসন সাধারণ খালি পেটে করতে হয়।



পবনমুক্তাসন: 

চিৎ হয়ে শুয়ে প্রথমে ডান পা হাঁটু থেকে ভাঁজ করে পেট ও বুকের ওপর রেখে দ’হাত দিয়ে চেপে ধরুন। শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক রেখে মনে মনে তিরিশ পর্যন্ত গুনুন। তারপর ডান পা নামিয়ে বাঁ পা এবং বাঁ পা নামিয়ে শেষে দ’পা চেপে ধরে সংখ্যা গোনা হয়ে গেলে এটাকে বলা হবে একবার। শবাসনে সমান সময় বিশ্রাম নিয়ে পরপর তিনবার এটা করা উচিত।

ভুজঙ্গাসন: 

পা দু’টি সোজা রেখে সটান উপুড় হয়ে শুয়ে পড়ুন। দ’হাতের তালু উপুড় করে পাঁজরের কাছে দু’পাশে মেঝেতে রাখুন। এবার পা থেকে কোমর পর্যন্ত মেঝেতে রেখে হাতের তালুর ওপর ভর দিয়ে মাথা যতদূর সম্ভব ওপরে তুলুন। এখন মাথা সাধ্যমতো পিছন দিকে বাঁকিয়ে ওপরের দিকে তাকান। ২৫ থেকে ৩০ সেকেন্ড শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক রেখে এ অবস্থায় থাকুন। তারপর আস্তে আস্তে মাথা ও বুক নামিয়ে উপুড় হয়ে শুয়ে পড় এবং শবাসনে বিশ্রাম নিন। আসনটি দু’বার করলে চলে।

আরও পড়ুনঃ ডায়াবেটিস প্রতিরোধের উপায় 

পদ্মাসন: 

শিরদাঁড়া সোজা করে বসে বাঁ পা হাঁটু থেকে মুড়ে ডান ঊরুর ওপর রাখুন। দু’হাঁটুর ওপর রাখুন। যতক্ষণ সহজভাবে পারেনঐ অবস্থায় থাকুন। শ্বাস- প্রশ্বাস স্বাভাবিক থাকবে। তারপর পা বদলে আবারও বসুন। অস্বস্তি লাগলে শবাসনে বিশ্রাম নিন। এভাবে চারবার।

বজ্রাসন: 

হাঁটু ভাঁজ করে পা দু’টি পিছন দিকে মুড়ে নামাজে বসার মতো ভঙ্গিতে শিরদাঁড় সোজা করে বসুন। হাতের তালু উপুড় করে দু’হাঁটুর ওপর রাখুন। পাছা গোড়ালির ওপর থাকবে। প্রথম ক’দিন একটু অসুবিধা হতে পারে। তাই যতক্ষণ সহজভাবে পারো ঐ অবস্থায় বসুন। একবারে বেশিক্ষণ না থাকতে পারলে শ্বাস স্বাভাবিক রেখে আসনটি তিনবার কর এবং শবাসনে বিশ্রাম নিন।

সিংহাসন: 

বজ্রাসনে বসে চিবুক বা থুঁতনি নামিয়ে বুকে ঠেকান। তারপর বড় হাঁ করে যতখানি পারো জিভ বার করুন। এবার নাক দিয়ে বুক ভরে শ্বাস টেনে মুখ দিয়ে যত জোরে সম্ভব শব্দ করে শ্বাস ছাড়ুন। পরপর ৬ বার এরকম করে শবাসনে বিশ্রাম নিন। ধীরে ধীরে সংখ্যাদি বাড়িয়ে ১২ বার করতে পারেন।

শরীরের সাথে মনের যোগাযোগ রক্ষা করে স্নায়ু। সমস্ত স্নায়ু মিলে তৈরী হয়েছে স্নায়ুতন্ত্র যার একটা  বড় অংশ শেষ হয়েছে পায়ের তলায়। সেজন্য পায়ের তলা কর্কশ কোনো কিছু, যেমন ধুন্দুলের ছাল বা প্লাস্টিকের ব্রাশ, দিয়ে ঘুরিয়ে অনেক্ষণ ঘষলে শরীর সতেজ থাকে এবং অসুস্থ শরীর ধীরে ধীরে সেরে ওঠে। কাজেই রোজ যখনই সম্ভব একেক পায়ের তলা অন্তত ১০ মিনিট করে ঘষে আঙ্গুলগুলো ওপর-নিচ করে টানবেন।

শরীর অতিরিক্ত ঘামার কারণ 

যেসব কারণে অতিরিক্ত ঘাম সৃষ্টি হয়

  • শরীরে অতিরিক্ত ঘাম তৈরি হওয়া যেমন কোনো ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হতে পারে, শরীরে উপস্থিত অন্য কোনো রোগের কারণে হতে পারে আবার তেমনি কোনো কারণ ছাড়াও এই উপসর্গ দেখা দিতে পারে।
  • শরীরের যে কোনো অংশে অতিরিক্ত ঘাম তৈরি হতে পারে। আবার শরীরের নির্দিষ্ট কোনো অংশেও অতিরিক্ত ঘাম সৃষ্টি হওয়ার বিষয়টি পরিলক্ষিত হতে পারে।
  • সাধারণত বগলের নিচে, হাতের বা পায়ের তালুতে, কপালে, উপরের ঠোটে এবং ঘাড়ে অতিরিক্ত ঘাম তৈরি হতে দেখা যায়।
  • ঠিক কী কারণে শরীরের নির্দিষ্ট একটি অংশে অতিরিক্ত ঘাম তৈরি হয়, এ বিষয়টি এখনও পুরোপুরি নিশ্চিতভাবে আবিষ্কার করতে পারেননি বিজ্ঞানীরা।
  • ধারণা করা হয়, এটি হাইপারথ্যালামাসে ত্রুটির কারণে অতিরিক্ত ঘাম হয়ে থাকে। হাইপারথ্যালামাস মস্তিষ্কের ঐ অংশ যেটি শরীরে ঘাম উৎপাদন নিয়ন্ত্রণ করে।

অতিরিক্ত ঘামের ক্ষেত্রে যেসব সমস্যা হয়ে থাকে

  • যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিসের ভাসকুলার সার্জন মার্ক হোয়াইটলি বলেন, "সামাজিকভাবে সবচেয়ে ক্ষতিকর ঘামের সমস্যা হলো হাতের তালু ঘামা।"
  • মি. হোয়াইটলি বলেন, অনেক মানুষই হাত ঘামার কারণে আরেকজনের সাথে করমর্দন করতে অস্বস্তি বোধ করেন। কারণ করমর্দনের পর যখন ঐ ব্যক্তি তার হাত মোছেন, সেটি অপমানজনক।
  • এছাড়া অতিরিক্ত ঘামে কাপড় ভিজে গিয়ে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়ার অভিজ্ঞতা হয়তো অনেকেরই আছে।

যেভাবে এই সমস্যার সমাধান করা যায়

  • শরীরে অতিরিক্ত ঘাম তৈরি হওয়ার সমস্যা যথেষ্ট অস্বস্তিকর এবং ক্ষেত্রবিশেষে অবমাননাকর হলেও, খুশির বিষয় হলো প্রায় সব ক্ষেত্রেই এই সমস্যার সমাধান করা সম্ভব।
  • অতিরিক্ত ঘামের সমস্যা হলে ক্ষেত্রবিশেষে ডারমাটোলজিস্টরা ওষুধ গ্রহণ, বোটক্স ইনজেকশন নেয়া বা সার্জারির মাধ্যমে ঘাম তৈরি করা গ্রন্থিগুলো অপসারণের পরামর্শ দিতে পারেন।
  • তবে শরীরের কোন অংশে ঘাম হয়, তার উপর নির্ভর করে কোন ধরণের চিকিৎসা নেয়া হবে।
  • বগলের নিচে অতিরিক্ত ঘাম হওয়ার সমস্যা থাকলে বোটুলিনাম টক্সিন ইনজেকশন কার্যকর হতে পারে।
  • বোটুলিন এক ধরণের বিষাক্ত পদার্থ যেটি ঘাম তৈরি করা গ্রন্থিগুলোর সাথে যুক্ত স্নায়ুগুলোর কার্যক্ষমতা থামিয়ে দেয়, ফলে ঘাম তৈরি হয় না।
  • তবে এই পদ্ধতি স্থায়ী নয়, ওষুধের ডোজের ওপর নির্ভর করে প্রতি ছয় থেকে নয় মাসে এই পদ্ধতির পুনরাবৃত্তি করতে হয়।
  • ঘামের সমস্যার স্থায়ী সমাধান পেতে সার্জারি করতে হবে, যেটিকে এন্ডোস্কোপিক ট্রান্সথোরাসিক সিম্যাথেকটমি বলা হয়।
  • এই সার্জারির মাধ্যমে ঘাম তৈরি হওয়ার গ্রন্থিগুলোর সাথে সংযুক্ত স্নায়ুর সংযোগ ছিন্ন করা হয়।
  • এই সার্জারি করে হাত ঘামার সমস্যা সমাধানে প্রায় ৯৯% সফলতা পাওয়া যায়।

কম ঘুমিয়ে সুস্থ থাকার উপায়

কাজের চাপে হয়তো আপনি রাতে সঠিক সময়ে ঘুমাতে যেতে পারেননি। আর কালের জরুরি মিটিং বা কোনো অনুষ্ঠানে আপনাকে যেতেই হবে। এমতাবস্থায় সকালে ঘুম থেকে উঠলে চেহারায় ক্লান্তি ও ঘুম ঘুম ভাব থাকতে পারে। 

জীবনযাপনবিষয়ক একটি ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদন অবলম্বনে নির্ঘুম রাতের ক্লান্তিভাব দূর করার উপায় সম্পর্কে জানানো হলো

১. চোখের ফোলাভাব কমাতে রেফ্রিজারেটরে রেখে চামচ ঠাণ্ডা করে নিন। ঠাণ্ডা চামচ চোখের নিচের চারপাশে আলতোভাবে ধীরে ধীরে ঘষে নিন। ঠাণ্ডা প্রয়োগ কয়েক মিনিটের মধ্যে চোখের ফোলা ভাব কমাতে সাহায্য করে।

২. ঘুমের ঘাটতিভাব কমাতে সকালে ঠাণ্ডা পানিতে গোসল করুন। ঠাণ্ডা পানিতে গোসল ত্বককে উজ্জ্বল ও সতেজ দেখাতে সহায়তা করে।

৩. চেহারার ক্লান্তিভাব দূর করতে ত্বকের ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন। ঘুমের স্বল্পতার কারণে ত্বকের আর্দ্রতা কমে যায়। ফলে ত্বক দেখায় মলিন।

৪. শরীর চাঙ্গা রাখার মতো ত্বককেও চাঙ্কা রাখতে ক্যাফেইন ব্যবহার করুন। ত্বক আর্দ্র রাখতে ভিটামিন ‘সি’ সিরাম বা ক্যাফেইন সমৃদ্ধ অন্য কোনো উপাদান ব্যবহার করুন। এটা ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায়।

৫. ত্বকে স্ক্রাব ব্যবহার রক্ত সঞ্চালন বাড়ায় ও ত্বক ভালো থাকে। ‘স্ক্রাবিং’ কেবল ত্বককে উজ্জ্বল করে না পাশাপাশি ত্বককে আগের চেয়ে অনেক বেশি সতেজ করতেও সহায়তা করে।



শরীর কাঁপে কেন

সাধারণভাবে এককথায় বলতে গেলে স্নায়ু বা নার্ভ এর সমস্যার জন্যে হাত কাঁপে। 

শরীর সমার্থক শব্দ 

এখানে মোট ৮ টি, শরীর শব্দটির সমার্থক শব্দ বা পতিশব্দ দেওয়া হয়েছে।

  • কলেবর
  • গা
  • দেহ
  • অঙ্গ
  • তনু
  • গাত্র
  • বপু
  • গতর 



Post a Comment

0 Comments