ডায়াবেটিস প্রতিরোধের উপায় | ডায়াবেটিস কী বা কেন হয়?


ডায়াবেটিস প্রতিরোধের উপায় 

ডায়াবেটিস শব্দটি আমাদের সবার কাছেই খুব পরিচিত একটি শব্দ। কিন্তু সেই অর্থে ডায়াবেটিস সম্পর্কে আমাদের কোনো স্পষ্ট ধারণা বা জ্ঞান নেই। ডায়াবেটিস সম্পর্কে আমাদের সবার জানা উচিত। যাদের ডায়াবেটিস রয়েছে তাদের পাশাপাশি যাদের নেই তাদেরও এই বিষয়টি পরিষ্কারভাবে জানা প্রয়োজন, যাতে করে ভবিষ্যতে তাদের এই রোগে আক্রান্ত হতে না হয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে ডায়াবেটিস একটি মহামারী রোগ। ২০০৬ সালে ২০ শে ডিসেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৬১/২২৫ নম্বর ঘোষণায় ডায়াবেটিসকে দীর্ঘমেয়াদী, অবক্ষয়ী ও ব্যয়বহুল ব্যাধি হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে, যা মানবদেহে মারাত্মক জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে।

ডায়াবেটিস কী বা কেন হয়

এখন সবার মনে প্রশ্ন আসতেই পারে যে এই ডায়াবেটিস কি, কেন হয়, কি কি কারনে হয়, এই রোগটি কি খুবই ক্ষতিকর, কিংবা রোগ প্রতিরোধের কি কোনো উপায় নেই?  এরকম বহুরকমের প্রশ্ন। কিন্তু চিন্তার কোনো কারণ নেই, আজকের এই পোস্টে ডায়াবেটিস সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা এবং সেই সম্বন্ধিত সমস্ত তথ্য বলা হয়েছে।

ডায়াবেটিস একটি দীর্ঘস্থায়ী রোগ। দেহের মধ্যে ইনসুলিনের উৎপাদন এবং তার কর্মধারার কোনো সমস্যার ফলেই ডায়াবেটিস রোগটি দেখা দেয়। যারা নগর বা শহরে কিংবা কিছুটা গ্রামে বাস করেন তাদের দৈনন্দিন জীবনে শারীরিক সক্রিয়তা কম। বিশ্বের জনসংখ্যা বাড়ছে এবং বাড়ছে দীর্ঘায়ু মানুষের সংখ্যা। মানুষ এখন অধিক পরিমাণে কম স্বাস্থ্যসম্মত খাবার খাচ্ছে, অতীতে তারা যা কখনো খায়নি। এই দুটি কারণে পৃথিবীতে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা দ্রুতই বেড়ে চলছে এবং ক্রমশই তা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে।


"আমেরিকান ডায়াবেটিস অ্যাসোসিয়েশন বলছে, ডায়াবেটিস এমনই একটি রোগ, যা কখনো সারে না। কিন্তু এই রোগকে সহজেই নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়।"

"আইরিশ ইনডিপেনডেন্টের খবরে বলা হয়েছে, যখন আমরা কার্বোহাইড্রেট বা সাধারণ শর্করাজাতীয় খাবার খাই, তখন তা ভেঙে গ্লুকোজে পরিণত হয়। ইনসুলিন হচ্ছে একধরনের হরমোন।" 

ডায়াবেটিসের প্রকার বা ধরন

ডায়াবেটিস হলে আমাদের শরীরে গ্লুকোজ বা সুগারের পরিমাণ একটা নির্দিষ্ট লেভেল -এর চেয়ে অনেক বেশি বেড়ে যায়। ডায়াবেটিস মূলত দুই ধরনের টাইপ ১ এবং টাইপ ২। এই দুটি ধরন একে অপরের থেকে আলাদা হলেও দুটোই খুবই ভয়ানক। এছাড়া আরো কিছু টাইপ আছে, যেগুলো খুবই কম।

টাইপ ১

এই টাইপে ডায়াবেটিস -এর সূচনা হঠাৎ এবং নাটকীয়ভাবে হয়। তখন যে লক্ষণগুলো দেখা দিতে পারে তার মধ্যে রয়েছে- 

  • ঘন ঘন মূত্রত্যাগ
  • অস্বাভাবিক তৃষ্ণাবোধ
  • অতিশয় ক্লান্তিবোধ ও কাজকর্মে উৎসাহহীনতা
  • লাগাতার ক্ষুধা, হঠাৎ দেহের ওজন কমে যাওয়া
  • রোগ জীবাণু সংক্রমণ ও চোখে ঝাপসা দেখা।

টাইপ ২

এই টাইপের ডায়াবেটিসের সূচনা হয় ধীর গতিতে, এবং সূচনাপর্বে রোগ নির্ণয় সহজ হয় না। ডায়াবেটিসের উপরোক্ত লক্ষণ গুলো টাইপ ২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত মানুষের মধ্যেও দেখা দিতে পারে। তবে এদের মধ্যে লক্ষণ গুলি তেমন সুস্পষ্ট নাও হতে পারে। টাইপ ২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত বহুসংখ্যক রোগীর প্রাথমিক পর্যায়ে কোনো লক্ষনই থাকেনা এবং রোগটি সূচনা হওয়ার বহু বছর পরেই কেবল রোগ নির্ণয় হয়। এই রোগীদের প্রায় ৫০ শতাংশের বেলায় রোগ নির্ণয় কালেই তাদের ডায়াবেটিসজনিত নানা উপসর্গের উপস্থিতি ধরা পড়ে। 

ডায়াবেটিস হলে কি কি হয়

টাইপ ১ এবং টাইপ ২ ডায়াবেটিস, দুটোর ক্ষেত্রেই রক্তে সুগার বা গ্লুকোজের পরিমাণ বেড়ে যায়। গ্লুকোজ আমাদের শরীরের শক্তির জন্য খুবই প্রয়োজনীয় উপাদান। কারণ গ্লুকোজই আমাদের শরীরে শক্তি যোগায়। আমরা প্রতিদিন যে খাবার খাই বা পান করি, এটা থেকে কার্বোহাইড্রেট ভেঙে গ্লুকোজ রক্তে প্রবেশ করে। গ্লুকোজ ইনসুলিন নামক হরমোনের সাহায্যে রক্ত থেকে শরীরের বিভিন্ন অংশে প্রবেশ করে। তখন আমরা খাবার খেয়ে শক্তি পাই। ইনসুলিন তৈরি হয় প্যানক্রিয়াস বা অগ্ন্যাশয় থেকে। আমাদের শরীরে কোনো ডায়াবেটিস না থাকলে গ্লুকোজ রক্তে প্রবেশ করার সঙ্গে সঙ্গে প্যানক্রিয়াস একটা সিগন্যাল পায় এবং প্যানক্রিয়াস সাথে সাথেই ইনসুলিন উৎপাদন করে। আমাদের শরীরে গ্লুকোজ এবং ইনসুলিনেরর একটা ভারসাম্য বজায় থাকে। 

ডায়াবেটিসের লক্ষণ

ডায়াবেটিস একটি হরমোন জনিত রোগ, এটি দীর্ঘদিন কোনো লক্ষণ ছাড়াই শরীরের বিভিন্ন অঙ্গের ক্ষতি করে থাকে। এবারে মনে একটা প্রশ্ন উঠতেই পারে যে আমরা কি করে বুঝবো যে আমরা এই রোগে আক্রান্ত হয়েছি? যেকোনো ডায়াবেটিস এর ক্ষেত্রে সাধারণভাবে মানুষের শরীরে বিভিন্ন উপসর্গ পরিলক্ষিত হয় যেমন- 

  • ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া
  • অস্বাভাবিক তৃষ্ণাবোধ
  • ঘন ঘন ক্ষুধা লাগা 
  • ক্লান্তি-দুর্বলতা বোধ হওয়া
  • যথেষ্ট পরিমাণ খাবার সত্বেও ওজন কমে যাওয়া
  • কোনো কিছু কাজ করার ক্ষেত্রে আগ্রহ বা মনোযোগ কমে যাওয়া
  • হাতে পায়ে ঝিঁ ঝিঁ অনুভূতি হওয়া 
  • হঠাৎ করে ওজন হ্রাস পাওয়া
  • হাত-পায়ের অসাড়তা
  • চোখে ঝাপসা দেখা
  • ঘনঘন ইনফেকশন 
  • ধীরে ধীরে ক্ষতস্থান শুকানো
  • বমি ভাব ও পেটে ব্যথা।

ডায়াবেটিসের জটিলতা

ডায়াবেটিস সম্পূর্ণ আরোগ্য হয় না, তবে এর কার্যকরী চিকিৎসা আছে। উপযুক্ত ঔষধ, যথাযথ সেবা-যত্ন এবং চিকিৎসা ও সেইসঙ্গে স্বাস্থ্যসম্মত জীবনযাপন পদ্ধতি অনুসরণ করলে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তি সক্রিয়, কর্মক্ষম জীবন কাটাতে এবং জটিলতার ঝুঁকি কমিয়ে আনতে পারেন| ডায়াবেটিসের জটিলতা গুলি হল- 

  • হৃদরোগ
  • স্ট্রোক
  • কিডনি বিকল
  • অন্ধত্ব
  • বিষন্নতা।

ডায়াবেটিসের স্বল্পমেয়াদী জটিলতাগুলি নিয়ন্ত্রণ

কিটোএসিডোসিস

রক্তে মাত্রাতিরিক্ত গ্লুকোজ ও কিটোন এর উপস্থিতিতে এই জাতীয় সমস্যা সৃষ্টি হয়। এই সমস্যায় হঠাৎ অসুস্থ হতে পারেন, অল্পতেই হাঁপিয়ে উঠতে পারেন। হতে পারে অত্যন্ত তৃষ্ণার্ত, অতিশয় ক্লান্ত-পরিশ্রান্ত।

পুনঃ পুনঃ জীবাণু সংক্রমণ

রক্তে গ্লুকোজাধিক্য থাকলে সংক্রমনের বিরুদ্ধে দেহের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সুষ্ঠভাবে কাজ করে না।

ওজন হ্রাস

গ্লুকোজ এর পরিবর্তে দেহ শক্তি উৎপাদনের জন্য প্রোটিন ও চর্বি পোড়াতে বা এককথায় গলাতে শুরু করে বলে এই অবস্থা ঘটে।

ডায়াবেটিসের দীর্ঘমেয়াদি জটিলতাগুলি নিয়ন্ত্রণ

চক্ষুরোগ

এ থেকে পরিণামে অন্ধত্বও হতে পারে

নেফ্রাপ্যাথি

এর ফলে কিডনির পূর্ণ অক্ষমতা দেখা দিতে পারে, এমনকি দুটো কিডনিই অকেজো হয়ে যেতে পারে।

নিউরোপ্যাথি

রক্তসংবহন সমস্যার সঙ্গে একত্রিত হয়ে নিউরোপ্যাথি হতে পারে। 

হৃদপিণ্ড ও রক্তসংবহনতন্ত্রের ব্যাধি

এই অবস্থায় হৃদপিণ্ড, ধমনী বা শিরা আক্রান্ত এবং করোনারি হৃদরোগ এবং স্ট্রোক এর ন্যায় মারাত্মক জীবন হরণকারী জটিলতা দেখা দিতে পারে। 

ডায়াবেটিসের চিকিৎসা ও নিয়ন্ত্রণ

টাইপ ১

ডায়াবেটিসে যারা ভুগছেন তাদের জীবন রক্ষার জন্য প্রতিদিন একাধিকবার ইনসুলিন এর প্রয়োজন হয়।

টাইপ ২

ডায়াবেটিসের রোগীকে রক্তের গ্লুকোজ গ্রহণযোগ্য মাত্রা জানার জন্য মুখে ওষূধ গ্রহন করতে হয়। সেই সাথে কোনো কোনো সময় ইনসুলিনের প্রয়োজন হতে পারে। 

ডায়াবেটিসের জটিলতা প্রতিরোধ, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ অর্থাৎ রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা সাধারণ মাত্রার কাছাকাছি রাখা প্রয়োজন। গবেষণার মাধ্যমে এটা প্রমাণিত হয়েছে, রক্তের শর্করা এবং রক্তচাপ যথাযথ নিয়ন্ত্রণ করে ডায়াবেটিসের জটিলতাকে ব্যাপকভাবে হ্রাস করা সম্ভব-

  • চোখের জটিলতা প্রায় ৭৬% পর্যন্ত হ্রাস করা সম্ভব
  • কিডনি রোগের জটিলতা প্রায় ৫০% পর্যন্ত হ্রাস করা সম্ভব
  • স্নায়ু রোগ বা নিউরোপ্যাথি প্রায় ৬০% পর্যন্ত হ্রাস করা সম্ভব
  • স্ট্রোকে -এর ঝুঁকি প্রায় ৩৩% পর্যন্ত হ্রাস করা সম্ভব

ডায়াবেটিস রোগী যদি বিনা চিকিৎসায় থাকেন তাহলে কি হতে পারে?

রক্তে অনেক বেশি সুগার অনেক সময় ধরে থাকলে আমাদের হার্ট, কিডনি, চোখ এবং পা ড্যামেজ হয়ে যেতে পারে।

ডায়াবেটিস প্রতিরোধ বা সারানোর উপায় 

ডায়াবেটিস একটি হরমোন জনিত দীর্ঘমেয়াদী রোগ। এটিকে পুরোপুরি নির্মূল করা না গেলেও দৈনন্দিন কিছু নিয়ম কানুন মেনে চললে এটিকে আয়ত্তে রাখা সম্ভব। ডায়াবেটিস কে কন্ট্রোল করতে দৈনন্দিন জীবনে যেগুলি করণীয় সেগুলি হল- 

  • নিয়মিত এক্সারসাইজ করা
  • মিষ্টি এবং কার্বোহাইড্রেট যুক্ত খাবার কমিয়ে দেওয়া
  • পর্যাপ্ত জল পান করা
  • ওজন কমিয়ে ফেলা
  • ধূমপান ত্যাগ করা
  • আলসেমি যুক্ত জীবন না কাটানো
  • সারাদিনে যতটা সম্ভব বেশি পরিশ্রম করা
  • নিয়মিত রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা পরীক্ষা করা
  • নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা
  • পায়ের যত্ন নেওয়া ইত্যাদি।

ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য শাকসবজির গুরুত্ব

ডায়াবেটিস রোগীর খাবারে শাকসব্জি'র গুরুত্ব অপরিসীম। সারা বছর জুড়েই এদেশে নানা ধরনের শাকসব্জি উৎপাদিত হয়। প্রকৃতির এই দানকে বিজ্ঞানসম্মত ভাবে কাজে লাগিয়ে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখা ও প্রতিরোধ করা সম্ভব। ডায়াবেটিস রোগীদের সুবিধার জন্য শাকসব্জি কে দুই ভাগে ভাগ করা যায়। যেমন-

শর্করা জাতীয় খাদ্য

আলু, মিষ্টি কুমড়া, কাঁচা কলা, বরবটি, পাকা টমেটো, মটরশুঁটি, মোচা, বিট, বেগুন, ঢেঁড়স, শিম, গাজর, কাঁঠালের বিচি, শালগম, কাঁকরোল, শিমের বিচি, এঁচোড় প্রভৃতি।

শর্করা বিহীন শাকসবজি

মাশরুম, কাঁচা মরিচ, ক্যাপসিকাম, লাল শাক, পুইশাক, পালং শাক, কলমি শাক, ফুলকপি, বাঁধাকপি, চাল কুমড়ো, পটল, লাউ, উচ্ছে, ঝিঙ্গা, করলা, কাঁচা পেঁপে, মুলা, কাঁচা টমেটো ইত্যাদি।

উপরোক্ত শাকসব্জি গুলি কমবেশি প্রত্যেকটা ঋতুতেই উৎপাদিত হয়। ডায়াবেটিস রোগীর উচিত প্রতিদিন এক ধরনের শাকসবজি না খেয়ে সব রকম মেশানো অর্থাৎ পাঁচমিশালী শাকসবজি খাওয়া। এর ফলে শরীরের মধ্যে সব ধরনের ভিটামিন, মিনারেল প্রবেশ করবে। খাবারে বৈচিত্র্য আসবে, পেট ভরবে, এবং ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকবে।

তাজা শাকসবজি আমাদের রান্না করে খেতে হয়। রান্নার ওপরও ডায়াবেটিস রোগীর রক্তে শর্করার বাড়া-কমা অনেকটা নির্ভর করে। বিভিন্ন ফাস্টফুড যেমন, আলুর চিপস, ফ্রেন্স ফ্রাই এর থেকে সিদ্ধ আলু খেলে শর্করার পরিমাণ দ্রুত বৃদ্ধি পায়। কাঁচা গাজরের থেকে সিদ্ধ অবস্থায় খেলে শর্করার পরিমাণ দ্রুত বৃদ্ধি পায়। শর্করা জাতীয় সব্জিগুলি অনেকক্ষণ ধরে রান্না করলে সহজে হজম হয়ে শোষণ হয় এবং দ্রুত রক্তে শর্করার পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়। শাকসবজি যেগুলো কাঁচা ও টাটকা খাওয়া যায় সেগুলো কাঁচা অবস্থায় খেলে বেশী উপকার  পাওয়া যায়। যেগুলো খোসাসহ রান্না করা যায় সেগুলো খোসাসহ রান্না করাই ভালো। তবে সব্জি বেশি সিদ্ধ না করে একটু কাঁচা কাঁচা ভাব রেখে রান্না করা উচিত। এর ফলে সব্জির স্বাদ, গন্ধ, রং এবং ভিটামিন অটুট থাকে। 


ডায়াবেটিস রোগীদের খাদ্য তালিকা

শরীরের জন্য ফল, শাকসব্জি খুব উপকারী হলেও ডায়াবেটিস রোগীর জন্য বেশি চিনিযুক্ত ফল বা বেশি শর্করা যুক্ত শাকসব্জি খাবার ব্যাপারে বেশকিছু বিধি-নিষেধের কথা বলা হয়। ফল ও শাকসবজি খাওয়ার ক্ষেত্রে জি.আই. বুঝে খাওয়া উচিত।

জি.আই.

যে খাবারে জি.আই. যত কম তার শর্করা তত ধীরে ধীরে আর দেরিতে রক্তে মেশে, যা ডায়াবেটিস রোগীর জন্য ভালো। আর ওজনাধিক্য ডায়াবেটিস রোগীদের সেইসঙ্গে জানতে হবে কোন খাবারে কত ক্যালোরি। কারণ তার জন্য দৈনিক একটা নির্দিষ্ট ক্যালোরি বরাদ্দ থাকে। এজন্য উচ্চ ক্যালোরিসম্পন্ন ফল খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সেই পরিমান ক্যালোরি অন্য খাবার থেকে বাদ দিতে হবে।

কোন সব্জিগুলি খাবেন

শালগম, ঢেঁড়স, ফুলকপি, লেটুস শাক, বাঁধাকপি, বিভিন্ন ধরনের শাক, বেগুন, পেঁয়াজ, পেঁয়াজ সাঁই, বিট, টমেটো, ক্যাপসিকাম, কাঁচা লঙ্কা, করলা, গাজর, লেবু, সাদা মুলো, ঝিঙে, লাউ, বিন প্রভৃতি।

কোন ফলগুলি খাবেন/ ডায়াবেটিস রোগীর ফল

কম চিনিযুক্ত ফল

অ্যাভোক্যাডো, আপেল, জাম্বুরা, বেদানা, পেয়ারা, স্ট্রবেরি, কিউই, পেঁপে কালোজাম, লেবু, আমলকি সহ বিভিন্ন টক জাতীয় ফল, চেরি।

বেশি চিনি যুক্ত ফল

যে ফলগুলি ডায়াবেটিস রোগীর এড়িয়ে চলা উচিত সেগুলি হল- আনারস, কলা, পাকা আম, পিচফল, আতা, আঙ্গুর, খেজুর-কিসমিস, তরমুজ, খরমুজ, কমলার জুস। এই ফলগুলি যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলতে হবে।

বহুমূত্র রোগ

ডায়াবেটিস বা বহুমূত্র রোগ একটি দীর্ঘস্থায়ী বিপাকীয় ব্যাধি যা ইনসুলিনের অভাব হয়ে থাকে।

বহুমূত্র রোগ, মধুমেহ বা ডায়াবেটিস মেলিটাস একটি হরমোন সংশ্লিষ্ট রোগ। দেহযন্ত্র অগ্ন্যাশয় যদি যথেষ্ট ইনসুলিন তৈরি করতে না পারে অথবা শরীর যদি উৎপন্ন ইনসুলিন ব্যবহারে ব্যর্থ হয়, তাহলে যে রোগ হয় তা হলো 'ডায়াবেটিস' বা 'বহুমূত্র রোগ'। তখন রক্তে চিনি বা শকর্রার উপস্থিতিজনিত অসামঞ্জস্য দেখা দেয়। ইনসুলিনের ঘাটতিই হল এ রোগের মূল কথা। অগ্ন্যাশয় থেকে নিঃসৃত হরমোন ইনসুলিন, যার সহায়তায় দেহের কোষগুলো রক্ত থেকে গ্লুকোজকে নিতে সমর্থ হয় এবং একে শক্তির জন্য ব্যবহার করতে পারে। ইনসুলিন উৎপাদন বা ইনসুলিনের কাজ করার ক্ষমতা-এর যেকোনো একটি বা দুটোই যদি না হয়, তাহলে রক্তে বাড়তে থাকে গ্লুকোজ। আর একে নিয়ন্ত্রণ না করা গেলে ঘটে নানা রকম জটিলতা, দেহের টিস্যু ও যন্ত্র বিকল হতে থাকে।

ডায়াবেটিস হাসপাতাল

কলকাতার সেরা ১০ টি ডায়াবেটিস হসপিটাল

  • AMRI Hospital
  • Narayana Multispeciality Hospital
  • Woodlands Hospital
  • Ruby General Hospital
  • B.P. Poddar Hospital & Medical Research Ltd
  • Belle Vue Clinic
  • Kothari Medical Centre
  • IPGME & R-SSKM Hospital
  • Medica supersepciality Hospital
  • Apollo Gleneagles Hospital

ডায়াবেটিস ক্লিনিক 

সারা ভারতের সেরা ১০ টি ডায়াবেটিস হসপিটাল

  • Columbia Asia Hospital, Bengaluru
  • Nanavati Hospital, Mumbai
  • Fortis Hospital, Bengaluru
  • Max Super Speciality Hospital, Delhi
  • Global Hospital
  • Manipal Hospital, Bengaluru
  • Indraprast Apollo Hospital, Delhi
  • Apollo Hospital, Chennai
  • SL Raheja Hospital, Mumbai
  • Fortis C-Doc Hospital, Delhi
Kolkata Corner

Post a Comment

0 Comments