কিডনি সুস্থ রাখার উপায়
Health Tips: বন্ধুরা, আজকের এই কর্মব্যস্ত জীবনে ভালো করে খাওয়া-দাওয়া, সুন্দর নিয়মমাফিক জীবনযাপন কোনোটাই ঠিক করে হচ্ছে না। তাই আমাদের শরীরে নানারকম সমস্যা দেখা দিচ্ছে। তার মধ্যে একটি অন্যতম সমস্যা হল কিডনির সমস্যা। তাই kolkatacorner -এর আজকের এই প্রতিবেদনে আমরা কিডনিকে সুস্থ রাখার কয়েকটি টিপস সম্পর্কে আলোচনা করবো। আপনি যদি আপনার কিডনির স্বাস্থ্য ভালো রাখতে চান, তাহলে আপনাকে অবশ্যই এই 9 টি টিপস মেনে চলতে হবে।
আরও পড়ুনঃ পাকা চুল কালো করার ঘরোয়া ৪ উপায়
কিডনি সুস্থ রাখতে, মেনে চলুন এই 9 টি টিপস
আমাদের শরীর একটি যন্ত্রের মতো এবং যেকোনো কাজে শরীরের প্রতিটি অঙ্গের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। কিডনি শরীরের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলির মধ্যে একটি যা জল ফিল্টার করতে এবং শরীর থেকে বর্জ্য পদার্থ অপসারণ করতে কাজ করে। কিডনির সমস্যা হতে শুরু করলে শরীরে বিভিন্ন সমস্যা বাড়ে। কিডনি ফেইলিওর এমনকি ডায়ালাইসিসও আসতে শুরু করে। কিন্তু কিডনি সুস্থ রাখতে কী ধরনের টিপস অনুসরণ করা যেতে পারে?
কিডনি বিশেষজ্ঞদের মতে, কিডনি রোগ যখন শুরু হয়, তখন কী, কী লক্ষণগুলি দেখা যায় তা ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করতে হবে এবং কিডনি সুস্থ রাখতে কিছু টিপস অনুসরণ করতে হবে।
কিডনি রোগের লক্ষণ
- কিডনি রোগ শুরু হলে আমাদের শরীরে নানা ধরনের উপসর্গ দেখা দেয়। যেমন-
- কিডনি রোগ শুরু হওয়ার সাথে সাথে ত্বকে এর প্রভাব দেখা দিতে শুরু করে। ত্বক খুব শুষ্ক, চুলকানি, ফাটল এবং আঁশযুক্ত হয়ে যায়।
- শরীরে অনেক ধরনের মিনারেল ও ভিটামিনের ঘাটতি দেখা দেবে।
- চুলকানি স্ট্রেচ মার্ক হতে পারে।
- ত্বকের রং আরও সাদা দেখাতে শুরু করে।
- নখ খুব দুর্বল ও কাঁচা হয়ে যায়।
- নখে সাদা দাগ বা দাগ দেখা দিতে শুরু করে।
- আপনার তলপেটে এবং কোমরে প্রচুর ব্যথা শুরু হবে।
- হাত ও পায়ের তলায় বেশি ফোলাভাব আছে।
- প্রস্রাব করার সময় জ্বালাপোড়া এবং অস্বস্তি হতে পারে।
আরও পড়ুনঃ টমেটো খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
মেনে চলুন এই 9 টি টিপস
1. নিয়মিত কিডনি চেকআপ করুন
এই আধুনিক যুগে অনেকেই স্বাস্থ্য সম্পর্কে অনেক সচেতন হয়েছে কিন্তু তও এরকম অনেক মানুষ আছেন যারা সেইভাবে শরীরের কোনো দেখভাল করেন না। এরকম করলে চলবে না, শরীরে কোনো প্রকার বা কোনো বিশেষ অঙ্গের রোগ দেখা দিলে সেটির পরীক্ষা করতে হবে অর্থাৎ চেকআপ করতে হবে।
একইভাবে, কিডনির সমস্যা দেখা দিলে সময়ে সময়ে কিডনি চেকআপ করানো ভালো। যদি আপনার শরীরে রক্তের ইউরিয়াও বাড়তে থাকে, তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের সাথে যোগাযোগ করুন। কিডনির ক্ষেত্রে অবশ্যই চিকিৎসকের কথা মেনে চলুন।
2. শরীরকে জলশূন্য হতে দিবেন না
আপনাকে খেয়াল রাখতে হবে যে আপনি আপনার শরীরকে কোনোভাবেই জলশূন্য হতে দেবেন না। কিডনিতে পাথরের সমস্যা থেকে বাঁচার সবচেয়ে ভালো উপায় হল পরিমিত পরিমানে জল পান করা।
আরও পড়ুনঃ রসুনের উপকারিতা ও খাওয়ার নিয়ম
3. রক্তচাপ খুব বেশি বাড়তে দেবেন না
রক্তচাপও কিডনির কার্যকারিতা ব্যাহত হওয়ার কারণ হতে পারে। রক্তচাপ, ডায়াবেটিস বা হার্টের সমস্যা থাকলে তা পুরো শরীরে প্রভাব ফেলে এবং এক্ষেত্রে আরও বিভিন্ন অঙ্গের ক্ষতি হতে পারে। সময়ে সময়ে রক্তচাপ পরীক্ষা করুন এবং ডাক্তারের পরামর্শ অনুসরণ করুন।
4. ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করুন
আপনি হয়তো এই বিষয়ে সচেতন নন, কিন্তু রক্তে শর্করার মাত্রা কিডনি ফেইলিওরের সবচেয়ে বড় কারণ হতে পারে। ব্লাড সুগার বেড়ে গেলে কিডনি ঠিকমতো কাজ করবে না এবং ক্রমাগত এভাবে থাকলে কিডনির ওপর অনেক প্রভাব পড়ে। স্বাস্থ্যকর ফল, সবজি, স্ট্রবেরি, ব্লুবেরি, বাঁধাকপি, রসুন ইত্যাদি খান। পরিশোধিত পণ্য থেকে দূরে থাকুন।
আরও পড়ুনঃ ব্যায়াম না করে ওজন কমানোর উপায়
5. ঘুমের যত্ন নিন
ঘুমের সময় আমাদের শরীর নিজেকে মেরামত করে। এটি এমনভাবে ঘটে যে আমাদের শরীরের নিজেকে সুস্থ রাখতে 7-8 ঘন্টা ঘুমের প্রয়োজন হয়। এটা সবসময় মাথায় রাখবেন।
6. ওজন বাড়তে দেবেন না
স্থূলতা ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ এবং হৃদরোগের কারণ হতে পারে। স্বাস্থ্যকর খাওয়ার খুব প্রয়োজনীয়, এটি গুরুত্বপূর্ণ যে আমরা প্রক্রিয়াজাত খাবার যেমন ময়দা ইত্যাদি থেকে দূরে থাকি এবং একই সাথে খুব বেশি লবণ এবং অতিরিক্ত চিনি না খাই।
7. অ্যালকোহল এবং ধূমপান থেকে দূরে থাকুন
সুস্থ থাকার জন্য, লিভার এবং কিডনির ক্ষতি করে এমন জিনিসগুলি এড়িয়ে চলা খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং আপনার যদি ইতিমধ্যেই কোনও স্বাস্থ্য সমস্যা আপনাকে বিরক্ত করে, তবে এই জিনিসগুলি থেকে দূরে থাকাই ভালো।
আরও পড়ুনঃ জোয়ান এর উপকারিতা ও অপকারিতা
8. চিন্তা না করে ওষুধ খাবেন না
বেশিরভাগ মানুষের অভ্যাস আছে যে তারা চিন্তা না করেই যে কোনো ওষুধ খাওয়া শুরু করে দেন। মাথাব্যথার জন্য ব্রুফেন এবং অন্যান্য অনুরূপ ব্যথানাশক বা অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়ার কথা ভাবুন যা ঠিক নয়। এই ধরনের ওষুধ কিডনির উপর একটি ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। তাই ডাক্তার এর পরামর্শ নিয়ে সঠিক ওষুধ খান।
9. 30 মিনিট ব্যায়াম অপরিহার্য
আপনাকে অবশ্যই দিনে 30 মিনিটের জন্য যেকোনো ধরনের ব্যায়াম করতে হবে। এটি আপনার রক্তে শর্করার মাত্রা এবং রক্তচাপকেও উপকৃত করবে। আপনি যদি ব্যায়াম পছন্দ না করেন তবে 30 মিনিটের জন্য হাঁটুন। এটি আপনার জন্য উপকারী হবে।
আরও পড়ুনঃ তুলসী পাতার চা এর উপকারিতা
আজকের এই স্বাস্থ্য মূলক প্রতিবেদনটি যদি আপনার ভালো লেগে থাকে, তাহলে বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন। প্রতিদিন এরকম বিভিন্ন বিষয়ের প্রতিবেদন পেতে এবং আমাদের সঙ্গে যুক্ত থাকতে আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেল জয়েন করুন।
আরও পড়ুনঃ
কখনও কী ভেবে দেখেছেন কেন সারা বিশ্বে স্কুল বাসের রং হলুদ হয়?
জানেন কী, ট্রাক্টরের পেছনের চাকা বড়ো আর সামনের চাকা ছোটো কেন?
0 Comments