পাশ বদলাতে বদলাতে বিরক্ত? মাত্র 2 মিনিটে ঘুমিয়ে পড়তে এই টিপসগুলি করবে বাজিমাত!

পাশ বদলাতে বদলাতে বিরক্ত? মাত্র 2 মিনিটে ঘুমিয়ে পড়তে এই টিপসগুলি করবে বাজিমাত! Home Remedies: আজকাল মানুষ অনেক কাজকর্মের সঙ্গে যুক্ত থাকে, সারাদিন জুড়ে নানারকমের পরিশ্রম করে। এবং চায় রাতে একটা ভালো ঘুম দিতে, কিন্তু বিভিন্ন কারনে পাশ বদলানো সার হয় ঘুম আর আসেনা। আপনারও যদি এরকম অবস্থা হয়ে থাকে তাহলে kolkatacorner -এর আজকের এই প্রতিবেদনটি সম্পূর্ণভাবে আপনার জন্য। আপনিও যদি রাতে ঘুমোতে না পারছেন তাহলে আমাদের এই প্রতিবেদনটি শেষ পর্যন্ত পড়ুন, এবং প্রতিবেদনে উল্লিখিত টিপসগুলি অনুসরণ করুন। এই টিপসগুলি খুবই কার্যকর, আপনি নিশ্চয়ই উপকার পাবেন। তাহলে চলুন শুরু করা যাক।  তাড়াতাড়ি ঘুমোতে অনুসরণ করুন এই টিপসগুলি    প্রায়শই মানুষের এই সমস্যা হয় যে তারা রাতে ঘুমাতে পারে না, সারাদিনের ক্লান্তির পরও অনেকেই পাশ বদলাতে থাকেন। সারাদিনের পরিশ্রমের পর মনে হয় যেন মিনিটেই ঘুম চলে আসে কিন্তু সে আর হয়ে ওঠেনা। তাই মাত্র 2 মিনিটে ঘুমিয়ে পড়তে নিম্নে উল্লেখ করা টিপসগুলি অনুসরণ করুন।  আজকের এই প্রতিবেদনে আমরা আপনাকে ঘুমের সবচেয়ে কার্যকরী 5 টি উপায় সম্পর্কে বলবো, যার মধ্যে রয়েছে 3 টি দ্রুত ঘুমের কৌশল, ভালো ঘুমের টিপস এবং চিকিৎসা পরামর্শ ইত্যাদি। আরও পড়ুনঃ সারাদিন খুব বেশি ঘুমোচ্ছেন? শরীরে হচ্ছে এইসব অসুবিধা! জেনে নিন বেশি ঘুম এড়ানোর উপায়   1. আমেরিকান মিলিটারির পদ্ধতি 'আমেরিকান মিলিটারির পদ্ধতি', নামটি শুনেই বুঝতে পারছেন যে আমেরিকার সেনাবাহিনী এই পদ্ধতি ব্যবহার করে থাকে। এবং আমরা সবাই এটা জানি যে, যেকোনো সেনাবাহিনীর কোনো কাজ শুধু শুধু শুরু হয়না, তার পেছনে থাকে দীর্ঘ পরীক্ষা।  1981 সালে মার্কিন নৌবাহিনী তার পাইলটদের জন্য এই পদ্ধতিটি তৈরি করেছে, যাতে পাইলটরা মাত্র 2 মিনিট বা তার কম সময়ে ঘুমিয়ে পড়তে পারে। ছয় সপ্তাহের অনুশীলনের পর এই পদ্ধতিটি এমন নিশ্চিত হয়ে যেত, যে যুদ্ধে বোমা হামলার আওয়াজেও সেনারা ঘুমিয়ে পড়তেন। সামরিক পদ্ধতিটি করতে, প্রথমে আপনার সমস্ত পেশী শিথিল করুন। পাশাপাশি মুখের ভিতরে জিহ্বা এবং ঠোঁটকে শান্ত করুন অর্থাৎ একটি স্বাভাবিক অবস্থায় রাখুন। কাঁধ আলগা ছেড়ে পাশের হাত ছড়িয়ে দিন। সম্পূর্ণরূপে শ্বাস ছাড়ুন এবং বুক শান্ত করুন। প্রথমে বিছানায় শুয়ে পড়ার পর মাথা থেকে পায়ের পাতা পর্যন্ত রিল্যাক্স করতে হবে আপনাকে। কপালের মাসল থেকে শুরু করে শরীরে একেবারে পায়ের পাতা পর্যন্ত এই রিল্যাক্স করার কাজ করতে হবে। মাথাটা একে বারে পরিস্কার করে ফেলতে হবে 10 সেকেন্ডের মধ্যে। যদি মনে হয় তবুও মাথায় ক্রমাগত নানা ভাবনাচিন্তা ভিড় করে আসে, তাহলে মাথাটা পরিষ্কার করে ফেলতে বারবার আওড়াতে পারেন 'ডোন্ট থিঙ্ক' শব্দবন্ধ। এই ঘুমের জন্য মাথায় রাখতে হবে, আপনাকে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে আপনার শ্বাস প্রক্রিয়া। শরীরকে রিল্যাক্স করা একান্ত প্রয়োজন। শরীর ও চেতনাকে শান্তি দেওয়াও একান্ত প্রয়োজন। এটি আপনাকে পরবর্তী 10 সেকেন্ডের মধ্যে ঘুমিয়ে পড়তে বাধ্য করবে। আপনি এই কৌশলটি যত বেশি অনুশীলন করবেন, তত বেশি আপনি এটির উপকারিতা পাবেন। এই কৌশলে আপনি আপনার শরীরকে যত বেশি শিথিল করবেন, আপনার ঘুমিয়ে পড়ার সম্ভাবনা তত বেশি। হ্যাঁ উপরে উল্লিখিত হিসাবে অনুশীলন করতে কয়েক দিন সময় লাগতে পারে। 2. ডঃ অ্যান্ড্রু ওয়েইলের ঘুমের শ্বাস-প্রশ্বাসের কৌশল এই কৌশলকে 4-7-8 শ্বাসের কৌশলও বলা হয়। এই কৌশলটি শেখা এবং করা খুব সহজ। 4-7-8 শ্বাসের এই কৌশলটি ড. অ্যান্ড্রু ওয়েইল একজন সুস্থ অনুশীলনকারী দ্বারা আবিষ্কার করেছন। এরজন্য আপনাকে যা করতে হবে তা হল, বিছানায় শুয়ে 4 সেকেন্ডের জন্য আপনার নাক দিয়ে শ্বাস নিতে হবে, তারপর 7 সেকেন্ডের জন্য শ্বাস আটকে রাখতে হবে এবং অবশেষে 8 সেকেন্ডের জন্য মুখ দিয়ে শ্বাস ছাড়তে হবে। এমন কৌশল অবলম্বন করলে হৃদস্পন্দন কিছুটা কমে যায় এবং মস্তিষ্ককে শিথিল করে একপ্রকার হরমোন নিঃসৃত হয়। এই শ্বাস-প্রশ্বাসের পদ্ধতিটি শরীরের মেলাটোনিন হরমোনের প্রাকৃতিক উৎপাদনকে উন্নতি করে এবং হৃদস্পন্দন স্বয়ংক্রিয়ভাবে হ্রাস পায়। একবার বা দুবার অনুশীলন করার পরে, আপনিও এই শ্বাস-প্রশ্বাসের কৌশলটি দিয়ে ঘুম সম্পর্কিত সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পারেন। 3. ঘুমের Paradoxical Intention দেখা গেছে, যাদের ঘুমের সমস্যা হয় তারা দুশ্চিন্তায় থাকেন আজকে আমি ঘুমাবো কিনা? এই অস্থিরতা ঘুমিয়ে পড়ার সমস্যাকে আরও বাড়িয়ে দেয়। 'Paradoxical Intention' এর পদ্ধতি এই ধরনের লোকদের জন্য কাজ করে। এতে আপনাকে ভাবতে হবে যে আমাকে ঘুমাতে হবে না, আমাকে জেগে থাকতে হবে। দেখা গেছে, যাদের ঘুমের সমস্যা আছে তাদের জন্য শ্বাস-প্রশ্বাসের কৌশলের চেয়ে ঘুমানোর এই পদ্ধতি বেশি কার্যকর। আরও পড়ুনঃ মেথি গুঁড়োতেই হবে বাজিমাত! জেনে নিন উপকারিতা ও বানানোর পদ্ধতি 4. ঘরের তাপমাত্রা কম রাখুন আপনার ঘরের তাপমাত্রা বেশি হলে ঘুম না আসার সমস্যা হতে পারে। বিজ্ঞানীরা দেখেছেন, যে ঘরের তাপমাত্রা 15 থেকে 25 ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডের মধ্যে রাখলে ঘুম ভালো হয়। আপনি নিশ্চয়ই দেখেছেন যে এসির ঘরে ঘুম এবং অলসতা আসতে শুরু করে। শীতের মরশুমে ঘুমের অভাবের সমস্যাও কমে যায়। ঘুমানোর আগে হালকা গরম জল দিয়ে স্নান করা শরীরের তাপমাত্রাকেও প্রভাবিত করে। এ পরে, যখন শরীর শিথিল এবং শীতল হয়, তখন মস্তিষ্ক ঘুমের মোডে আসতে শুরু করে। 5. এমন জিনিস খান যা আপনার ঘুম ভালো করে ঘুমাতে না পারলে এমন খাবার খান, যা ঘুম নিয়ে আসতে সাহায্য করে। ক্যামোমাইল চা, মাছ, বাদাম, আখরোট, সাদা ভাত, হালকা গরম দুধ পান, কলা, পনির, ওটস ইত্যাদি এমন জিনিস, যা খেলে মন ও শরীর শিথিল হয় এবং ঘুম শুরু হয়। নিদ্রাহীনতার জন্য আয়ুর্বেদিক ওষুধ ব্যবহার করুন।  আরও পড়ুনঃ মাথায় চুলকানির সমস্যা কিংবা শরীরের ফুসকুড়ি, এইরকম ৬ টি সমস্যায় ব্যবহার করুন কর্পূর   ঘুমিয়ে পড়ার সহজ টিপস এরপরেও যদি ঘুম না আসে তাহলে কি করবো? এরকম ধরণের প্রশ্নও যদি আপনাদের মনে আসছে তাহলে নিম্নের টিপসগুলি অনুসরণ করুন- নিয়মিত ঘুমানো এবং ঘুম থেকে ওঠার সময় নিশ্চিত করুন। 3 সপ্তাহের জন্য, আপনি যখন ঘুমানো এবং ঘুম থেকে ওঠার সঠিক সময় অনুসরণ করবেন, তখন ধীরে ধীরে আপনার মস্তিষ্ক স্বয়ংক্রিয়ভাবে আপনার ঘুমের সময় ঘুমিয়ে পড়ার লক্ষণগুলি দিতে শুরু করবে। ঘন অন্ধকার মস্তিষ্কের শরীরের ঘড়িতে সংকেত দেয় যে এটি ঘুমানোর সময়। একইভাবে, আলো মস্তিষ্ককে জেগে ওঠার সংকেত দেয়। আপনার ঘর সম্পূর্ণ অন্ধকার রাখার চেষ্টা করুন। মনে রাখবেন, ঘরে পরিষ্কার বাতাস মনকে হালকা ও শিথিল করতে সাহায্য করে। প্রতিদিন যোগাসন ও ধ্যান করলে মনের অশান্তি থেকে শান্তি পাওয়া যায়। বর্তমান সময়ে মানসিক চাপ, বিষণ্ণতা ঘুম না আসার একটি বড়ো কারণ। যোগব্যায়াম, ধ্যান, মননশীলতা মস্তিষ্কের কাজ করার পদ্ধতিকে উন্নত করে, যা নিদ্রাহীনতার সমস্যাও নিরাময় করে। রাত জেগে থাকলেও বারবার ঘড়ির দিকে তাকাবেন না। এই কার্যকলাপগুলি ঘুমিয়ে পড়া কঠিন করে তোলে। ঘুমের ঘরে ঘড়ি এমনভাবে সেট করা উচিত নয় যাতে আপনার মন, ঘুমের অভাবে অশান্ত হয়ে বারবার ঘড়ির দিকে তাকায়। ঘুম বিশেষজ্ঞরা এই জিনিসটি এড়িয়ে চলতে বলেন। বারবার ঘড়ি দেখা মনকে ব্যাকুল করে তোলে। দিনের বেলা ঘুমানো এড়িয়ে চলুন। 30-45 মিনিট ঘুমানো ভালো, তবে দিনে 2 ঘন্টা বা তার বেশি ঘুমালে রাতে ঘুমের সমস্যা হয়। শোবার 4 ঘন্টা আগে উচ্চ কার্বোহাইড্রেটযুক্ত খাবার খান।  আরও পড়ুনঃ শরীরে এই ৫ টি ভিটামিনের অভাবে রাতে ঘুম হয় না আরও কিছু ছোটো ছোটো উপায় রয়েছে যেগুলি মেনে চললে ঘুমিয়ে পড়া সহজ হতে পারে- বিছানার চাদর পরিষ্কার করুন শোবার আগে শিথিল, শান্ত গান শোনা প্রতিদিন খাওয়ার পর বজ্রাসন করা ঘুমানোর সময় মোবাইল বা যেকোনোরকম গ্যাজেট থেকে দূরে থাকা বেডরুমে অ্যারোমাথেরাপি ব্যবহার করা দিনে এবং সন্ধ্যায় চা এবং কফি কম পান করা ঘুমানোর আগে হাত-পা ধুয়ে নিন ঘুমের চিকিৎসা পরামর্শ মানুষ ওষুধ দোকান থেকে ঘুমের ট্যাবলেট খাওয়াকে না ঘুম আসার সমাধান মনে করে, কিন্তু ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া ঘুমের ওষুধ সেবনে অসুবিধা হতে পারে। বেশিরভাগ ঘুমের ট্যাবলেট বা বড়ি এমন, যেগুলো আপনাকে তাড়াতাড়ি এবং ভালো ঘুম দিতে সাহায্য করে কিন্তু পরের দিন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া যেমন মাথাব্যথা, চরম অলসতা, তন্দ্রাভাব, স্বপ্নদোষ, ভারী মাথাধরা, শুষ্ক মুখ, পেট খারাপ হতে পারে। অতিরিক্ত ঘুমের বড়ি খেলে মস্তিষ্কে খারাপ প্রভাব পড়ে বা কিছু ক্ষেত্রে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। সবচেয়ে ভালো উপায় হলো ঘুমের ওষুধ না খেয়ে স্বাভাবিকভাবে ঘুমিয়ে পড়া। সম্পূর্ণরূপে ঘুমের ট্যাবলেটের উপর নির্ভরশীল হওয়া ঘুমহীনতার সমস্যাকে আরও বাড়িয়ে তোলে। কয়েকদিন ঘুম না হলে প্রথমে একজন জেনারেল ফিজিশিয়ানের পরামর্শ নিন। তিনি আপনাকে বলবেন কখন আপনার একজন নিউরোলজিস্ট, সাইকোলজিস্ট, সাইকিয়াট্রিস্ট বা স্লিপ স্পেশালিস্টকে দেখানো উচিত। আরও পড়ুনঃ ঘুম থেকে ওঠার সঠিক সময় জানেন কি? আজকাল বয়স্কদের পাশাপাশি যুবক-যুবতীদেরও এইরকম ঘুমের সমস্যা সাধারণ হয়ে উঠেছে। এই ঘুম না আসার সমস্যার কারণে শিক্ষার্থীরা তাদের দৈনন্দিন জীবন গুছিয়ে নিতে পারছেনা। তাই আমাদের আজকের এই প্রতিবেদনটি হোয়াটসঅ্যাপ, ফেসবুকে আপনার বন্ধু এবং পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন। যাতে তারাও এই উপায়গুলো অবলন্বন করে রাতে খুব তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়তে পারে।  এইরকম আরও প্রতিবেদন পেতে আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেল জয়েন করুন। আরও পড়ুনঃ  পুদিনা পাতার চা এর উপকারিতা তুলসী পাতার চা এর উপকারিতা

পাশ বদলাতে বদলাতে বিরক্ত? মাত্র 2 মিনিটে ঘুমিয়ে পড়তে এই টিপসগুলি করবে বাজিমাত!

Home Remedies: আজকাল মানুষ অনেক কাজকর্মের সঙ্গে যুক্ত থাকে, সারাদিন জুড়ে নানারকমের পরিশ্রম করে। এবং চায় রাতে একটা ভালো ঘুম দিতে, কিন্তু বিভিন্ন কারনে পাশ বদলানো সার হয় ঘুম আর আসেনা। আপনারও যদি এরকম অবস্থা হয়ে থাকে তাহলে kolkatacorner -এর আজকের এই প্রতিবেদনটি সম্পূর্ণভাবে আপনার জন্য। আপনিও যদি রাতে ঘুমোতে না পারছেন তাহলে আমাদের এই প্রতিবেদনটি শেষ পর্যন্ত পড়ুন, এবং প্রতিবেদনে উল্লিখিত টিপসগুলি অনুসরণ করুন। এই টিপসগুলি খুবই কার্যকর, আপনি নিশ্চয়ই উপকার পাবেন। তাহলে চলুন শুরু করা যাক। 

তাড়াতাড়ি ঘুমোতে অনুসরণ করুন এই টিপসগুলি   

প্রায়শই মানুষের এই সমস্যা হয় যে তারা রাতে ঘুমাতে পারে না, সারাদিনের ক্লান্তির পরও অনেকেই পাশ বদলাতে থাকেন। সারাদিনের পরিশ্রমের পর মনে হয় যেন মিনিটেই ঘুম চলে আসে কিন্তু সে আর হয়ে ওঠেনা। তাই মাত্র 2 মিনিটে ঘুমিয়ে পড়তে নিম্নে উল্লেখ করা টিপসগুলি অনুসরণ করুন। 

আজকের এই প্রতিবেদনে আমরা আপনাকে ঘুমের সবচেয়ে কার্যকরী 5 টি উপায় সম্পর্কে বলবো, যার মধ্যে রয়েছে 3 টি দ্রুত ঘুমের কৌশল, ভালো ঘুমের টিপস এবং চিকিৎসা পরামর্শ ইত্যাদি।

আরও পড়ুনঃ সারাদিন খুব বেশি ঘুমোচ্ছেন? শরীরে হচ্ছে এইসব অসুবিধা! জেনে নিন বেশি ঘুম এড়ানোর উপায়  

1. আমেরিকান মিলিটারির পদ্ধতি

'আমেরিকান মিলিটারির পদ্ধতি', নামটি শুনেই বুঝতে পারছেন যে আমেরিকার সেনাবাহিনী এই পদ্ধতি ব্যবহার করে থাকে। এবং আমরা সবাই এটা জানি যে, যেকোনো সেনাবাহিনীর কোনো কাজ শুধু শুধু শুরু হয়না, তার পেছনে থাকে দীর্ঘ পরীক্ষা। 

1981 সালে মার্কিন নৌবাহিনী তার পাইলটদের জন্য এই পদ্ধতিটি তৈরি করেছে, যাতে পাইলটরা মাত্র 2 মিনিট বা তার কম সময়ে ঘুমিয়ে পড়তে পারে। ছয় সপ্তাহের অনুশীলনের পর এই পদ্ধতিটি এমন নিশ্চিত হয়ে যেত, যে যুদ্ধে বোমা হামলার আওয়াজেও সেনারা ঘুমিয়ে পড়তেন।

সামরিক পদ্ধতিটি করতে, প্রথমে আপনার সমস্ত পেশী শিথিল করুন। পাশাপাশি মুখের ভিতরে জিহ্বা এবং ঠোঁটকে শান্ত করুন অর্থাৎ একটি স্বাভাবিক অবস্থায় রাখুন। কাঁধ আলগা ছেড়ে পাশের হাত ছড়িয়ে দিন। সম্পূর্ণরূপে শ্বাস ছাড়ুন এবং বুক শান্ত করুন।

প্রথমে বিছানায় শুয়ে পড়ার পর মাথা থেকে পায়ের পাতা পর্যন্ত রিল্যাক্স করতে হবে আপনাকে। কপালের মাসল থেকে শুরু করে শরীরে একেবারে পায়ের পাতা পর্যন্ত এই রিল্যাক্স করার কাজ করতে হবে। মাথাটা একে বারে পরিস্কার করে ফেলতে হবে 10 সেকেন্ডের মধ্যে।

যদি মনে হয় তবুও মাথায় ক্রমাগত নানা ভাবনাচিন্তা ভিড় করে আসে, তাহলে মাথাটা পরিষ্কার করে ফেলতে বারবার আওড়াতে পারেন 'ডোন্ট থিঙ্ক' শব্দবন্ধ।

এই ঘুমের জন্য মাথায় রাখতে হবে, আপনাকে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে আপনার শ্বাস প্রক্রিয়া। শরীরকে রিল্যাক্স করা একান্ত প্রয়োজন। শরীর ও চেতনাকে শান্তি দেওয়াও একান্ত প্রয়োজন।

এটি আপনাকে পরবর্তী 10 সেকেন্ডের মধ্যে ঘুমিয়ে পড়তে বাধ্য করবে। আপনি এই কৌশলটি যত বেশি অনুশীলন করবেন, তত বেশি আপনি এটির উপকারিতা পাবেন। এই কৌশলে আপনি আপনার শরীরকে যত বেশি শিথিল করবেন, আপনার ঘুমিয়ে পড়ার সম্ভাবনা তত বেশি। হ্যাঁ উপরে উল্লিখিত হিসাবে অনুশীলন করতে কয়েক দিন সময় লাগতে পারে।

পাশ বদলাতে বদলাতে বিরক্ত? মাত্র 2 মিনিটে ঘুমিয়ে পড়তে এই টিপসগুলি করবে বাজিমাত!

2. ডঃ অ্যান্ড্রু ওয়েইলের ঘুমের শ্বাস-প্রশ্বাসের কৌশল

এই কৌশলকে 4-7-8 শ্বাসের কৌশলও বলা হয়। এই কৌশলটি শেখা এবং করা খুব সহজ। 4-7-8 শ্বাসের এই কৌশলটি ড. অ্যান্ড্রু ওয়েইল একজন সুস্থ অনুশীলনকারী দ্বারা আবিষ্কার করেছন।

এরজন্য আপনাকে যা করতে হবে তা হল, বিছানায় শুয়ে 4 সেকেন্ডের জন্য আপনার নাক দিয়ে শ্বাস নিতে হবে, তারপর 7 সেকেন্ডের জন্য শ্বাস আটকে রাখতে হবে এবং অবশেষে 8 সেকেন্ডের জন্য মুখ দিয়ে শ্বাস ছাড়তে হবে। এমন কৌশল অবলম্বন করলে হৃদস্পন্দন কিছুটা কমে যায় এবং মস্তিষ্ককে শিথিল করে একপ্রকার হরমোন নিঃসৃত হয়। এই শ্বাস-প্রশ্বাসের পদ্ধতিটি শরীরের মেলাটোনিন হরমোনের প্রাকৃতিক উৎপাদনকে উন্নতি করে এবং হৃদস্পন্দন স্বয়ংক্রিয়ভাবে হ্রাস পায়। একবার বা দুবার অনুশীলন করার পরে, আপনিও এই শ্বাস-প্রশ্বাসের কৌশলটি দিয়ে ঘুম সম্পর্কিত সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পারেন।

3. ঘুমের Paradoxical Intention

দেখা গেছে, যাদের ঘুমের সমস্যা হয় তারা দুশ্চিন্তায় থাকেন আজকে আমি ঘুমাবো কিনা? এই অস্থিরতা ঘুমিয়ে পড়ার সমস্যাকে আরও বাড়িয়ে দেয়। 'Paradoxical Intention' এর পদ্ধতি এই ধরনের লোকদের জন্য কাজ করে। এতে আপনাকে ভাবতে হবে যে আমাকে ঘুমাতে হবে না, আমাকে জেগে থাকতে হবে। দেখা গেছে, যাদের ঘুমের সমস্যা আছে তাদের জন্য শ্বাস-প্রশ্বাসের কৌশলের চেয়ে ঘুমানোর এই পদ্ধতি বেশি কার্যকর।

আরও পড়ুনঃ মেথি গুঁড়োতেই হবে বাজিমাত! জেনে নিন উপকারিতা ও বানানোর পদ্ধতি

4. ঘরের তাপমাত্রা কম রাখুন

আপনার ঘরের তাপমাত্রা বেশি হলে ঘুম না আসার সমস্যা হতে পারে। বিজ্ঞানীরা দেখেছেন, যে ঘরের তাপমাত্রা 15 থেকে 25 ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডের মধ্যে রাখলে ঘুম ভালো হয়।

আপনি নিশ্চয়ই দেখেছেন যে এসির ঘরে ঘুম এবং অলসতা আসতে শুরু করে। শীতের মরশুমে ঘুমের অভাবের সমস্যাও কমে যায়। ঘুমানোর আগে হালকা গরম জল দিয়ে স্নান করা শরীরের তাপমাত্রাকেও প্রভাবিত করে। এ পরে, যখন শরীর শিথিল এবং শীতল হয়, তখন মস্তিষ্ক ঘুমের মোডে আসতে শুরু করে।

5. এমন জিনিস খান যা আপনার ঘুম ভালো করে

ঘুমাতে না পারলে এমন খাবার খান, যা ঘুম নিয়ে আসতে সাহায্য করে।

ক্যামোমাইল চা, মাছ, বাদাম, আখরোট, সাদা ভাত, হালকা গরম দুধ পান, কলা, পনির, ওটস ইত্যাদি এমন জিনিস, যা খেলে মন ও শরীর শিথিল হয় এবং ঘুম শুরু হয়। নিদ্রাহীনতার জন্য আয়ুর্বেদিক ওষুধ ব্যবহার করুন। 

আরও পড়ুনঃ মাথায় চুলকানির সমস্যা কিংবা শরীরের ফুসকুড়ি, এইরকম ৬ টি সমস্যায় ব্যবহার করুন কর্পূর  

ঘুমিয়ে পড়ার সহজ টিপস

এরপরেও যদি ঘুম না আসে তাহলে কি করবো? এরকম ধরণের প্রশ্নও যদি আপনাদের মনে আসছে তাহলে নিম্নের টিপসগুলি অনুসরণ করুন-

  • নিয়মিত ঘুমানো এবং ঘুম থেকে ওঠার সময় নিশ্চিত করুন। 3 সপ্তাহের জন্য, আপনি যখন ঘুমানো এবং ঘুম থেকে ওঠার সঠিক সময় অনুসরণ করবেন, তখন ধীরে ধীরে আপনার মস্তিষ্ক স্বয়ংক্রিয়ভাবে আপনার ঘুমের সময় ঘুমিয়ে পড়ার লক্ষণগুলি দিতে শুরু করবে।
  • ঘন অন্ধকার মস্তিষ্কের শরীরের ঘড়িতে সংকেত দেয় যে এটি ঘুমানোর সময়। একইভাবে, আলো মস্তিষ্ককে জেগে ওঠার সংকেত দেয়। আপনার ঘর সম্পূর্ণ অন্ধকার রাখার চেষ্টা করুন।
  • মনে রাখবেন, ঘরে পরিষ্কার বাতাস মনকে হালকা ও শিথিল করতে সাহায্য করে।
  • প্রতিদিন যোগাসন ও ধ্যান করলে মনের অশান্তি থেকে শান্তি পাওয়া যায়। বর্তমান সময়ে মানসিক চাপ, বিষণ্ণতা ঘুম না আসার একটি বড়ো কারণ। যোগব্যায়াম, ধ্যান, মননশীলতা মস্তিষ্কের কাজ করার পদ্ধতিকে উন্নত করে, যা নিদ্রাহীনতার সমস্যাও নিরাময় করে।
  • রাত জেগে থাকলেও বারবার ঘড়ির দিকে তাকাবেন না। এই কার্যকলাপগুলি ঘুমিয়ে পড়া কঠিন করে তোলে।
  • ঘুমের ঘরে ঘড়ি এমনভাবে সেট করা উচিত নয় যাতে আপনার মন, ঘুমের অভাবে অশান্ত হয়ে বারবার ঘড়ির দিকে তাকায়। ঘুম বিশেষজ্ঞরা এই জিনিসটি এড়িয়ে চলতে বলেন। বারবার ঘড়ি দেখা মনকে ব্যাকুল করে তোলে।
  • দিনের বেলা ঘুমানো এড়িয়ে চলুন। 30-45 মিনিট ঘুমানো ভালো, তবে দিনে 2 ঘন্টা বা তার বেশি ঘুমালে রাতে ঘুমের সমস্যা হয়।
  • শোবার 4 ঘন্টা আগে উচ্চ কার্বোহাইড্রেটযুক্ত খাবার খান। 

পাশ বদলাতে বদলাতে বিরক্ত? মাত্র 2 মিনিটে ঘুমিয়ে পড়তে এই টিপসগুলি করবে বাজিমাত!

আরও পড়ুনঃ শরীরে এই ৫ টি ভিটামিনের অভাবে রাতে ঘুম হয় না

আরও কিছু ছোটো ছোটো উপায় রয়েছে যেগুলি মেনে চললে ঘুমিয়ে পড়া সহজ হতে পারে-

  • বিছানার চাদর পরিষ্কার করুন
  • শোবার আগে শিথিল, শান্ত গান শোনা
  • প্রতিদিন খাওয়ার পর বজ্রাসন করা
  • ঘুমানোর সময় মোবাইল বা যেকোনোরকম গ্যাজেট থেকে দূরে থাকা
  • বেডরুমে অ্যারোমাথেরাপি ব্যবহার করা
  • দিনে এবং সন্ধ্যায় চা এবং কফি কম পান করা
  • ঘুমানোর আগে হাত-পা ধুয়ে নিন

ঘুমের চিকিৎসা পরামর্শ

  • মানুষ ওষুধ দোকান থেকে ঘুমের ট্যাবলেট খাওয়াকে না ঘুম আসার সমাধান মনে করে, কিন্তু ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া ঘুমের ওষুধ সেবনে অসুবিধা হতে পারে।
  • বেশিরভাগ ঘুমের ট্যাবলেট বা বড়ি এমন, যেগুলো আপনাকে তাড়াতাড়ি এবং ভালো ঘুম দিতে সাহায্য করে কিন্তু পরের দিন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া যেমন মাথাব্যথা, চরম অলসতা, তন্দ্রাভাব, স্বপ্নদোষ, ভারী মাথাধরা, শুষ্ক মুখ, পেট খারাপ হতে পারে।
  • অতিরিক্ত ঘুমের বড়ি খেলে মস্তিষ্কে খারাপ প্রভাব পড়ে বা কিছু ক্ষেত্রে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।
  • সবচেয়ে ভালো উপায় হলো ঘুমের ওষুধ না খেয়ে স্বাভাবিকভাবে ঘুমিয়ে পড়া। সম্পূর্ণরূপে ঘুমের ট্যাবলেটের উপর নির্ভরশীল হওয়া ঘুমহীনতার সমস্যাকে আরও বাড়িয়ে তোলে।
  • কয়েকদিন ঘুম না হলে প্রথমে একজন জেনারেল ফিজিশিয়ানের পরামর্শ নিন। তিনি আপনাকে বলবেন কখন আপনার একজন নিউরোলজিস্ট, সাইকোলজিস্ট, সাইকিয়াট্রিস্ট বা স্লিপ স্পেশালিস্টকে দেখানো উচিত।

আরও পড়ুনঃ ঘুম থেকে ওঠার সঠিক সময় জানেন কি?

আজকাল বয়স্কদের পাশাপাশি যুবক-যুবতীদেরও এইরকম ঘুমের সমস্যা সাধারণ হয়ে উঠেছে। এই ঘুম না আসার সমস্যার কারণে শিক্ষার্থীরা তাদের দৈনন্দিন জীবন গুছিয়ে নিতে পারছেনা। তাই আমাদের আজকের এই প্রতিবেদনটি হোয়াটসঅ্যাপ, ফেসবুকে আপনার বন্ধু এবং পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন। যাতে তারাও এই উপায়গুলো অবলন্বন করে রাতে খুব তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়তে পারে।

এইরকম আরও প্রতিবেদন পেতে আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেল জয়েন করুন।

Join Our Telegram Channel Click Here

আরও পড়ুনঃ 

পুদিনা পাতার চা এর উপকারিতা

তুলসী পাতার চা এর উপকারিতা

Post a Comment

0 Comments