শিবরাত্রি কেন পালন করা হয়? | শিবরাত্রি ব্রত পালনের নিয়ম | শিবরাত্রি পূজা পদ্ধতি

শিবরাত্রি পূজা

শিবরাত্রি পূজা

শিবরাত্রি করবেন?‌ জেনে নিন পুজোর দিনক্ষণ, নিয়ম, তাৎপর্য এক ঝলকে

'শিব' কথার অর্থ হল কল্যাণকারী অর্থাৎ জগতের প্রতি কল্যান করেন যিনি। কথিত আছে মনুষ্য জগতের পাশাপাশি, ভুত-প্রেত, পশুপাখি দ্বারা ভগবান শিব পূজিত হন বলে তিনি দেবাদিদেব মহাদেব নামে পরিচিত। শিবলিঙ্গ অর্থাৎ কল্যাণকারী চিহ্ন। বৈদিক মন্ত্রে ভগবান শিবই জগতের ঈশ্বর। পৌরাণিক তন্ত্রে ইনিই 'ঈশান' নামে পরিচিত। চলুন এবার জেনে নেওয়া যাক মহা শিবরাত্রি কী? মহা শিবরাত্রি পালনের কিছু ব্যাখ্যা, শিবরাত্রি ব্রত কথা, উপকরণশিবরাত্রি কেন পালন করা হয়, শিবরাত্রি পূজা পদ্ধতি ও শিবরাত্রির মন্ত্র

আমরা সবাই শিবরাত্রি বা শিবরাত্রি ব্রতের কথা জানি। সারা ভারতে ও ভারতের বাইরেও (অর্থাৎ প্রবাসী ভারতীয়) এই শিব পূজো বা মহা শিবরাত্রি প্রথার প্রচলন আছে। যেকোনো মাসের চতুর্দশী তিথিকেই শিবরাত্রি বলা হয়। এই হিসেবে প্রতি মাসে একটি এবং বছরে বারোটি শিবরাত্রি আসে। কিন্তু সবচেয়ে বেশি গণ্য ও পবিত্র হল ফাল্গুন মাসের কৃষ্ণপক্ষের চতুর্দশী তিথি। মূলত শিবরাত্রি বলতে ফাল্গুন মাসের 

কৃষ্ণপক্ষের এই চতুর্দশী তিথিকেই বোঝানো হয়। সারা ভারতবর্ষের কোটি কোটি মানুষ এই রাতে ভগবান শিবের পূজার্চনা করে থাকেন। মঙ্গলময়ী ও পবিত্র শিবরাত্রির এই প্রথা কমবেশি ১৫০-২০০ বছর ধরে পালিত হয়ে আসছে। অষ্টাদশ শতকে লেখা বিভিন্ন উল্লেখযোগ্য গ্রন্থে শিবরাত্রি ব্রতের কথা পাওয়া যায়। তবে অষ্টাদশ শতকের আগেও শিবরাত্রির ব্রত পালন করা হতো কিনা তার কোনো সঠিক তথ্য এখনও পাওয়া যায়নি। তবে একথা দৃঢ় বিশ্বাস রেখে বলা যায় যে, আবহমানকাল ধরে এই শিবরাত্রি ব্রত পালিত হয়ে আসছে। চারটি বেদের একটি অন্যতম 'অথর্ব বেদে'ও শিব ব্রতের কথা উল্লেখ আছে।

আরও পড়ুনঃ জেনে নিন কোন শাক-সব্জি খেলে সারবে কোন রোগ

প্রাচীন সভ্যতা মহেঞ্জোদারোতে শিবলিঙ্গ পাওয়া গেছে। দেবী পার্বতীর এক প্রশ্নের উত্তরে ভগবান শিব  বলেন যে, "আমাকে স্নান করানো, পূজার্চনা করা, বস্ত্র দেওয়াতে আমি যতটা না খুশি হই তার থেকে বেশি খুশি হই মনুষ্য জগতের অর্থাৎ পৃথিবীবাসীর ফাল্গুন মাসের চতুর্দশী তিথির এই ব্রত পালনে"। ভগবান শিবের কাছে মহা শিবরাত্রির এই দিনটি খুবই প্রিয়। ভগবান শিব বলেন এক বছর নিরন্তর পুজো করে যে ফল লাভ হয়, মহা শিবরাত্রিতে দিনরাত নিরাহারে ও  জিতেন্দ্রিয় থেকে নিজের ক্ষমতা অনুসারে পুজো করলে একই ফল লাভ হয়। এই রাত সবথেকে অন্ধকার হয়। শিবরাত্রিতে শিব পার্বতীকে বিবাহ করেছিলেন(পুরানে উল্লেখ্য)। এই ব্রত পালনের মাধ্যমে ধর্ম, অর্থ, কাম, মোক্ষ লাভ হয়। হিন্দুধর্মে পালনকারী যত ব্রত রয়েছে তাদের মধ্যে অন্যতম ও শ্রেষ্ঠ ব্রত  হল শিব চতুর্দশী বা মহা শিবরাত্রি ব্রত।

আরও পড়ুনঃ ডায়াবেটিস রোগীর জন্য কিনবেন কোন ফল?

ফাল্গুন মাসের কৃষ্ণপক্ষের চতুর্দশী তিথিতে পালিত শিব চতুর্দশী ব্রত বা মহা শিবরাত্রি পালনের পেছনে অনেক পৌরাণিক তত্ত্বকথা বা ব্যাখ্যা রয়েছে। আসুন এক এক করে জেনে নেওয়া যাক:-

১) শিবরাত্রি ব্রত কথা

"শিবপুরাণ" অনুযায়ী একবার ব্রহ্মা ও বিষ্ণু পূজনীয় মহাদেবকে শ্রেষ্ঠ আসনে বসিয়ে পবিত্র পুরুষ বস্তু (পুরুষ বস্তু- আবহমানকাল ধরে যে বস্তু অবিকৃত ও সুস্থির অবস্থায় থাকে) সহযোগে পুজো করেন। ব্রহ্মা ও বিষ্ণু দেবাদিদেব মহাদেবের পুজো করেছিলেন "দ্বীপ, ধূপ, চন্দন, হার, নুপুর, কেউর ক্রি, মণিকুণ্ডল, উত্তরীয় বস্ত্র, রেশমের বস্ত্র, পুষ্প মালা, তাম্বুল, কর্পূর, আগোরুড় অনুলেপ, ধ্বজা, চামর" এবং অন্যান্য দিব্য উপহার দিয়ে। এই পুজোতে ভগবান শিব অত্যন্ত প্রসন্ন হন এবং তিনি বলেন আমি আজ অত্যন্ত প্রসন্ন, তাই এই দিন পরমপবিত্র এবং মহান হবে। আজকের এই তিথি মহাশিবরাত্রি হিসেবে পরিচিত হবে।

শিবরাত্রি

২) শিবরাত্রি ব্রত কথা

"ভাগবতপুরাণ" মতে দেবতাগণ ও অশূরদের মধ্যে যখন সমুদ্রমন্থন চলছিল তখন তা থেকে অনেক বস্তুই নির্গত হয়েছিল, যা দেবতা ও অশূরগণ নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নেন। কিন্তু তা থেকে যখন গরল বা বিষ নির্গত হয় তখন কেউই তা নিতে সম্মত হননি, এবং সেই বিষ বা গরল যখন সমুদ্রের জলে মিশতে থাকে তা থেকে অনেক জলজ জীব ও পশুপাখির মৃত্যু ঘটে। তখন কোনো উপায় না পেয়ে ঋষিমুণিগণ ভগবান শিবের কাছে বিশ্বসংসারকে বাঁচানোর জন্য অনুরোধ করেন, তখন দরদী ও দানবীর শিব সেই গরল বা বিষকে যোগ শক্তির দ্বারা গলায় ধারণ করেন। এবং সেই থেকেই ভগবান শিবের নাম 'নীলকণ্ঠ' হয়ে ওঠে। দেবাদিদেব মহাদেবের এই পরম পরোপোকারের জন্যই সকল দেবগণ একরাত্রি শিবের আরাধনা করেন, এবং তখন থেকেই এই রাত্রি মহাশিবরাত্রি নামে পরিচিত।

আরও পড়ুনঃ শিবরাত্রি ব্রত পালনের নিয়ম

৩) শিবরাত্রি ব্রত কথা

"লিঙ্গপুরাণ" অনুসারে এই দিনটি ভগবান শিবের জন্মদিন হিসেবে পালন করা হয়। কথিত আছে এই দিনেই ভগবান শিব লিঙ্গ রূপে পৃথিবীতে প্রকট হয়েছিলেন। তাই এই ব্রত পূজার্চনার আলাদাই মাহাত্ম্য রয়েছে।

মহা শিবরাত্রি পালনের কিছু উপকরণ:-

শুদ্ধ মাটি বা গঙ্গা মাটি, বেলপাতা (৮/২৮/১০৮টি), গঙ্গাজল, ফুল, দুধ, দই, ঘী, মধু, চিনি, কলা, নৈবেদ্য, কর্পূর, শ্বেতচন্দন  অবশ্য প্রয়োজনীয়।

শিবরাত্রি ব্রত পালনের নিয়ম

শুদ্ধাসনে পূর্ব দিকে মুখ করে বসতে হবে। তারপর দ্বীপ, ধূপ জ্বালান, পাথরের বাটি, মাটি বা কাঁসার পাত্রে শিবলিঙ্গটিকে রাখুন। মূল পূজার নিয়ম-কানুন ও  মন্ত্রগুলি নিম্নে ধাপে ধাপে দেওয়া হল-

শিবরাত্রি পূজা পদ্ধতি | শিবরাত্রি পালনের মন্ত্র 

আচমন:- 

১) ডানহাতে প্রথমবার জল নিন এবং "ওঁ আত্মতত্ত্বায় স্বাহা" মন্ত্রটি উচ্চারণ করে হাতের জলটি পান করুন।

২) দ্বিতীয়বার জল নিন এবং "ওঁ বিদ্যাতত্ত্বায় স্বাহা" মন্ত্রটি উচ্চারণ করে হাতের জলটি পান করুন।

৩) তৃতীয়বার হাতে জল নিন এবং "ওঁ শিবতত্ত্বায় স্বাহা" মন্ত্রটি উচ্চারণ করে জলটি পান করুন এবং সবশেষে হাত ধুয়ে ফেলুন।

জলশুদ্ধি:- 

"শাঁং মন্ত্র" (শাঁং মন্ত্র বলে কিছুই হয়না শুধুমাত্র শাঁং শব্দটির উচ্চারণই হল শাঁং মন্ত্র) পাঠ বা উচ্চারণ করতে করতে যে পাত্রে জল রেখেছেন সেই পাত্রের উপর ডান হাতের মধ্যমা আঙ্গুল দিয়ে একটি ত্রিভুজ অঙ্কন করুন।

আরও পড়ুনঃ নিমপাতার গুনাগুন ও উপকারিতা

আসনশুদ্ধি:- 

অনুরূপভাবে "শাঁং মন্ত্র" উচ্চারণ করতে করতে আসনের তলায় ডান হাতের মধ্যমা আঙ্গুল দিয়ে ত্রিভুজ অংকন করুন এবং ফুল দিন।

পুষ্পশুদ্ধি:- 

"শাঁং মন্ত্র" পাঠ করতে করতে ফুলের উপর গঙ্গাজল ও চন্দনের ছিটে দিন তিনবার।

করন্যাস:-

 

করন্যাস করার জন্য-

১) ডানহাতের পাঁচটি আঙ্গুলের অগ্রভাগ বা ডগাকে একত্রিত করে "শাঁং অঙ্গুষ্ঠাভ্যাং নমঃ" মন্ত্রটি পাঠ করুন।

২) ডানহাতের বৃদ্ধা বা বুড়ো আঙ্গুল দিয়ে ডানহাতের তর্জনীর অগ্রভাগ বা ডগাকে ধরে " শাঁং তর্জনীভ্যাং স্বাহা" মন্ত্রটি পাঠ করুন।

৩) ডানহাতের বৃদ্ধা বা বুড়ো আংগুল দিয়ে ডানহাতের মধ্যমার অগ্রভাগ ধরে "শাঁ মধ্যমাভ্যাং বষট্" মন্ত্রটি পাঠ করুন।

৪) অনুরূপভাবে ডানহাতের বৃদ্ধ বা বুড়ো আঙ্গুল দিয়ে ডানহাতের অনামিকার অগ্রভাগ ধরে " শাঁ অনামিকাভ্যাং হুং" মন্ত্রটি পাঠ করুন।

৫) ডানহাতের বৃদ্ধা বা বুড়ো আঙ্গুল দিয়ে ডানহাতের কনিষ্ঠার অগ্রভাগ ধরে "শাঁং কনিষ্ঠাভ্যাং বৌষট্" মন্ত্রটি পাঠ করুন।

৬) ডানহাতের বৃদ্ধাঙ্গুল ডানহাতের মাঝখানে বা করতলে রেখে "শাং করতল পৃষ্ঠাভ্যাং আগ্রায় ফট্" মন্ত্রটি পাঠ করুন।

অঙ্গন্যাস:- 

অঙ্গন্যাসের প্রত্যেকটি মন্ত্রের কার্য ডানহাত দিয়ে সম্পূর্ণ করতে হবে-

১) ডানহাত দিয়ে বক্ষ বা বুকের মাঝখানে স্পর্শ করে "শাঁং হৃদয়ায় নমঃ" মন্ত্রটি জপ করুন।

২) কপালে স্পর্শ করে "শাঁং শিরসি স্বাহা" মন্ত্রটি জপ করুন।

৩) তালু বা মাথার মাঝখানে স্পর্শ করে "শাঁং শিখায়ৈ বৌষট্" মন্তব্য করুন।

৪) ডানহাত দিয়ে দুই নেত্রীর স্পর্শ করে "শাঁং নেত্রত্রয়ায় বৌষট্" মন্ত্রটি জপ করুন।

৫) ডানহাত দিয়ে বাম বাহু, ও বামহাত দিয়ে ডান বাহু স্পর্শ করে "শাঁং কবচায় হুং" মন্ত্রটি জপ করুন।

৬) এরপর বামহাতের করতলে বা মাঝখানে ডানহাতের 'তর্জনী ও মধ্যমা' আঙ্গুল দিয়ে "শাঁং করতল পৃষ্ঠাভ্যাং অস্থায় ফট্" বন্ধু নিজন করুন।

আরও পড়ুনঃ ১০ হাজার টাকায় ২৫ টি ব্যবসার আইডিয়া 

শিবলিঙ্গ স্নান:- 

শিবলিঙ্গকে স্নান করানোর জন্য নিম্নোক্ত মন্ত্রগুলি পাঠ করুন- 

১) দুধ দিয়ে স্নান করানোর সময় "ওঁ হৌঁ ঈশানায় নমঃ"।

২) দই দিয়ে স্নান করানোর সময় "ওঁ হৌঁ অঘোরায় নমঃ"।

৩) ঘি দিয়ে স্নান করানোর সময় "ওঁ হৌঁ বামদেবায় নমঃ" ।

৪) মধু দিয়ে স্নান করানোর সময় "ওঁ হৌঁ সদ্যোজাতায় নমঃ"।

৫) চিনি দিয়ে স্নান করানোর সময় "ওঁ হৌঁ তৎপুরুষায়েতি নমঃ"।

৬) এরপর শিবলিঙ্গকে শুদ্ধজল বা গঙ্গাজল দিয়ে স্নান করান।

এরপর মহা মৃত্যুঞ্জয় মন্ত্র ১০৮ বার না পারলে ২৮ বার পাঠ করুন। মহা মৃত্যুঞ্জয় মন্ত্রটি হল- "ওঁ ত্র্যাম্বকং যজামহে সুগন্ধিং পুষ্টিবর্দ্ধনং, উর্বারুকমিব বদ্ধানং মৃত্যোর্মুক্ষীয় মামৃতাৎ"।

শিবরাত্রি পূজা পদ্ধতি


শিবলিঙ্গের প্রাণ প্রতিষ্ঠা মন্ত্র:- 

শিবলিঙ্গের প্রতিষ্ঠা করার জন্য ডানহাত দিয়ে শিবলিঙ্গটিকে স্পর্শ করুন এবং "ওঁ হৌঁ অঘোরে ওঁ হৌঁ ঘোরে, ওঁ হুং ঘোরতরে ওঁ হ্রৈঁ হ্রীঁ শ্রীঁ ঐঁ, সর্বেত সর্বেভ্যো নমহস্ত রুদ্র রুপিপে হ্রঁ হ্রঁ নমঃ" মন্ত্রটি পাঠ করুন। (এখানে একটি কথা মাথায় রাখতে হবে যে, যাদের বাড়িতে প্রতিষ্ঠিত শিবলিঙ্গ রয়েছে কিংবা আগে থেকে শিবলিঙ্গে প্রাণ প্রতিষ্ঠা করা আছে সে ক্ষেত্রে এই মন্ত্র পাঠ করা হবে না।)

শেষের পর্যায়ে মহাদেবের উদ্দেশ্যে পুজোর উপকরণ, চন্দন, ফুল, নৈবেদ্য প্রধান করে ধূপ, দ্বীপ  দ্বারা আরতি করুন।

৮/ ২৮/ ১০৮ টির মধ্যে যে কটি বেলপাতা সংগ্রহ করেছেন সেগুলির প্রতিটিতে চন্দনের ফোঁটা লাগিয়ে পাতার অগ্রভাগ একটু করে ছিঁড়ে শিবলিঙ্গের অর্ধেক প্রদক্ষিণ করে শিব লিঙ্গের মাথায় প্রদান করুন, এবং প্রদানের সময় "ওঁ পূর্ণ বৃক্ষা মহাভাগং সদাত্বং মহেশ প্রিয়, মহেশং পূজা নিমিত্ত বরদা ভব শোভনে"।

এরপর ১০ বার শিবগায়ত্রী মন্ত্রটি জপ করুন- "তৎপুরুষায় বিদ্মহে বেদমহী মহাদেবায় ধীয়োমহো তন্নো রুদ্র প্রচোদয়াৎ"।

১০৮ বার "ওঁ নমঃ শিবায়" মন্ত্রটি পাঠ করুন।

পরিশেষে বিসর্জন মন্ত্র পাঠ করুন- "আবহনাং নজনামি নৈব জনামি পূজনং বিসর্জনং ন জনামি ক্ষমস্ব্য পরমেশ্বর"।

শিবরাত্রি ২০২৩ -এর সময়

২০২৩ মহা শিবরাত্রি পালনের সময়সূচী:-

শিবরাত্রি ২০২৩ সাল ১৮ ই ফেব্রুয়ারি (৫ ই ফাল্গুন, ১৪২৯) শনিবার

তিথি শুরু- ১৮ ই ফেব্রুয়ারি (৫ ই  ফাল্গুন, ১৪২৯) শনিবার রাত্রি ৮ টা ২ মিনিটে।

তিথি শেষ- ১৯ শে ফেব্রুয়ারি (৬ ই  ফাল্গুন, ১৪২৯) রবিবার ৪ টা  ১৮ মিনিটে।

নিশিতা কাল পুজো- তিথি শুরু ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ (৫ ই  ফাল্গুন, ১৪২৯)  রাত্রি ১১:২৫ (pm) থেকে তিথি শেষ ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ (৬ ই  ফাল্গুন, ১৪২৯) রাত/ ভোর ১২:১৫ (am)

প্রথম প্রহর পুজো- ১৮ ই ফেব্রুয়ারি (৫ ই ফাল্গুন, ১৪২৯) সন্ধ্যা ০৫:৩৫ মিনিট থেকে রাত্রি ০৮:৪২ মিনিট পর্যন্ত।

দ্বিতীয় প্রহর পুজো-  ১৮ ই ফেব্রুয়ারি (৫ ই ফাল্গুন, ১৪২৯) রাত্রি ০৮:৪২ মিনিট থেকে ১১:৫০ মিনিট পর্যন্ত।

তৃতীয় প্রহর পুজো- ১৮ ই ফেব্রুয়ারি (৫ ই ফাল্গুন, ১৪২৯) রাত্রি ১১:৫০ মিনিট ১৯ ফেব্রুয়ারি (৬ ই ফাল্গুন, ১৪২৯) ভোর ০২:৫০ মিনিট পর্যন্ত।

চতুর্থ প্রহর পুজো- ১৯ ফেব্রুয়ারি (৬ ই ফাল্গুন, ১৪২৯) ভোর ০২:৫০ মিনিট থেকে ০৬:০৬ মিনিট পর্যন্ত।

পারনা শুরু- ১৯ শে ফেব্রুয়ারি (৬ ই ফাল্গুন, ১৪২৯) রবিবার ভোর ৬ টা ৬ মিনিট থেকে।

পারনা শেষ- দুপুর ২ টো ৪৩ মিনিট পর্যন্ত।

আরও পড়ুনঃ

অনুলোম বিলোম প্রাণায়াম করার পদ্ধতি ও উপকারিতা

অনলাইন ক্লাসের সুবিধা ও অসুবিধা

উচ্চ মাধ্যমিকের পর সেরা ১০ টি কোর্স

কপালভাতি প্রাণায়াম এর উপকারিতা 

FAQ

1. মক্কায় শিব বন্দি কেন?

এই প্রশ্ন সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।

2. শিবের জটা কে কি বলে?

দেবতা শিবকে জটাধারা বলা হয়, যার মানে যার মাথায় ম্যাট করা চুলের স্তূপ রয়েছে।

3. শিব কার ধ্যান করেন?

দেবাদিদেব মহাদেব শ্রী নারায়নের ধ্যান করেন।

4.শিবের অবতার কি কি?

দেবাদিদেব ভগবান শিব তথা মহাদেবের 19 টি অবতার রয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে হনুমান অবতার, নামদেব অবতার, দুর্বাসা অবতার, ঈশান অবতার, তৎপুরুষ অবতার, অঘোর অবতার, অশ্বত্থামা অবতার, নন্দী অবতার, বীরভদ্র অবতার, কালভৈরব অবতার, গৃহপতি অবতার, পিপ্পলাদ অবতার, শরভ অবতার, জ্যোতিনাথ অবতার, সুরেশ্বর অবতার, যক্ষেশ্বর বা যক্ষ অবতার, বৃষভ বা রিষভ অবতার, কিরাত অবতার, অবধূত বা অদ্ভুত অবতার। লোকবিশ্বাস অনুসারে, হিন্দুধর্মের অন্যান্য দেবদেবীদের মতো ভগবান শিবেরও একাধিক অবতার বিদ্যমান। হিন্দু পুরাণ শাস্ত্রে শিবের অবতারের উল্লেখ রয়েছে।

5. শিবের গলায় সাপের নাম কি?

শিবের গলায় থাকা সাপের নাম- বাসুকী নাগ

6. শিবলিঙ্গের মুখ কোন দিকে থাকে?

শাস্ত্রমতে, শিবের মূর্তি সবসময় ঘরের উত্তর-পূর্বদিরে মুখ করে রাখতে হয়। তাতে পরিবারের উপর মহাদেবের কৃপা বর্ষিত হয়। খারাপ সময়গুলিতে ভয়াবহ কোনও আকার ধারণ করে না। আর্থিক, স্বাস্থ্যের উন্নতি হওয়ার সুযোগ থাকে। তবে শিব ঠাকুরের ছবি বা মূর্তি কখনও মাটিতে স্থাপন করে পুজো করবেন না। তবে যেখানে রাখবেন, সেই জায়গাটি ভাল করে পরিস্কার করে, সাদা কাপড়ের উপর রেখে পুজো করুন।

7. শিবরাত্রির সলতে বাগধারাটির অর্থ কি?

বাগধারাটির অর্থ 'একমাত্র সন্তান'।

8. শিব রাতে মেয়েরা কি করে?

আগের দিন থেকে উপোস করে প্রতিটি প্রহরে শিবের পুজো করে।

9. শিব শব্দের অর্থ কি?

শিব শব্দের অর্থ "মঙ্গলময়"।

10. শিব কে?

জড় জগতের তিনটি অবস্থা সৃষ্টি, স্থিতি এবং প্রলয়। ব্রহ্মা হলেন সৃষ্টিকর্তা, বিষ্ণু হলেন পালনকর্তা, আর শম্ভু বা দেবাদিদেব মহাদেব হলেন সংহার কর্তা। সমগ্র জড় জগৎ জড় প্রকৃতির তিনটি গুণের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। সত্ত্ব গুণের অধীশ্বর হলেন বিষ্ণু। রজ গুণের অধীশ্বর হলেন ব্রহ্মা এবং তম গুণের অধীশ্বর হলেন শিব বা শম্ভু।

11. শিব চতুর্দশী কেন পালন করা হয়?

  • শিবরাত্রির দিনে শিব পার্বতীকে বিয়ে করেছিলেন।
  • প্রত্যেক বছর ফাল্গুনমাসের কৃষ্ণপক্ষের চতুর্দশীতে শিবরাত্রি উদযাপন করা হয়।
  • বিশ্বাস করা হয়, শিবরাত্রির রাতই মহাদেবের প্রিয় রাত।
  • শিবরাত্রির দিনেই মহাদেব তাণ্ডব নৃত্য করেছিলেন। আর তারপর থেকেই এই নৃত্য পৃথিবী বিখ্যাত হয়ে যায়।
  • অবিবাহিত মেয়েদের জন্য এটাই সবচেয়ে পূণ্যের রাত। যাঁরা ভগবান শিবের মতো স্বামী চান, তাঁরা এই দিন ব্রত করেন।
  • শিবরাত্রির দিনের এই ব্রত শুধু অবিবাহিত মেয়েরাই নন, বিবাহিত মেয়েরা এমনকি ছেলেরাও এই ব্রত করতে পারেন।
  • শুধু মহাদেবের মতো স্বামী চেয়ে বরই নয়, সাফল্য এবং সমৃদ্ধি চেয়েও এই ব্রত করা যায়।
  • শিবরাত্রির ব্রত করলে অশুভ শক্তি থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
  • নিশীথ কলা বা যে সময়ে মহাদেব শিব লিঙ্গের রূপ ধারণ করেছিলেন, সেই সময়ই শিবরাত্রি ব্রত উদযাপনের উপযুক্ত সময়।
  • সমুদ্র মন্থনে বিষ পাণ করেছিলেন মহাদেব। বিশ্বাস করা হয়, এই কারণেই সারারাত জেগে শিবরাত্রি ব্রত পালন করা হয়।
  • শুধু ভারতেই নয়, সারা বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে শিবরাত্রি পালন করা হয়।
  • পূরাণে উল্লেখ করা রয়েছে যে ঠিক কোন কোন উপাদান ব্যবহার করা হয় শিবরাত্রিতে।
  • শিবরাত্রিতে ব্যবহৃত উপাদানগুলির প্রত্যেকটির আলাদা আলাদা উপকারীতা রয়েছে।
  • মহাশিবরাত্রির ব্রত করলে রজঃ গুণ এবং তমোঃ গুণগুলির সংযম শক্তি বাড়ে।
  • মহাদেবের ভক্তরা ভিন্ন ভিন্ন ভাবে শিব মন্ত্র 'ওম নমঃ শিবায়' স্তব করে থাকেন।

Post a Comment

0 Comments