বিভিন্ন রোগে শাকসবজি
বর্তমানে মানুষের দৈনন্দিন জীবন অতীতের মতো এতো স্বাস্থ্যবান বা স্বাস্থ্যজ্জল নেই। নিম্নমানের খাবার, কাজের চাপ, সাংসারিক টেনশেন ও সঠিক মতো শরীরের খেয়াল না রাখার দরুণ শরীরের ভেতরে এবং বাইরে বহু রোগ-ব্যাধি দেখা দেয়, যা দিনের পর দিন বেড়েই চলেছে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মানুষ আধুনিক হয়ে উঠেছে, তাই কোনোরকমের অসুবিধা দেখা দিলেই আমরা ছুটে যাই কোনো বড়ো হাঁসপাতালে কিংবা কোনো বড়ো ডাক্তারের কাছে এবং অনেক পরিমাণ টাকা বণ্যার মতো বইয়ে দিয়ে আসি। কিন্তু আমাদের বাড়ির ভেতর বা বাড়ির চারপাশে যে সমস্ত প্রাকৃতিক উপাদান রয়েছে সেগুলো দিয়ে খুব সহজেই এইসব অসুবিধা কে কাবু করা যেতে পারে, আর সঙ্গে মানতে হবে দৈনন্দিন জীবন যাপনের কিছু নিয়ম-কানুন।
অনিদ্রায
উচ্চ রক্তচাপ
উচ্চ রক্তচাপে যতটা সম্ভব লবণ খাওয়া বন্ধ করুন। ১০ গ্রাম শুষনি শাক বেটে চিনি বা মিছরি দিয়ে শরবত করে খান। অগ্নিমন্থ গাছের ডাল শুকিয়ে গুঁড়ো করে প্রতিদিন সকালে খালি পেটে ১ চামচ করে খান।
হাঁপানি
মানসিক টেনশন থেকে হাঁপানির টান বেড়ে যায়। হরিতকী শুকিয়ে গুড়ো করে প্রতিদিন সকালে ১ চামচ করে খান। ১ টুকরো আদাকে থেঁতো করে গাওয়া ঘিয়ে ভেজে মধু দিয়ে খেলে টেনশন-জনিত হাঁপানি কমবে। প্রতিদিন কাঁচা আমলকি বা আমলকীর মোরব্বা খেলেও বিশেষ উপকার পাওয়া যায়। তুলসী পাতার রস ১ চামচ, গোলমরিচ ১টি ও ১ চামচ মধু দিয়ে খেলে কাশি ও হাঁপানি কমে।
প্রস্রাবের রোগে
টেনশন থেকে প্রস্রাবের রোগ দেখা দিলে তুলসী পাতার শুকনো বীজ রাতে ভিজিয়ে রেখে সকালে বেটে ১ চিমটে চিনি দিয়ে শরবত করে খেলে বিশেষ উপকার পাওয়া যায়। অগ্নিমন্থ পাতার রস ৪ চামচ অল্প গরম জল দিয়ে খেলে প্রস্রাব স্বাভাবিক হয়।
ডায়াবেটিস
কোনো মিষ্টি ও চর্বি জাতীয় খাবার খাওয়া উচিত নয়। উচ্ছে, করলা, সজনে ডাঁটা, কাঁচা পেঁপে, ছোলা, অড়হড় ডাল প্রভৃতি নিয়মিত খান। যারা হাই ডায়াবেটিসে ভুগছেন তাদের জন্য ও ব্যর্থ মহৌষধ, নিমপাতার রস ২ চামচ, কালোজাম পাতার রস ২ চামচ, কালমেঘ পাতার রস ২ চামচ, তেলাকচু পাতার রস ২ চামচ একসঙ্গে মিশিয়ে সপ্তাহে ৩ দিন সকাল বেলা খালি পেটে ১ মাস খান, ডায়াবেটিস বা মধুমেহ অবশ্যই কমবে।
ইউরিক অ্যাসিড
যেসব মানুষের রক্তে ইউরিক অ্যাসিডের পরিমাণ বেশি তারা কচি কচি নিমপাতা ২০ টি, ১ টি কাঁচকলা একসঙ্গে সেদ্ধ করে, একটু বেগুন পোড়ার সঙ্গে মিশিয়ে গরম ভাতে ১ মাস খান। কালমেঘ ও নিমপাতা গুঁড়ো প্রতিদিন ১ চামচ করে গরম জল দিয়ে খান।
গর্ভ নিয়ন্ত্রণ
তুলসী গর্ভনিরোধক করে থাকে। মাসিকধর্ম শেষ হলে তুলসির পাতা সিদ্ধ করে সে কাথ ৩ দিন পর্যন্ত খাওয়ালে গর্ভ সঞ্চার হবে না।
গর্ভরোধ
গর্ভাশয়ের গোলমালে যদি গর্ভপাত হয়ে যায়, তাহলে তুলসীর বীজ ২৫ গ্রাম নিয়ে পেষণ করে কাপড়ে ছেঁকে নিতে হবে। মাসিক ধর্মের দিনগুলিতে ৩ মাত্রায় ভাগ করে প্রত্যহ ১ বার করে ৩ দিন খাওয়ালে উপকার হবে।
যৌন শৈত্যে
ক্রমাগত টেনশন স্বামী-স্ত্রীর জীবনের উপর প্রভাব ফেলে, যৌন ইচ্ছা কমে যাবে। এটি দূর করতে প্রথমে ৫-৭ দিন স্বামী-স্ত্রীর আলাদা থাকা উচিত। কালো তুলসীর মূল আধ ইঞ্চি বিকেলে পান পাতার সঙ্গে চিবিয়ে খেলে মনের শিথিলতা দূর হয়। বাবলা গাছের আঠা ছোট ছোট টুকরো করে ঘিয়ে ভেজে চিনি মিশিয়ে কয়েকদিন খেলে যৌন ইচ্ছা ফিরে আসে। শুষনি শাকের শরবত করে ৭-১০ দিন খেলেও বিশেষ উপকার পাওয়া যায়।
স্তন বৃদ্ধি
শিশুদের জন্য মায়ের স্তনে প্রচুর দুধ থাকার প্রয়োজন, কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় প্রসূতি স্তনে দুধ থাকেনা। আর থাকলেও খুব কম। এই অবস্থায় তুলসী পাতার রস এবং মকাই পাতার রস প্রত্যেকটি ১০ মিলিলিটার এবং অশ্বগন্ধার রস ৫ মিলি লিটার ও মধু ৫ মিলিলিটার মিশিয়ে এক সপ্তাহ প্রসূতিকে খেতে দিলে স্তনদুগ্ধ বৃদ্ধি হবে।
জন্ম নিয়ন্ত্রণ
৬ টি লবঙ্গ, ২ টি গোলমরিচ এবং ৫ গ্রাম ঝাল পানের শেকড় একসঙ্গে বেটে প্রতিদিন সকালে খেতে হবে ঋতুর পাঁচদিন
0 Comments