কপালভাতি প্রাণায়াম করার নিয়ম | কপালভাতি প্রাণায়াম এর উপকারিতা

কপালভাতি প্রাণায়াম করার নিয়ম

কপালভাতি প্রাণায়াম করার নিয়ম

কপালভাতি প্রাণায়াম: অষ্টাঙ্গযোগের চতুর্থ অঙ্গ হল প্রাণায়াম। প্রাণায়াম সম্বন্ধে বলতে গিয়ে পতঞ্জলি বলেছেন 'তস্মিন সতি শ্বাসপ্রশ্বাসয়োর্গতিবিচ্ছেদঃ প্রাণায়মঃ', অর্থাৎ শ্বাস-প্রশ্বাসের গতি কে যখন বিচ্ছেদ করে দেয়া হয় তখন তাকে প্রাণায়াম বলা হয়। বিচ্ছেদ মানে নিয়ন্ত্রণ করা। শ্বাস-প্রশ্বাসের গতিকে নিয়ন্ত্রণ করাকেই প্রাণায়ম বলা হয়। আজকের এই এই প্রতিবেদনে আমরা কপালভাতি প্রাণায়ামের উপকারিতাএই প্রাণায়াম করার নিয়ম ও পদ্ধতি সম্পর্কে বলবো। 

কিভাবে করবেন কপালভাতি প্রাণায়াম 

কপালভাতি প্রাণায়াম করার সময় মনে এমন বিচার আনা উচিত যে, আমরা যেই মুহূর্তে শ্বাস বাইরে ছাড়ছি, সেই মুহূর্তে নিঃশ্বাসের সঙ্গে আমাদের শরীরের সমস্ত রোগ বাইরে বেরিয়ে যাচ্ছে বা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। যে ব্যক্তির যে রোগ আছে সেই দোষ বা বিকার, কাম, ক্রোধ, লোভ, মোহ, ঈর্ষা, রাগ, দ্বেষ ইত্যাদিকে বাইরে বের করে দেওয়ার ভাবনা করতে করতে রেপ করা উচিত। সাধারণত 3-5 মিনিট পর্যন্ত এই প্রাণায়ামের অভ্যাস করা উচিত। শুরুতে কপালভাতি প্রাণায়াম করার সময় যখন ক্লান্তি অনুভব হবে, তখন একটু বিশ্রাম করা উচিত। শুরুতে পেট ও কোমরের যন্ত্রণা হতে পারে, কিন্তু কিছুদিন অভ্যাসের পরেই যন্ত্রণা ধীরে ধীরে আপনা থেকেই দূর হয়ে যাবে।

আরও পড়ুনঃ প্রাণায়াম কত প্রকার ও কি কি এবং প্রাণায়ামের উপকারিতা 

কপালভাতি প্রাণায়াম পদ্ধতি 

  • প্রথমে বজ্রাসন বা পদ্মাসনে বসুন
  • এরপরে, আপনার উভয় হাত দিয়ে চিত মুদ্রা করুন।
  • এবার আপনার দুই হাত হাঁটুতে রাখুন।
  • একটি গভীর শ্বাস নিন ভিতরের দিকে এবং একটি ঝাঁকুনি দিয়ে শ্বাস ছাড়ার সময় পেটটি ভিতরের দিকে টেনে নিন।
  • এটা একটানা কয়েক মিনিট করতে থাকুন, একবারে 35 থেকে 100 বার করুন।
  • কপালভাতি করার পর কিছুক্ষণ হাততালি দিলে বেশি উপকার পাবেন।

কপালভাতি প্রাণায়াম এর উপকারিতা

  • মস্তিষ্ক এবং মুখমন্ডলে তেজ, আভা ও সৌন্দর্য বেড়ে ওঠে।
  • সমস্ত প্রকারের কফ রোগ, হাঁপানি, শ্বাসরোগ, আ্যালার্জি, সাইনাস ইত্যাদি রোগ দূর হয়।
  • ফুসফুস, হৃদপিণ্ড এবং মস্তিষ্কের সমস্ত রোগ দূর হয়।
  • মেদাধিক্য, কোষ্ঠকাঠিন্য, ডায়াবেটিস, অম্লপিত্ত, কিডনি এবং প্রস্টেটের সঙ্গে সম্পর্কিত সব রোগ নিশ্চিতরূপে দূর হয়।
  • হৃদপিন্ডের শিরাগুলির ব্লকেজ খুলে যায়।
  • মন স্থির, শান্ত এবং প্রসন্ন থাকে। যার ফলে ডিপ্রেশন জাতীয় রোগের হাত থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। 
  • এই প্রাণায়াম করলে আমাশয়, অগ্নাশয়, যকৃৎ, প্লীহা, অন্ত্র, প্রস্টেট এবং কিডনি রোগ বিশেষরূপে আরোগ্যপ্রাপ্তি হয়। দুর্বল অঞ্চল গুলিকে সফল বানানোর জন্যও এই প্রাণায়াম হল সর্বোত্তম।

সতর্কতা 

  • কপালভাতি করার সময় শ্বাস-প্রশ্বাসের গতি বাড়াবেন না বা কমবেন না, একই রাখুন।
  • এই আসনটি করার সময়, আপনার সম্পূর্ণ মনোযোগ পেটের নড়াচড়ার দিকে হওয়া উচিত, শ্বাসের উপর নয়।
  • কপালভাতি করার সময় আপনার কাঁধ নড়াচড়া করা উচিত নয়।
  • শ্বাস ভিতরে নেওয়ার সময় পেট বাইরের দিকে এবং শ্বাস বাইরে ছাড়ার সময় পেট ভেতরের দিকে হওয়া উচিত।
  • হার্নিয়া, আলসার বা শ্বাসযন্ত্রের রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের এটি করা উচিত নয়।

আজকের এই প্রতিবেদনে আপনারা জানলেন কপালভাতি প্রাণায়াম করার নিয়ম এবং তার উপকারিতা সম্পৰ্কে। আশা করি আপনারা খুব সহজেই বুঝতে পারলেন কিভাবে কপালভাতি করতে হয়। প্রতিবেদনটি ভালো লাগলে বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন এবং প্রতিদিন এরকম বিভিন্ন ধরণের পোস্ট পেতে আমাদের "Kolkatacorner" পেজটি ফলো করুন।

JOIN OUR TELEGRAM CHANNEL CLICK HERE
 

Post a Comment

0 Comments