উজ্জায়ী প্রাণায়াম উপকারিতা | উজ্জায়ী প্রাণায়াম করার পদ্ধতি

উজ্জায়ী প্রাণায়াম উপকারিতা

উজ্জায়ী প্রাণায়াম উপকারিতা

উজ্জায়ী প্রাণায়াম: আজকের এই প্রতিবেদনে আমরা উজ্জায়ী প্রাণায়াম এর উপকারিতা সম্পর্কে জানবো। মোট ১১ টি প্রাণায়ামের মধ্যে উজ্জায়ী'ও একটি প্রাণায়াম। যোগব্যায়ামে শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়ামকে 'প্রাণায়াম' বলা হয়। প্রাণায়াম হল যোগ অনুশীলনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। উজ্জায়ী হল এক প্রকার প্রাণায়াম, উজ্জায়ী একটি সংস্কৃত শব্দ যার অর্থ "জয় করা"। উজ্জায়ী প্রাণায়াম মনের শান্তি ও শরীরে উষ্ণতা বজায় রাখতে সাহায্য করে। উজ্জায়ী প্রাণায়াম করার সময় কেউ ফুসফুসে উপস্থিত শ্বাস অনুভব করতে পারে। এই প্রাণায়াম করার সঠিক পদ্ধতি এবং শরীরের জন্য এর উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন এই প্রতিবেদনে। 

আরও পড়ুনঃ মেডিটেশন করার সঠিক সময়

উজ্জায়ী প্রাণায়াম করার নিয়ম ও পদ্ধতি 

  • একটি শান্ত পরিবেশে বসুন, এবারে অনেক্ষন বসা যায় এরকম সহজ আসনে বা ভঙ্গিতে বসুন।
  • এবার চোখ বন্ধ করুন, মুখ সামান্য খোলার মাধ্যমে আপনার মাড়ি এবং জিহ্বা শিথিল করার চেষ্টা করুন।
  • যখন আমরা ফিস-ফিস করে কথা বলি, তখন শ্বাসের সঙ্গে যেমন একটি শব্দ বেরিয়ে আসে কিংবা মুখের সামনে হাত রেখে শ্বাস ছাড়ার সময় যেরকম একপ্রকার শব্দ বের হয়, ঠিক সেরকম শব্দ আমাদের এই প্রাণায়ামে করতে হবে। কিন্তু তফাৎ টি হল আগের শব্দ গুলি শ্বাস ছাড়ার সময় বের হত, কিন্তু এক্ষেত্রে শ্বাস ভেতরে নেয়ার সময় শব্দটি হবে। প্রথমে মুখের দ্বারা শ্বাস  নিতে হবে, এবং অভ্যাস হয়ে গেলে নাকের দ্বারা নিতে হবে। 
  • গলায় হাত রেখে সেই ঘর্ষণ কে অনুভব করতে পারেন। 
  • এরপরে, আপনি এই প্রাণায়ামে নিমগ্ন হওয়ার সাথে সাথে আপনার সমস্ত মনোযোগ আপনার শ্বাস-প্রশ্বাসের নড়াচড়ার দিকে থাকবে, তখন আপনি লক্ষ্য করবেন যে আপনার নিঃশ্বাস থেকে নির্গত শব্দটি সম্পূর্ণরূপে প্রবাহিত বাতাসের শব্দের মতো।
  • আপনার শ্বাস থেকে আসা শব্দ অনুভব করার চেষ্টা করুন এবং আপনার মন শান্ত রাখুন।
  • এরপরে, শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে আপনার ফুসফুস সম্পূর্ণরূপে পূরণ করুন এবং তারপর সম্পূর্ণ খালি করুন।
  • শুরুতে, এই প্রাণায়ামটি কমপক্ষে ৫ মিনিটের জন্য করুন এবং তারপরে এটি বাড়িয়ে ১৫ মিনিট করুন।

আরও পড়ুনঃ

প্রাণায়াম কাকে বলে, প্রাণায়াম কত প্রকার ও কি কি

অনুলোম বিলোম প্রাণায়াম করার পদ্ধতি ও উপকারিতা

কপালভাতি প্রাণায়াম করার নিয়ম ও উপকারিতা

উজ্জায়ী প্রাণায়াম এর উপকারিতা

এই প্রাণায়ামে পূরক করতে করতে গলাকে সংকুচিত করতে হয় এবং যখন গলাকে সংকুচিত করে শ্বাস ভিতর ভরা হয়, তখন গলা দিয়ে নাক ডাকার মতো আওয়াজ বের হতে থাকে। ধনাত্মক আসনে বসে দুই নাক দিয়ে শ্বাস ভেতরে টেনে নিতে হবে। তবে বাতাসের ঘর্ষণ নাকে হওয়াটা উচিত নয়, গলায় ঘর্ষণ হলে একটি ধনী উৎপন্ন হবে। শুরুতে কুম্ভকের প্রয়োগ না করে শুধুমাত্র পূরক-রেচকেরই অভ্যাস করা উচিত।

  • যেসব ব্যক্তি সারাবছরই সর্দি-কাশি-জ্বরে পীড়িত হয়ে থাকেন, যাদের টনসিল, থাইরয়েড গ্ল্যান্ড, অনিদ্রা, মানসিক টেনশন, রক্তচাপ, অজীর্ণ, আমবাত, টি.বি. ইত্যাদি রোগ আছে, তাদের জন্য এই প্রাণায়াম অত্যন্ত লাভজনক হয়। 
  • গলাকে নীরোগ এবং মধুর করার জন্য এই প্রাণায়াম নিয়মিত অভ্যাস করা উচিত।
  • এই প্রাণায়াম অভ্যাসে বাচ্চাদের তোতলামি দূর হয়। 
  • মনোনিবেশ করার ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।
  • এতে শরীর সুস্থ ও সবল হয়।
  • হৃদরোগ এবং হার্ট অ্যাটাকের মতো সমস্যার সম্ভাবনা কমায়।
  • অভ্যন্তরীণ শক্তি বৃদ্ধি করে এবং ইতিবাচক শক্তি প্রবাহিত করে।
  • সাইনাস ও মাইগ্রেনের সমস্যা দূর করা যায় এই প্রাণায়াম অভ্যাসের মাধ্যমে।
  • এই প্রাণায়ামের নিয়মিত অনুশীলন বন্ধ হয়ে যাওয়া ধমনী খুলতে এবং কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে কাজ করে।
  • কণ্ঠকে সুরেলা করার পাশাপাশি এই প্রাণায়াম থাইরয়েডের মতো রোগ থেকেও দূরে রাখে।
  • এই প্রাণায়াম কাশি, ডিসপেপসিয়া, লিভারের সমস্যা, আমাশয়, জ্বরের মতো রোগ হওয়ার সম্ভাবনা কমাতে কাজ করে।

আজকের এই প্রতিবেদনে আমরা উজ্জায়ী প্রাণায়াম এর উপকারিতা ও উজ্জায়ী প্রাণায়াম করার পদ্ধতি সম্পর্কে জানলাম। প্রাণায়াম সম্পর্কিত এই প্রতিবেদনটি যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে তাহলে বন্ধু-বান্ধবদের সাথে শেয়ার করুন। প্রতিদিন এরকম বিভিন্ন বিষয়ের উপর পোস্টের নোটিফিকেশন পেতে আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেল (CLICK HERE) জয়েন করুন। 

আরও পড়ুনঃ

কলকাতার দর্শনীয় স্থান

কিভাবে একজন IAS অফিসার হবেন

Post a Comment

0 Comments