এই গ্রীষ্মে বাড়িতেই বানিয়ে ফেলুন সহজ এই ঠান্ডা পানীয়গুলি

best summer drinks in india

এই গ্রীষ্মে বাড়িতেই বানিয়ে নিন সহজ এই ঠান্ডা পানীয়গুলি

এই গ্রীষ্মে শরীর ঠান্ডা ও সতেজ রাখতে বাড়িতেই বানিয়ে ফেলুন এই সহজ ঠান্ডা পানীয়গুলি। প্রয়োজন হবেনা বেশি কিছু উপাদানের, ঘরোয়া কয়েকটি উপাদান দিয়েই তৈরি হবে এগুলি।

গ্রীষ্মের ঠান্ডা পানীয়

তাপ থেকে বাঁচতে লোকেরা প্রায়শই হালকা খাবার খান এবং বেশি তরল জাতীয় কিছু খান। কিন্তু এর মানে এই নয় যে আপনি যেকোনো পানীয় (কোকাকোলা, পেপসি বা টিনজাত রস ইত্যাদি) পান করবেন। এক গ্লাস সতেজ ফলের রস সম্পর্কে আপনি কি মনে করেন বা আপনার ধারণা কি? তাজা ফলের রস পান করা শরীরকে ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে এবং ডিহাইড্রেশন এড়ায়, যা গ্রীষ্মকালের একটি সাধারণ সমস্যা।

তাই আজকের এই প্রতিবেদনে আমরা কয়েকটি ফলের জুসের রেসিপি সম্পর্কে জানবো, যা এই গ্রীষ্মে আপনাকে রাখবে সতেজ এবং তরতাজা।

পাকা আমের শরবত

উপকরণ: 4 টি পাকা আম, 2 গ্লাস ফ্রিজে রাখা ঠান্ডা দুধ, 4 টেবিল চামচ চিনি, সামান্য পরিমাণ বরফ।

প্রণালী: একটা বড় পাত্রে আমের খোসা ছাড়িয়ে শাঁস ও রস বের করে আমের রসের মধ্যে চিনি মেশান। রসের মধ্য থেকে আমের আঁশ বাদ দিয়ে যতটা সম্ভব মিহি করে এক গ্লাস ঠান্ডা দুধ ঢালুন, তারপর ভালো করে মিশিয়ে দিন। কাঁচের গ্লাসে শরবত রসের সঙ্গে ফ্রিজের ঠান্ডা জল, বরফ ও 8 টেবিল চামচ চিনি দিয়ে পরিবেশন করুন।

কাঁচা আমের শরবত

উপকরণ: কাঁচা আম 2 টো, চিনি পরিমাণমতো, নুন, গোলমরিচ গুঁড়ো অল্প।

প্রণালী: কাঁচা আম পুড়িয়ে নিন এবং খোসা ছাড়িয়ে ভালো করে চটকে নিয়ে চিনি মিশিয়ে নিন। পরিবেশনের সময় নুন, গোলমরিচ গুঁড়ো দিয়ে পরিবেশন করুন।

তরমুজের শরবত

উপকরণ: তরমুজ একটা মাঝারি, চিনি পরিমাণমতো।

প্রণালী: তরমুজ কেটে লাল অংশের বীজ ফেলে দিয়ে মিক্সিতে ফেটিয়ে নেবেন, চিনিও দিয়ে দেবেন এবং বরফের টুকরোর সঙ্গে পরিবেশন করুন।

আঙুরের মসলা শরবত

উপকরণ: সাধারণ আঙুর 250 গ্রাম, কাল আঙুর 100 গ্রাম, লবঙ্গ 2 টি, এলাজ 6 টি (খোসা ছাড়া গুঁড়ো), লেবুর রস 2 চা চামচ, দারুচিনির গুঁড়ো 1 চিমটে, গোলমরিচের গুঁড়ো 1 চিমটে, চিনির সিরাপ পরিমাণমতো, জল 1লিটার, পরিমাণমতো নুন।

প্রণালী: দুইপ্রকার আঙুর ভালো করে পিষে মিশ্রণটির সাথে ঠান্ডা জল, লেবুর রস, নুন, এবং বাকি মশলা গুঁড়ো ও চিনির রস মেশাতে হবে। মিশ্রণটি ছেঁকে নিয়ে ফ্রিজে ঠাণ্ডা করে পরিবেশন করুন।

বেদানার শরবত

উপকরণ: বেদানা একটি, চিনি পরিমাণমতো।

প্রণালী: বেদানার খোসা ছাড়িয়ে বীজগুলি বের করে নিয়ে মিক্সিতে সব ফেটিয়ে ঠান্ডা করে পরিবেশন করুন।

বেলের শরবত

উপকরণ: পাকাবেল একটা, পরিমাণমতো চিনি, দই 100 গ্রাম।

প্রণালী: বেল ফাটিয়ে শাঁস বার করুন এবং অল্প জলে ভিজিয়ে রাখুন। বেশ নরম হলে চটকে ছেঁকে নিয়ে রাখুন। এবার দই ভালো করে ফেটিয়ে ওই বেলের সঙ্গে মিশিয়ে পরিমাণমতো চিনি ও জল দিয়ে পাতলা করুন এবং বরফের টুকরো দিয়ে পরিবেশন করুন।

পেস্তাবাদামের শরবত

উপকরণ: পেস্তা 1/2 কাপ, কাজুবাদাম 1/2, দই 1 কাপ, চিনি 5 চামচ, আমূল দুধ 2 টেবিল চামচ, মধু 2 চামচ।

প্রণালী: পেস্তাবাদাম ভালো করে বেটে নিয়ে দই, চিনি, মধু, আমূল দুধ দিয়ে মিক্সিতে ভালো করে মিশিয়ে নিন। এবার মিশ্রণটি গ্লাসে ঢেলে প্রতিটি গ্লাসে একটি করে আইসকিউব ও চেরি ফলের কুচি দিয়ে পরিবেশন করুন।

নাট-খট শরবত

উপকরণ: 5 কাপ জল, 8 টেবিল চামচ মৌরি, 1 চা চামচ এলাচ দানা, 8 টি লবঙ্গ, আধ কাপ কিসমিস, 1 কাপ বাদাম, আধ কাপ পেস্তা বাদাম, আধ কাপ কাজুবাদাম, 2 লিটার গরুর দুধ, ছোট আধ চামচ জাফরান।

প্রণালী: প্রথমে সমস্ত প্রকার বাদাম ভেজে নিয়ে খোসা ছাড়িয়ে ভালো করে চূর্ণ করে একটি সসপ্যানে জল গরম করে ছাড়ুন। মৌরি, এলাচ দানা এবং লবঙ্গ ছাড়ুন। কিছুক্ষণ ঢেকে সিদ্ধ করে নামিয়ে 10 মিনিট রেখে দিয়ে অন্য একটি পাত্রে বাদাম চূর্ণ রেখে তার মধ্যে আগের মিশ্রণটি মিশিয়ে কিসমিস বেটে এক ঘণ্টা ঢেকে রাখুন। দুধ গরম করে অল্প দুধের সঙ্গে বাদাম দুধ মিশিয়ে নামান। ইচ্ছে করলে মধু বা বরফ কুচি দিয়ে নেবেন।

পাকা কলার মালাই শরবত

উপকরণ: পাকা কলা 10 টি, মিল্কমেড 1 কাপ, কাজু বাদামের কুচি 1 কাপ, কিসমিস 1 কাপ, চেরিফল কয়েকটি, এলাচগুঁড়ো 2 চামচ, ঠান্ডা দুধ 1 কাপ।

প্রণালী: পাকা কলার খোসা ছাড়িয়ে ভালো করে চটকে নিন। এবার কাজুবাদাম 1/2 কাপ মিহি করে বেটে নিন। বাকিটা কুচি কুচি করে কেটে নিন। চেরি, বাদামের কুচি ও এলাচের গুঁড়ো ছাড়া সমস্ত উপকরণ মিক্সিতে দিয়ে ভালো করে মিশিয়ে নিন। অল্প চিনি দিয়ে গ্লাসে ঢেলে ফ্রিজে রাখুন। পরিবেশনের সময় বাদামের কুচি, চেরির কুচি, এলাচ গুঁড়ো ও আইসকিউব দিন।

দই লস্যি

উপকরণ: দই 2 কাপ, জল 2 কাপ, চিনি 4 চা চামচ, স্বাদমতো লবণ, জিরেভাজা গুঁড়ো সামান্য।

প্রণালী: দই ও জল একসঙ্গে মিক্সিতে দিয়ে ফেটিয়ে নিন। চিনি ও নুন দিয়ে নেড়ে নিন। এবার গ্লাসে ঢেলে বরফের টুকরো দিয়ে ওপরে জিরেভাজা গুঁড়ো ছড়িয়ে পান করুন।

আরও পড়ুনঃ কয়েকটি খুচুড়ি রেসিপি 

মাজা ম্যাঙ্গো

উপকরণ: পাকা আমের রস 1কাপ, টক দই 1/2 কাপ, চিনি 2 টেবিল চামচ, ভ্যানিলা আইসক্রিম 1 কাপ, কমলা রং 4 ফোঁটা, কয়েকটি আমের টুকরো, সোডা ওয়াটার 1/2 কিপ, ম্যাঙ্গো এসেন্স 6-7 ফোঁটা।

প্রণালী: আমের রস আইস ট্রেতে ঢেলে ডিপ ফ্রিজে ঢুকিয়ে রেখে বরফ তৈরি করে নিন। টক দই, চিনি, আইসক্রিম, রং ও এসেন্স একসঙ্গে মিশিয়ে মিক্সিতে ভালো করে ফেটিয়ে নিন। শরবত পরিবেশনের লম্বা গ্লাসে টক দইয়ের মিশ্রণ ঢেলে তার উপর সোডা ওয়াটার দিন। আইস ট্রে থেকে জমানো আমের টুকরো বের করে আন্দাজমতো কয়েকটা দিয়ে উপরে কয়েক টুকরো আমি ছড়িয়ে দিন ঠান্ডা অবস্থাতেই পরিবেশন করুন। এই শরবত গরমে বেশি তৃপ্তিদায়ক।

আম লস্যি

উপকরণ: 1 কাপ তাজা এবং পাকা আম, আধ কাপ শীতল কমলা রস, 4 মধু বা চিনি, 2 কাপ টক দই, কয়েকটি গোলাপ ফুলের তাজা পাপড়ি, কিছু বরফ।

প্রণালী: মেশিনে বা ঘুটুনি দিয়ে ঘুটে আমের রস তৈরি করুন। সঙ্গে কমলা রস, মধু ও দই মিশিয়ে কিছুক্ষণ ঘুঁটুন। গ্লাসে ভোরে উপরে গোলাপ পাপড়ি ও বরফ কুচি দিয়ে পরিবেশন করুন।

মোসাম্বির জুস

উপকরণ: খোসা ছাড়ানো 6-7 টি মোসাম্বি, মধু, কালো লবণ, ভাজাজিরে পাউডার, চাট মসলা।

রেসিপি: জুসারে মোসাম্বি দিয়ে রস বের করুন, তারপর মধু বা চিনি যোগ করুন এবং আবার মিশ্রিত করুন। আন্দাজমতো কালো লবণ, ভাজাজিরে গুঁড়ো এবং চাট মসলা যোগ করুন এবং বরফের টুকরো দিয়ে পরিবেশন করুন।

পুদিনা পাতা ও লেবুর শরবত

উপকরণ: 1 কাপ পুদিনা পাতা, 1/2 কাপ ঠান্ডা জল, বিট  লবণ 1/2 চা চামচ, জিরে গুঁড়ো 1/2 চা চামচ, 2 টেবিল চামচ লেবুর রস, 3 টেবিল চামচ চিনি, পরিমাণমতো জল, আইস কিউবস।

প্রণালী: প্রথমে পুদিনা পাতা,জল,বিট লবণ,জিরেগুঁড়ো,লেবুর রস,চিনি,একসাথে মিক্সারে পেস্ট করে নিতে হবে। এরপর কাঁচের গ্লাস নিয়ে তাতে মিশ্রণটি ছাঁকনি দিয়ে ছেঁকে গ্লাসটি অর্ধেক ভর্তি করতে হবে। এবার ঠান্ডা জল ও আইস কিউবস ঢেলে সবটা ভালো করে মিশিয়ে দিয়ে পাতিলেবু স্লাইস আর  পুদিনাপাতা দিয়ে সাজিয়ে ঠান্ডা ঠান্ডা পরিবেশন করুন পুদিনা লেবুর শরবত।

কোল্ড কফি: ফুল ফ্যাট দুধ, সামান্য চিনি আর কফি পাউডার বরফসহ ব্লেন্ড করে নিলেই তৈরি! স্বাদ বাড়াবে এক চিমটে দারচিনি গুঁড়ো ও সামান্য ডার্ক চকোলেট পাউডার।

ছাতুর শরবত: গরমকালে আপনার আদর্শ ব্রেকফাস্টও হতে পারে। উপাদান সামান্য ছাতু, টক দই, সামান্য লেবুর রস, লবণ, চিনি আর জল। সবটা একসঙ্গে মিশিয়ে নিন। উপর থেকে একটু ভাজা মশলা ছড়িয়ে দিন।

আরও পড়ুনঃ ধনেপাতার উপকারিতা ও অপকারিতা 

Post a Comment

0 Comments