অ্যালোভেরা পাতায় কালোদাগ ও আগা শুকিয়ে যাওয়া প্রতিরোধে দেখুন এই ৫ টি উপায়
অ্যালোভেরা গাছের পরিচর্যা: প্রাচীনকাল থেকেই রোগ প্রতিরোধ, সৌন্দর্য বৃদ্ধি এবং স্বাস্থ্যকর জীবন-যাপনের প্রয়োজনে ভেষজ উদ্ভিদের ব্যবহার প্রচলিত রয়েছে। এরকম একটি ভেষজ উদ্ভিদ হল ঘৃতকুমারী বা Aloevera। ঘৃতকুমারী বিভিন্ন পুষ্টিগুণে ভরপুর একটি উদ্ভিদ। ত্বক ও চুলের সৌন্দর্য বৃদ্ধির ক্ষেত্রে এর জুড়ি মেলা ভার। Aloevera Gacher Porichorcha
পুষ্টিগুণ
অ্যালোভেরা বা ঘৃতকুমারী ভিটামিন এ, বিটা-ক্যারোটিন, ভিটামিন ই ও ভিটামিন সি সমৃদ্ধ একটি ভেষজ উদ্ভিদ। এছাড়াও এতে ফলিক অ্যাসিড সহ স্বল্প পরিমাণে খনিজ এবং থাকে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট।
উপকারিতা
১) উচ্চ কলেস্টেরল কমাতে অ্যালোভেরা বিশেষ উপকারী।
২) অ্যালোভেরা বা ঘৃতকুমারী নির্যাস ত্বককে হাইড্রেট রাখে এবং পুষ্টি সরবরাহ করে।
৩) অ্যালোভেরা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে উন্নত করে।
৪) নিয়মিত ঘৃতকুমারী রস পান করলে কোষ্ঠকাঠিন্য নিরাময় হয়।
৫) অ্যালেভেরা শরীরকে ফ্যাট মুক্ত রাখতে সাহায্য করে এবং ওজন নিয়ন্ত্রণ করে।
অনেকেই এই ভেষজ উদ্ভিদটিকে বাড়িতে লাগিয়ে থাকেন, অর্থাৎ আজকের দিনে প্রায় প্রত্যেকটি বাড়িতেই আমরা ঘৃতকুমারী গাছকে দেখতে পাই। কিন্তু সঠিক পরিচর্যা বা নিয়ম না জানার জন্য উপযুক্ত পরিচর্যা করতে পারে না। ফলস্বরূপ গাছে কালো দাগ দেখা যায় এবং গাছের ডগা ধীরে ধীরে শুকিয়ে যেতে শুরু করে। আজকের এই প্রতিবেদনে আমরা এমন কয়েকটি টিপস সম্পর্কে আলোচনা করব, যা মেনে চললে ঘৃতকুমারী গাছের উপরোক্ত সমস্যাগুলি সেরে উঠবে এবং গাছ হয়ে উঠলে সতেজ ও প্রাণবন্ত। তাহলে চলুন শুরু করা যাক।
প্রথমত, অ্যালোভেরা গাছ অতিরিক্ত জল ধারণ করতে পারে না। তাই এই গাছ লাগানোর জন্য টব নির্ধারণ করার সময় দেখে নিতে হবে যে সঠিক জল নিষ্কাশন ব্যবস্থা আছে কিনা। অর্থাৎ টবের তলায় অবশ্যই ছিদ্র থাকতে হবে। এছাড়াও মাটির সঙ্গে কিছু পরিমাণ বালি মেশানো যেতে পারে। বালি অতিরিক্ত জল শোষণ করবে, ফলে ছত্রাকের আক্রমন কম হবে।
দ্বিতীয়ত, গাছের চারপাশ থেকে নিয়মিতভাবে আগাছা পরিষ্কার করতে হবে। প্রতি সপ্তাহে একবার করে ডিমের খোসা রোদে শুকিয়ে গুঁড়ো করে গাছের গোড়ায় দিলে কালো দাগ ধীরে ধীরে চলে যাবে এবং নতুন করে হবে না।
তৃতীয়ত, গাছে জল দেওয়ার সময় বিশেষভাবে সতর্ক ও সচেতন থাকতে হবে। ভেজা মাটিতে ছত্রাক বেশি সংক্রমিত হয়। তাই ভিজে মাটিতে কখনোই জল দেওয়া যাবে না। সর্বদা মাটির শুকনো হলে স্বল্প পরিমাণ জল প্রদান করতে হবে। এছাড়াও বর্ষাকালে, বৃষ্টি জল থেকে বাঁচাতে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
চতুর্থত, অ্যালোভেরা গাছে দাগ সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়া ৩২° সেলসিয়াস থেকে ৪০° সেলসিয়াস এর অধিক তাপমাত্রায় প্রভাব বিস্তার করে। তাই সরাসরি সূর্যালোক থেকে দূরে বড় গাছের নিচে বা অপেক্ষাকৃত ছায়াযুক্ত স্থানে গাছটি রাখতে হবে বা লাগাতে হবে।
পরিশেষ, এই কৌশলটি প্রতিবেদনের সর্বশেষ এবং সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ। যারা বাণিজ্যিকভাবে অ্যালোভেরা চাষ করেন তারা ছত্রাক সংক্রমনের হাত থেকে মুক্তি লাভের জন্য এই পন্থাটি অবলম্বন করতে পারেন। এর জন্য প্রয়োজনীয় দুটি উপাদান হলো জল এবং খাওয়ার চুন। ১ লিটার জলের সঙ্গে এক চামচ চুন মিশিয়ে দ্রবণটি ১ ঘন্টা রেখে দিতে হবে। তারপর সম্পূর্ণ গাছে স্প্রে করলে, কাছের কালো দাগ ধীরে ধীরে সরে উঠবে।
অ্যালোভেরা বা ঘৃতকুমারী গাছের পরিচর্যা সম্পর্কিত আমাদের আজকের এই প্রতিবেদনটি ভালো লাগলে অবশ্যই বন্ধুদের সঙ্গে শেয়ার করুন। আরও নানা ধরনের, নানা বিষয়ের প্রতিবেদন পেতে যুক্ত থাকুন "Kolkatacorner" -এর সাথে।
0 Comments